News update
  • UN Estimates $70 Billion Needed to Rebuild Gaza After War     |     
  • Mirpur garment factory, chemical godown fire kills 9     |     
  • Garbage pile turns Companiganj Bazar into an unhygienic town     |     
  • Put 'old feuds' aside for a new era of harmony in ME: Trump     |     
  • Rivers are Bangladesh's lifeblood, Rizwana at UN Water Convention      |     

পুলিশ প্রটোকলে কর্মস্থল ছাড়লেন রাঙ্গাবালী ইউএনও

প্রশাসন 2022-12-04, 10:47pm

patuakhali Uno pic-03-12-22



পটুয়াখালী: সরকারী বরাদ্দের উন্নয়ন কর্মকান্ডের অর্থ আত্মসাৎ ও  নানাবিধ ঘটনায় বির্তকে জড়িয়ে পড়া পটুয়াখালীর সদ্যবদলীকৃত রাঙ্গাবালী ইউএনও মো: মাশফাকুর রহমানকে অবশেষে অবমুক্ত করা হয়েছে। র্দীঘ আলোচনা-সমালোচনার পর ১ ডিসেম্বর পটুয়াখালী জেলা প্রশাসন তাকে অবমুক্ত করেন। পরে ০২ ডিসেম্বর দুপুরে স্থানীয় থানা পুলিশের সহায়তায় কর্মস্থল ত্যাগ করেন তিনি। এমন একটি ছবি ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এর এক বছর পূর্বে ইউএনওকে শরিয়তপুর জেলার এডিসি হিসেবে পদন্নোতি দেয় হয়। কিন্তু নানা ঘটনায় তাকে অবমুক্ত করেনি পটুয়াখালী জেলা প্রশাসন।

পরে গত ২১ সেপ্টেম্বর ইউএনওকে জড়িয়ে গনমাধ্যমে প্রতিবেদন হলে ২৮ সেপ্টেম্বর তাকে জনপ্রশাসন মন্ত্রনালয়ের এপিডি অনুবিভাগে ন্যস্ত করা হয়।

কিন্তু যথাযথ ভাবে দায়িত্ব হস্তান্তরে ব্যর্থ হওয়ায় ইউএনও অবমুক্ত হয়নি। সর্বশেষ ১ ডিসেম্বর ইউএনওকে অবমুক্ত করেন পটুয়াখালীর ডিসি মোহাম্মদ কামাল হোসেন। এদিকে র্দীঘদিন রাঙ্গাবালী উপজেলায় ইউএনও ও এ্যাসিল্যান্ডের দায়িত্ব পালন করেও পুলিশের সহায়তায় কর্মস্থল ত্যাগের বিষয়টি অস্বাভাবিক মনে করছে সংশ্লিষ্টরা।

জেলা প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, রাঙ্গাবালী উপজেলার ৯টি হাট-বাজারের বিপরীতে খাস টোল আদায়কৃত তিন বছরের অন্তত: চার কোটি টাকা কোষাগারে জমা না দিয়ে ইউএনও তার সাঙ্গপাঙ্গরা আত্মসাৎ করেন। এছাড়াও প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর নির্মান প্রকল্পের অর্থ আত্মসাৎ ও অনিয়ম, নিজ কার্যালয়ের কর্মচারীকে মারধরসহ নানা অভিযোগের ঘটনায় তদন্তে সত্যতা পেয়েছে জেলা প্রশাসন। এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন মন্ত্রী পরিষদ বিভাগে পাঠিয়েছেন পটুয়াখালী জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামাল হোসেন। ইউএনও'র এসব কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে মন্ত্রী পরিষদ বিভাগে ডিসির পাঠানো ওই প্রতিবেদনে বরিশাল বিভাগীয় কমিশনারের সুপারিশ রয়েছে। ডিসির পাঠানো ওই প্রতিবেদনে ইউএনও এর সংশ্লিষ্টতা রেখে একাধিক অভিযোগ উল্লেখ করেছেন জেলা প্রশাসন। অপরদিকে মুজিব বর্ষের ঘর নির্মানে ইউএনওর নিয়োগকৃত কথিত ঠিকাদার মাইদুল ইসলাম শাওনের অভিযোগ সংক্রান্ত ঘটনার নিস্পত্তি করতে পারেনি জেলা প্রশাসন। পটুয়াখালী ডিসির কাছে শাওনের দেয়া অভিযাগের ঘটনায় একাধিকবার সাক্ষ্য ও তদন্ত হলেও জেলা প্রশাসনের ব্যর্থতা পরিলক্ষিত হয়েছে। যা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ভুক্তভোগীর পরিবার ও সংশ্লিষ্টরা।

