পশ্চিম আফ্রিকার দেশ নাইজারে উত্তপ্ত মরুভূমিতে বাংলাদেশিসহ প্রায় সাড়ে ৪ হাজারের বেশি অভিবাসী আটকে পড়েছেন। সেখানে তারা অত্যন্ত মানবিক বিপর্যয়ের মধ্যে জীবনযাপন করছেন।
বৃহস্পতিবার (৬ এপ্রিল) ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, মরুভূমিতে আটকা এই অভিবাসীদের বেশির ভাগই মালি, গিনি এবং আইভোরি কোস্টের নাগরিক। তবে তাদের মধ্যে সিরীয়, এমনকি বাংলাদেশিও রয়েছেন।
৪৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় হাজার হাজার মানুষ আসামাকার দেয়াল বা তেরপলের নিচে ছায়া খুঁজছেন। অভিবাসীরা বলছেন, আলজেরিয়ায় তাদের সম্পত্তি দখল করা হয়েছে। ইউরোপে নতুন জীবনের আশায় তারা এই মরুভূমি পাড়ি দেওয়ার চেষ্টা করছেন। এ ছাড়া বাড়িতে ফিরে যাওয়ার জন্য পরিবহনের খরচ কিংবা স্বজনদের সাথে ফোনে কথা বলার মতো অর্থও নেই তাদের কাছে। যেন তারা মরুভূমিতে ‘উন্মুক্ত কারাগারে’ আটকে রয়েছেন।
জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইওএম) পরিচালিত একটি ট্রানজিট কেন্দ্রে ওই অভিবাসীদের জায়গা দিতে হিমশিম খাচ্ছে। সেখানে পৌঁছানো অভিবাসীদের মাত্র এক তৃতীয়াংশকে কোনো রকমে ঠাঁই দিতে পেরেছে সংস্থাটি। এসব অভিবাসীদের মধ্যে চিকিৎসক, শিক্ষার্থী এবং ব্যবসায়ীর মতো অনেক মেধাবী মানুষও রয়েছেন।
আইভরি কোস্ট থেকে আসা আবদুল করিম বামবারা বলেন, এখানে পৌঁছানোর পর আমাদের বলা হয়েছিল, আমরা আইওএমের স্বীকৃত অভিবাসী নই। তাই দেশে ফেরার জন্য পরিবহন ব্যয় নিজেদেরই বহন করতে বলা হয়েছে।
আইভোরি কোস্টের নাগরিক হারমান এই অভিবাসীদের একজন। তিনি বলেন, আমরা গবাদিপশুর মতো হয়ে গেছি। অনেকেই শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তারা খোসপাঁচড়া বা অন্যান্য রোগে ভুগছেন। এ ছাড়া খাবারের সংকটে আমাদের সবাই ক্ষুধার্ত।
সিয়েরা লিওন থেকে আসা আবুবকর শেরিফ সিসে বলেন, আমরা সবাই মানসিক সমস্যায় ভুগছি। কেউ নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না। সবার মন ভেঙে গেছে। অনেকে মারা যাচ্ছেন। তথ্য সূত্র আরটিভি নিউজ।