News update
  • 2 dead, six hurt in Sherpur micro-autorickshaw-motorbike crash     |     
  • One killed over loud music row at wedding party in Natore     |     
  • Fire breaks out at jacket factory in Chattogram     |     
  • Dhaka, Delhi agree to bring down border killings to zero     |     
  • Natore’s Baraigram OC closed over negligence in bus robbery case     |     

মেসিদের চক্রপূরণ, ফের লাতিনের রাজা আর্জেন্টিনা

গ্রীণওয়াচ ডেস্ক ফুটবল 2024-07-15, 2:21pm

ryreyery-f04fa07581ef620536b5a86244d8c2741721031663.jpg




এ ফাইনালটা একটু অন্যরকম। অন্যান্য ফাইনালের চেয়ে এ ম্যাচটা আর্জেন্টাইন ফ্যানদের জন্য একটু আবেগেরই বটে। কারণ আর্জেন্টিনার জার্সিতে এটিই ছিল ডি মারিয়ার শেষ ম্যাচ। কোপা আমেরিকার টুর্নামেন্টে আরেক কিংবদন্তি লিওনেল মেসিরও ছিল এটা শেষ ম্যাচ। তবে এমন আবেগের ফাইনালটাও যে রঙিন করে তুললেন লাউতারো মার্টিনেজ। ১১২ মিনিটে তার একমাত্র গোলেই টানা দ্বিতীয়বারের মতো কোপা আমেরিকা চ্যাম্পিয়ন হয় আর্জেন্টিনা।

ফাইনালে কলম্বিয়ার বিপক্ষে জয় দিয়ে চক্র পূরণ করলো আর্জেন্টিনা। ২০২১ সালে কোপা আমেরিকার ফাইনালে ব্রাজিলকে হারিয়ে দীর্ঘদিনের শিরোপা-খরা কাটায় তারা। এরপর ২০২২ সালে ৩৬ বছর পর বিশ্বকাপ জেতে আলবিসেলেস্তেরা। তারপর আজ (১৫ জুলাই) আবারও কোপা আমেরিকার শিরোপা জিতে চক্র পূরণ করলেন মেসিরা।  

কলম্বিয়ার উগ্র সমর্থকদের কারণে এক ঘণ্টা ২০ মিনিট পর মাঠে গড়ায় কোপা আমেরিকার ফাইনাল ম্যাচ। তবে ম্যাচের শুরু থেকেই আর্জেন্টিনাকে বেশ চাপে রাখে কলম্বিয়া। একের পর আক্রমণে ব্যস্ত থাকেন হামেস রদ্রিগেজরা। অন্যদিকে আর্জেন্টিনাও বেশ কয়েকবার হানা দিয়েছিল কলম্বিয়ার ডেরায়।

আর্জেন্টিনা ম্যাচ শুরু করেছিল মানসিকভাবে পিছিয়ে থেকেই। অ্যালেক্সিস ম্যাক অ্যালিস্টারের মা, আলেহান্দ্রো গার্নাচোর ভাইসহ একাধিক খেলোয়াড়ের স্বজনরা আটকে ছিলেন উগ্রপন্থি কলম্বিয়ান সমর্থকদের মাঝে। খেলা শুরুর আগে নিজের মাকে নিরাপদে স্টেডিয়ামে নিয়ে আসতে লকাররুম ছেড়ে বেরিয়ে আসেন ম্যাক অ্যালিস্টার। এমন বিপর্যস্ত আর্জেন্টিনার ওপর শুরু থেকেই চড়াও হয় কলম্বিয়া।

কিন্তু প্রথমার্ধে মানসিকভাবে বিধ্বস্ত সেই আর্জেন্টিনাকে খুঁজে পাওয়া যায়নি সেভাবে। ম্যাচের শুরুতেই গোলের সুযোগ তৈরি করেছেন তারা। আলভারেজের শট অল্পের জন্য চলে যায় পোস্টের বাইরে দিয়ে। 

খেলার ৬ মিনিটে অবশ্য বেঁচে যায় আলবিসেলেস্তেরা। কলম্বিয়ার কর্ডোবার শট পোস্টে লেগে বেরিয়ে যায়। অল্পের জন্য গোল খাওয়া থেকে বেঁচে যায় তারা। তার ঠিক চার মিনিট পরে পর আবারও আক্রমণ চালায় কলম্বিয়া। কিন্তু সে যাত্রায় গোল আদায় করতে ব্যর্থ হয় তারা।