এদিকে মুজিব বর্ষের ঘর নির্মানের কাজ দিতে রাঙ্গাবালী উপজেলার ছোটবাইশদা ইউনিয়নের ইউপি সদস্য মিন্টুর কাছ থেকে এক গনমাধ্যমকর্মীর মাধ্যমে ১০ লাখ টাকা নেয় ইউএনও মাশফাক। যে টাকা ফেরত দেয়ার কথা বলেও দেয়নি।

বড়বাইশদা ইউনিয়নের সাকুর মৃধা বলেন, মুজিব বর্ষের ঘর পেতে এলাকার দুস্থ্য পরিবারের কাছ থেকে ২ লাখ ২০ হাজার টাকা তুলে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আবু হাসনাত আব্দুল্লাহর মাধ্যমে ইউএনওকে দেন তিনি। ঘর না পেয়ে ভুক্তভোগীরা তাকে টাকার জন্য চাপ দিলেও ইউএনও এর কাছ থেকে ওই টাকা উঠাতে পারেনি সাকুর মৃধা।

বড়বাইশদা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আবু হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, মুজিব বর্ষের ঘর বাবদ ইউএনওর কাছে ১ লাখ ৯০ হাজার টাকা তার পাওনা ছিল।

রাঙ্গাবালী থেকে বিদায় নেয়ার আগমূহুর্তে তিনি ২০ হাজার টাকা হাতে ধরিয়ে বাকি টাকা পরে শোধ করার প্রতিশ্রুতি দেন।

অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য আবুল কালাম আজাদ বলেন, রাঙ্গাবালীর বাহেরচর বাজারে খাস জমিতে তার একটি মেরামতযোগ্য দোকানঘর আছে। ওই খাস জমির ডিসিআর নিতে ইউএনওকে তিনি এক লাখ টাকা দিয়েছেন। কিন্তু ইউএনও তাকে ডিসিআর দেয়নি এবং টাকাও ফেরত দেয়নি। টাকা ফেরত দেয়ার কথা বলে তিনি শুক্রবার, ০২ ডিসেম্বর (ইউএনও) পুলিশ প্রটোকলে রাঙ্গাবালী থেকে বিদায় নেন।

চরমোন্তাজ ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আবু হানিফ মিয়ার ছেলে রিপন মিয়া বলেন, মুজিব বর্ষের ঘর দেয়ার কথা বলে তার বাবার কাছ থেকে ইউএনও দুই লাখ টাকা নেয়। পরে ঘরও দেয়নি,টাকাও ফেরত দেয়নি।

রাঙ্গাবালী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের মটরসাইকেল চালক হিরন হাওলাদার বলেন, মুজিব বর্ষের ঘর নির্মান বাবদ ইউএনও'র কাছে ১ লাখ ৫৮ হাজার টাকা পাওনা রয়েছে তার। শুক্রবার ইউএনও চলে যাওয়ার সময় ওই টাকা চাইলে তার অফিসের নাজির মিরাজুল ইসলাম পরিশোধ করবে বলে হিরনকে আশ্বস্ত করেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে উপজেলা পরিষদের একাধিক কর্মকর্তা ও কর্মচারী বলেন, র্দীঘদিন একই স্থানে চাকুরি করার পরও ইউএনও মাশফাকুর রহমানকে কোনো বিদায়ী সংবর্ধনা দেয়া হয়নি। তার বিদায় বেলাতে উপজেলা চত্বরে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছিল। তার সাথে একাধিক ব্যক্তির অমিমাংসিত আর্থিক লেনদেন ছিল।

মাশফাকুর রহমান ইউএনও দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে স্থানীয় রাজনীতির দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়ে। যে কারনে তাকে কর্মস্থল ছেড়ে যেতে পুলিশের সহায়তা নিতে হয়েছে।

রাঙ্গাবালী থানার ওসি নুরুল ইসলাম মজুমদার বলেন, উপজেলা পরিষদের একটি মাত্র গাড়ী। ইউএনও মহোদয় উপজেলা পরিষদ থেকে মোটরসাইকেল যোগে কোড়ালিয়া লঞ্চঘাটে রওনা দিয়েছেন। তাই আমি তাকে আমার গাড়ীতে করে পৌছে দিয়েছি। পুলিশ প্রটোকলে বিদায় নিয়েছেন এটা সত্য নয়।

রাঙ্গাবালী এ্যাসিল্যান্ড সালেক মুহিদ বলেন, এখানে একটি মাত্র গাড়ী। সেটা সাময়িক ভাবে বিকল থাকায় ইউএনও স্যার গাড়ী নিতে পারিনি। - গোফরান পলাশ