বছরের দুই মাস পার হলেও অনেক শিক্ষার্থীর হাতে পৌঁছেছে মাত্র দু-একটি বই। ফুল সেট বই না পাওয়ায় জোড়াতালি দিয়ে চলছে পড়াশোনা। বাঁধাই মেশিনের সংকট আর শ্রমিকরা নোট গাইড বাঁধাইয়ের কাজে বেশি মনযোগী হওয়ায় সব বই পৌঁছানো সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। তবে মুদ্রণ শিল্প সমিতি বলছে, কিছু বইয়ের টেন্ডারে দেরি হওয়ায় ছাপার কাজ এখনও শেষ হয়নি।
চলছে বছরের তৃতীয় মাস। সিলেটের কাকরদিয়া তেরাদল উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের হাতে মাত্র দুটি বই-বাংলা আর ইংরেজি। আর অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা বেশির মধ্যে পেয়েছে তিনটি বই তা হলো বাংলা-ইংরেজি ও গণিত। শুধু সিলেট নয় বেশ কয়েকটি জেলায় এখনও পৌঁছায়নি সব বই। এনসিটিবির তথ্য বলেছ, ৪০ কোটির মধ্যে প্রায় ৫ কোটি বই স্কুলে পৌঁছায়নি। অনেক স্কুলেই জোড়াতালি দিয়ে চলছে শিক্ষা কার্যক্রম।
সিলেটের কাকরদিয়া তেরাদল উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জানায়, আমরা দুটি বই পেয়েছি একটা বাংলা আরেকটি ইংলিশ। আরেকজন জানায়, মোবাইল এবং ল্যাপটপে সব সময় দেখতে পারি না পিডিএফ। চোখের সমস্যা করে। আবার সবার ঘরে নেট থাকে না। পিডিএফ থেকে পড়া সহজও না।
এক শিক্ষক জানান, অষ্টম এবং নবম শ্রেণির বই এখনও হাতে পাইনি। খুব ক্ষতি হবে এসব শিক্ষার্থীদের জন্য।
যদিও জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. একেএম রিয়াজুল হাসানের দাবি, অধিকাংশ ক্লাসের শিক্ষার্থীদের কাছে পৌঁছে গেছে ৯০ শতাংশের বেশি বই।
এনসিটিবি চেয়ারম্যান বলেন, ছাপানোর কাজটা হয়ত শেষ হয়ে যাবে, বাঁধাই করার কাজটা করতে সময় লাগতে পারে। তাই বই ছাপার প্রকৃত অবস্থা দেখতে ছাপাখানায় যায় সময় সংবাদ।
সেখানে গিয়ে দেখা গিযেছে, ছাপা শেষে বাঁধাইয়ের জন্য স্তূপ আকারে রাখা হয়েছে ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির বই। অটোমেটিক বাঁধাই মেশিনের সংকট আর নোট গাইড বাঁধাইয়ে বেশি মজুরি পাওয়ায় পাঠ্যবইয়ের কাজ করছেন না শ্রমিকরা।
এরপর জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. একেএম রিয়াজুল হাসান বলেন, বাজারে যখন দেখা যায় নোট বইয়ের বাঁধাইয়ের কাজে মজুরি বেশি, তখন শ্রমিকরা সেইদিকে ঝুঁকে যায়।
তবে মুদ্রণ শিল্প সমিতি বলছে, কিছু বইয়ের টেন্ডারে দেরিতে হওয়ায় ছাপার কাজে বিলম্ব হচ্ছে।
বাংলাদেশ মুদ্রণ শিল্প সমিতির সিনিয়র সহসভাপতি জুনায়েদ আল মাহফুজ বলেন, শেষে দিকে যেসব টেন্ডার হওয়ায় কিছু কিছু স্কুল বই পায়নি। আশা করা যায়, যেহেতু কাগজ চলে এসেছে এবং এটির আর স্বল্পতা নেই তাই দ্রুত সময়ের মধ্যে বই প্রস্তুত করে তা পৌঁছে দেয়ার চেষ্টা করা হবে।
তবে চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে সব কাজ শেষ করার লক্ষ্যে কাজ চলছে বলে জানান প্রেস মালিকরাও।
সময় সংবাদ