মোবাইল ব্যাংকিং অর্থপাচার, ঘুষ, অনলাইন জুয়া, সন্ত্রাসী কাজে অর্থায়ন ও ক্রিপ্টো ট্রেডিংসহ অবৈধ অর্থ লেনদেনের অন্যতম মাধ্যম হয়ে উঠেছে বলে জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।
মঙ্গলবার (২৭ মে) রাজধানীর ধানমন্ডিতে মাইডাস সেন্টারে ‘মোবাইল আর্থিক সেবাখাতে সুশাসনের চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান।
তিনি বলেন, অনলাইন জুয়ায় প্রায় ১১শ মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস (এমএফএস) এজেন্ট শনাক্ত করা হয়েছে। অর্থপাচার, ঘুষ, অনলাইন জুয়া, সন্ত্রাসী কাজে অর্থায়ন ও ক্রিপ্টো ট্রেডিংসহ অবৈধ অর্থ লেনদেনের অন্যতম মাধ্যম হয়ে উঠেছে মোবাইল ব্যাংকিং। আইপিএল-বিপিএলের মতো টুর্নামেন্টকে কেন্দ্র করে দেশে দেদারসে মোবাইলে অনলাইন জুয়ার অর্থ লেনদেন হলেও তা বন্ধে কার্যকর কোনো উদ্যোগ নেয় না সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলো।
ক্ষুদে বার্তা পাঠানো ছাড়া কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি অভিযোগ করে তিনি বলেন, শুধু ক্ষুদে বার্তা পাঠিয়ে দায় সারছে সেবাদাতারা। নভেম্বর ২০২২-অক্টোবর ২০২৩ সাল পর্যন্ত জালিয়াতি বা প্রতারণার শিকার হয়ে ব্যক্তিগত হিসাবধারী সর্বনিম্ন ৩০০ টাকা থেকে ৮৩ হাজার টাকা পর্যন্ত আর্থিক ক্ষতির শিকার হয়েছে। এজেন্ট সর্বনিম্ন ২০০ টাকা থেকে ৩ লাখ ৭৬ হাজার টাকা আর্থিক ক্ষতির শিকার হয়েছে।
ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, এমএফএস সেবায় জালিয়াতি ও প্রতারণার শিকার হওয়া ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টধারীদের ৫২.৬ শতাংশ প্রলোভন বা মিথ্যা তথ্য, ৪২.১ শতাংশ ফোনকল বা এসএমএস পাঠিয়ে প্রতারণা এবং ১২.৩ শতাংশ অ্যাকাউন্ট হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে আর্থিক ক্ষতির শিকার হয়েছে। ৩২ জেলা এমএফএস অ্যাকাউন্টধারীদের থেকে তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে।
এমএফএস খাতের জন্য স্বতন্ত্র আইন প্রণয়নের দাবি জানিয়ে টিআইবি জানায়, বাংলাদেশে এমএফএস সেবামূল্য বাণিজ্যিক ব্যাংকের সেবামূল্যের তুলনায় অনেক বেশি। প্রতিবেশী কয়েকটি দেশের মধ্যে সর্বোচ্চ। নগদ উত্তোলনে এমএফএসের সেবামূল্য প্রতি ২৫ হাজার টাকায় ২০০ টাকা থেকে ৪৬২ টাকা। যেখানে ব্যাংকের খরচ সর্বোচ্চ ২৯ টাকা। সেন্ড মানি করতে এমএফএসে ২৫ হাজারে খরচ শূন্য থেকে ১৫০ টাকা। অথচ ব্যাংকে কোনো খরচ নেই।
টিআইবি আরও জানায়, ২০২৪ সালে এমএফএস এ নগদ উত্তোলনের ক্ষেত্রে মোট প্রায় ৫ দশমিক ৫ লাখ কোটি টাকার সেবামূল্য হিসাবে অন্তত ৪ হাজার ৪১০ কোটি টাকা থেকে সর্বোচ্চ ১০ হাজার ১৯৭ কোটি টাকা গ্রাহকের কাছ থেকে আদায় করেছে। যেখানে সমপরিমাণ নগদ উত্তোলনে ব্যাংক আদায় করেছে সর্বোচ্চ ৬৩৯ কোটি টাকা। সময়।