কট্টর ডানপন্থিদের উত্থানে নতুন বছরে নানা সংকটের আশঙ্কায় পর্তুগালের অভিবাসীরা। বেড়েছে হয়রানি, জেনোফোবিয়া বা বিদেশি আতঙ্কের মতো ঘটনা। এমন পরিস্থিতিতে ১১ জানুয়ারি বিক্ষোভ র্যালির ডাক দিয়েছেন দেশটির অভিবাসীরা।
বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার অভিবাসন প্রত্যাশীদের কাছে গত কয়েক বছর ধরেই অন্যতম গন্তব্য হয়ে উঠেছিল পর্তুগাল। অপেক্ষাকৃত সহজ অভিবাসন নীতির সুযোগ নিয়ে ইউরোপে স্থায়ীভাবে বসবাসের সুযোগ পান উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বাংলাদেশিও। তবে তাদের কাছে এখন শঙ্কার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে দেশটিতে ডানপন্থিদের উত্থান।
গত মার্চে অল্প ব্যবধানের জয় নিয়ে পর্তুগালে সরকার গঠন করে মধ্য-ডানপন্থি জোট ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স। শিক্ষা, চিকিৎসা বা বাসস্থানের মতো নানা ইস্যুতে সংকট থাকলেও সরকারি এজেন্ডায় অগ্রাধিকার পায় অভিবাসন ইস্যু। ক্ষমতায় এসেই প্রচলিত আইন বাতিলসহ কড়াকড়ি আরোপ করা হয় অভিবাসন সংশ্লিষ্ট নানা ইস্যুতে।
এ অবস্থায় সামনের দিনগুলোতে শেগা অর্থাৎ কট্টর ডানপন্থিদের উত্থান অভিবাসীদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
পর্তুগালের অভিবাসন সংস্থা ভিদা জুস্তার সমন্বয়ক প্রিশিলা ভালাদাও বলেন, শেগার মতো কট্টর ডানপন্থিরা পর্তুগালে যেভাবে প্রভাব বিস্তার করেছে তা উদ্বেগের। এমনকি বর্তমান পার্লামেন্টেও তাদের অনেক শক্ত অবস্থান। পর্তুগালের বর্তমান অবস্থানে অভিবাসীদের অবদান স্বীকার না করে উল্টো যেকোনো সমস্যায় তাদেরই দায়ী করে দেশটির নাগরিকদের বিভ্রান্ত করা হচ্ছে। সামনের দিনগুলোতে অভিবাসীদের জন্য আরও কঠিন কিছু অপেক্ষা করছে।
বাম রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত পর্তুগীজরা বলছেন, ক্ষমতা ধরে রাখতে ও কট্টর ডানপন্থিদের ভোট নিজেদের দিকে টানতে অভিবাসীদের ব্যবহার করছে বর্তমান সরকার।
সোস্যালিস্ট পার্টির ডেপুটি-লিসবন মিউনিসিপ্যাল এসেম্বলি দুয়ার্তে মার্ছালের মতে, বর্তমান সরকার পার্লামেন্টে সংখ্যালঘু। যেটির অর্থ যেকোনো সময়ই মধ্যবর্তী নির্বাচনের জন্য সরকার প্রস্তুত। তাই শেগারের মতো কট্টর ডান বা অভিবাসনবিরোধীদের এজেন্ডা বাস্তবায়নকেই বেছে নেয়া হয়েছে। ফলাফল, গত কয়েক মাসে ভিসায় কড়াকড়ি আরোপ বা সম্প্রতি মারতিম মুনিজে পুলিশের হয়রানিমূলক তল্লাশি।
এদিকে, নিয়মবহির্ভূতভাবে নানা ক্ষেত্রে অভিবাসীদের হয়রানি ও বৈষম্যমূলক আচরণের প্রতিবাদে ১১ জানুয়ারি বিকেল ৩টায় লিসবনের আলামেদা পার্ক থেকে মারতিম মুনিজ অভিমুখে বিক্ষোভ র্যালীর ডাক দিয়েছে পর্তুগালের সুশীল সমাজ ও বিভিন্ন অভিবাসন সংস্থা।