জেনেভায় প্রবাসী বাংলাদেশিরা বলেছেন, ২০০১ সালে নির্বাচনের পর দেশে যে সহিংসতা, সন্ত্রাসী কার্যক্রম ও সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে, তা আর দেখতে চায় না মানুষ।
সে সময় যারা নির্যাতন, জ্বালাও পোড়াও করেছিল, তারাই এখন মানবাধিকারের কথা বলে। নির্বাচনকে সামনে রেখে আন্তর্জাতিকভাবে নানান স্যাংশনের কথা বলে কেউ কেউ আওয়ামী লীগ সরকারকে দমানোর চেষ্টা করছে। অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের জন্য সেটি মঙ্গলজনক নয়।
মঙ্গলবার (১০ অক্টোবর) বিএনপি-জামায়াতের সহিংসতা তুলে ধরে জেনেভায় জাতিসংঘ কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত প্রতিবাদ সভায় তারা এসব কথা বলেন।
সভায় অংশ নেন জেনেভা আওয়ামী লীগ, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটিসহ বিভিন্ন শ্রেণীপেশার মানুষ এবং অ্যাক্টিভিস্ট।
আয়োজকরা বলেন, গত মাস থেকে জাতিসংঘ মানবাধিকার বিষয়ক অধিবেশন চলছে। সেখানে বিএনপি-জামায়াত সরকার বিরোধী নানা তথ্য তুলে ধরার চেষ্টা করছে। তাই জাতিসংঘ কার্যালয়ের সামনে এ সভার আয়োজন করা হয়েছে।
আয়োজকদের পক্ষ থেকে জানানো হয়, এখানে ২০০১ সালের নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতার চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। যারা বিদেশে এসে, এখন মানবাধিকার লঙ্ঘনের কথা বলে নালিশ করছে, তারা কী কী ঘটিয়েছে তা প্রদর্শন করা জরুরি।
এসময় সুইজারল্যান্ড আওয়ামী লীগ সভাপতি জমাদার নজরুল ইসলাম বলেন, এই সমাবেশ সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে। বিএনপি-জামায়াত বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে অস্থিতিশীল করতে চেয়েছে বারবার। তারা ষড়যন্ত্র করে নানাভাবে বিদেশি হস্তক্ষেপের মাধ্যমে দেশকে লিবিয়া-সিরিয়ার মতো বানাতে চায়। দেশের বিরুদ্ধে তাদের ষড়যন্ত্র যেনো সফল না হয় সেজন্য এই আয়োজন।
ইন্টারন্যাশনাল ফোরাম ফর সেকুলার বাংলাদেশের সভাপতি খলিলুর রহমান বলেন, ২০০১ থেকে ২০০৬ বিএনপি-জামায়াত দেশকে অস্থিতিশীল করে রেখেছিলো। নির্বাচন পরবর্তী দিনেই তারা দেশজুড়ে সংখ্যালঘু নির্যাতন চালায়, আওয়ামী সমর্থক নেতা কর্মীদের ঘর বাড়ি দোকান সব পুড়িয়ে দেয়। একথা বলার অপেক্ষা রাখে না জামায়াত-বিএনপি একটি সন্ত্রাসী সংগঠন।
তিনি বলেন, জাতিসংঘের প্রতি আহ্বান, দয়া করে এদের সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলুন। জামায়াত-বিএনপি যেন আর ক্ষমতায় আসতে না পারে। বাংলাদেশ একটি অসাম্প্রদায়িক দেশ। সেখানে যেনো এই দলগুলো আর সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালাতে না পারে।
এরপর ফারহানা হোসেন উপমা আয়োজনের ঘোষণা পড়ে শোনান। ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বাধীনতা ঘোষণা ও নয়মাসের রক্ষক্ষয়ী যুদ্ধের পরে অর্জিত স্বাধীনতার কথা উল্লেখ করে ১৯৭৫ সালে সপরিবারে বঙ্গবন্ধু হত্যার কথা তুলে ধরেন তিনি।
ঘোষণায় বলা হয়, যে দেশ মানবাধিকার ও বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিত করেছে, সেই দেশকে নির্বাচন সুষ্ঠু করার কথা বলে স্যাংশনের মুখে ফেলা হয়েছে। ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী, মানবাধিকারকর্মী থেকে শুরু করে প্রগতিশীল মানুষ নির্বাচনকালীন সহিংসতা নিয়ে শঙ্কিত। কারণ তারা ২০০১ এর নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতা দেখেছে।
যৌথভাবে সভার আয়োজন করে ইন্টারন্যাশনাল ফোরাম ফর সেকুলার বাংলাদেশ ও প্রেস এক্সপ্রেস। সভায় সংহতি জানান সেন্টার ফর হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড অ্যাডভোকেসি জোসেফ জোন্স ও নেদারল্যান্ডসের সাবেক সংসদ সদস্য হ্যারি ভ্যান বোমেল। তথ্য সূত্র আরটিভি নিউজ।