ম্যাচের ২০ মিনিটে সতীর্থের পাস থেকে সরাসরি গোল পোস্টে শট নিয়েছিলেন মেসি। তবে এ যাত্রায় কলম্বিয়াকে বাঁচিয়ে দেন তাদের গোলরক্ষক। তার ৫ মিনিট পর লিসান্দ্রোকে আঘাত করে হলুদ কার্ড দেখেন কর্ডোবা। ৪৩ মিনিটে বল নিয়ে এগোচ্ছিলেন তাগলিয়াফিকো। বক্সের কাছাকাছি জায়গায় তাকে বাজেভাবে ট্যাকল করায় ফ্রি কিক পায় আর্জেন্টিনা। এ থেকে বক্সের মধ্যে উড়িয়ে বল মারেন মেসি; সতীর্থের হেড চলে যায় ক্রসবারের উপর দিয়ে। আক্রমণ এবং প্রতি আক্রমণে গোলশূন্য সমতায় শেষ হয় প্রথমার্ধ।

দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকেই দাপট ধরে রাখে কলম্বিয়া। আক্রমণেও উঠেছিলো কয়েকবার। কিন্তু ৫৮ মিনিটে কোনো রকমে বেঁচে যায় কলম্বিয়া। বাঁ দিক থেকে বল নিয়ে একেবারে প্রতিপক্ষের ডেরায় ঢুকে পড়েন ডি মারিয়া। তার নেয়া শট কোনো রকমে ঠেকিয়ে দেন কলম্বিয়ার গোলরক্ষক কামিলো ভারগাস।

লিওনেল স্ক্যালোনিকে সচরাচর মাথা গরম করতে দেখা যায় না। তবে এদিন তিনি মেজাজ হারালেন। কলম্বিয়ার ফুটবলারদের মারকুটে ফুটবল দেখে নিজেকে আর ধরে রাখতে পারেননি তিনি।   

কোপা আমেরিকার টুর্নামেন্টে আর মাঠে নামা হবে না মেসির -- এটা এক প্রকার নিশ্চিত। চোট পেয়ে যখন মাঠ ছাড়ছিলেন, তখন নিশ্চয় এই কথাটা মনে পড়ছিল তার। ম্যাচের ৬৬ মিনিটে কান্নাভেজা চোখে মাঠ থেকে উঠে গেলেন মেসি। প্রথমার্ধের ৩৫তম মিনিটে চোট পেয়েছিলেন আর্জেন্টাইন অধিনায়ক। তারপর বাকি সময়টা তাকে ভুগতে দেখা যায়। ভালভাবে খেলতেও পারছিলেন না। অবশেষে ৬৬ মিনিটে তাকে উঠে যেতে হলো মাঠ থেকে। এরপরে দেখা যায়, বেঞ্চে বসে কান্না করেছেন অঝরে।

মেসি উঠে যাওয়ার পর কিছুটা ছন্নছাড়া ফুটবল খেলতে থাকে আর্জেন্টিনা। আক্রমণে উঠেও তার কোনো ফল পাচ্ছিলো না আর্জেন্টনা। ৮৭ মিনিটে এগিয়ে যেতে পারতো আর্জেন্টিনা। গঞ্জালেসের হেড অল্পের জন্য বাইরে দিয়ে চলে যায়। ৯১ মিনিটে ভাল সুযোগ পেয়েছিলেন ডি মারিয়া। বিপক্ষে গোলরক্ষকের ভুলে তিনি সুযোগ পেয়েছিলেন; কিন্তু ফাঁকা পেয়েও বল নিয়ন্ত্রণ করতে না পারায় সুযোগ নষ্ট হয়।

নির্ধারিত ৯০ মিনিটও শেষ হয় গোলশূন্য সমতায়। ফলে ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। টুর্নামেন্টের নকআউট ম্যাচগুলোতে এ নিয়ম ছিল না। খেলার ৯০ মিনিট সমতায় শেষ হলে সরাসরি টাইব্রেকার দেয়া হতো। তবে ফাইনাল ম্যাচে সেই নিয়ম নেই। খেলার ৯০ মিনিট শেষে সমতা থাকলে আরও ৩০ মিনিট খেলা হবে। যার জন্য এ ম্যাচও গড়ায় অতিরিক্ত ৩০ মিনিটে।

অতিরিক্ত সময়েও একের পর এক আক্রমণ করে গেছে দুদল। তবে কাঙ্খিত গোলের দেখা পাচ্ছিলেন না কোনও দল। অবশেষে সোনার হরিণ নামক সেই গোলটি পেয়ে যায় আর্জেন্টিনা। ১১২ মিনিটে এলো কাঙ্খিত সেই গোল। মাঝমাঠ থেকে লাউতারো মার্টিনেজকে বল বাড়িয়ে দিলেন লো সেলসো। বক্সের ভেতরে ঢুকে নিখুঁত শটে বল জালে জড়ান লাউতারো। আর সেই গোলেই টানা দ্বিতীয়বারের মতো কোপা আমেরিকার শিরোপা ঘরে তোলে আর্জেন্টিনা। সেই সঙ্গে কোপা আমেরিকার ইতিহাসে এককভাবে সর্বোচ্চ ১৬ বার চ্যাম্পিয়ন এখন আর্জেন্টিনা।