News update
  • Israeli Aggression against Qatar, Extension of Crimes against Palestine     |     
  • No place is safe in Gaza. No one is safe     |     
  • Stocks fail to recover despite slight gains in Dhaka, Ctg     |     
  • BB Purchases $353m in Dollar Auction to Stabilise Taka     |     
  • Promoting social inclusion of disabled persons thru empowerment     |     

প্রযুক্তির ‘ডানা’-য় ভর করে ‘ঘামের কৃষি’র ‘বুদ্ধিমান কৃষি’তে রূপান্তর

ওয়াং হাইমান ঊর্মি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি 2022-08-02, 12:42pm




সম্প্রতি ধান কাটা ও ধান রোপনের একটি ভিডিও আমার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। ভিডিওতে দেখায়, এই দুটি সম্পূর্ণ ভিন্ন অপারেশন প্রায় একই সময়ে সম্পন্ন হয়েছে। কিন্তু কী করে এটা সম্ভব? আসুন, চীনের ‘যান্ত্রিক কৃষি’-র সঙ্গে পরিচিত হই।

এখন গুরুত্বপূর্ণ সময়। গোটা এলাকাজুড়ে কাজ চলছে; গোটা বছরের খাদ্যশস্য ফলানোর কাজ। চীনের আনহুই প্রদেশের কথা উদাহরণ হিসেবে বলা যায়। স্থানীয় গ্রামবাসী সু চিন ছেংয়ের পরিবারের ধানক্ষেতের ধান এরইমধ্যে পেকেছে। তিনি জানান, এ বছর ৩.৬ হেক্টর জমিতে আগাম উচ্চ ফলনশীল ধান রোপণ করেন তিনি। প্রতি হেক্টরে ফলন ৬৫০ কেজির বেশি। তিনি কৃষিকাজে যন্ত্রের ব্যবহার করেন। যন্ত্রের ব্যবহার জনশক্তির ব্যবহার কমিয়েছে, ফলন বাড়িয়েছে, এবং তিনি এখন আগের চেয়ে বেশি সুখী।

বর্তমান যুগে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি প্রধান উত্পাদন-শক্তিতে পরিণত হয়েছে। চীনের আধুনিক কৃষি সম্পূর্ণ যান্ত্রিকীকরণের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। উচ্চ প্রযুক্তির ‘ডানা’য় ভর করে কৃষিকাজ এখন আর কঠোর পরিশ্রমের সমার্থক নয়। নতুন যুগে কৃষকরা ভারী কৃষিকাজ থেকে মুক্তি পেতে পারে এবং ‘ঘামের কৃষি’ থেকে ‘বুদ্ধিমান কৃষি’-তে রূপান্তরের সুফল ভোগ করতে ও উপলব্ধি করতে পারে।

বুদ্ধিমান কৃষি তথা ‘আই এগ্রিকালচার’ বলতে কৃষির উত্পাদন, পরিচালনা, ব্যবস্থাপনা, ও পরিষেবা নিয়ন্ত্রণে যন্ত্র ও তথ্যপ্রযুক্তির স্মার্ট ব্যবহারকে বোঝায়। ‘আই এগ্রিকালচার’-এর আবির্ভাব প্রযুক্তিনির্ভর চাষবাসকে সম্ভব করেছে। এই আই কৃষি শুধুমাত্র কৃষি উত্পাদন বাড়িয়েছে, তা নয়, বরং কৃষি উত্পাদনের নিরাপত্তা ও কৃষিপণ্যের গুণগত মানও উন্নত করেছে। 

বর্তমানে বিশ্ব বিরাট পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া প্যান্ডামিক এই পরিবর্তনের একটি মূল কারণ।  বৈশ্বিক খাদ্য শিল্প চেইন এবং সরবরাহ চেইনে অনিশ্চয়তার ঝুঁকি বাড়ছে। এই পটভূমিতে বিভিন্ন দেশের উচিত নিজেদের কৃষির আধুনিকীকরণ ত্বরান্বিত করা, খাদ্য-নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, এবং খাদ্য আমদানির ওপর নির্ভরশীলতা হ্রাস করা। কৃষির উত্পাদন ও আয় বাড়াতে প্রযুক্তির স্মার্ট ব্যবহার জরুরি।

চীনা কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিসি’র) সাধারণ সম্পাদক ও চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং প্রায়ই বলে থাকেন যে, খাদ্য-নিরাপত্তা "দেশের সবচেয়ে বড় ব্যাপার"। আর খাদ্যের সমস্যা সমাধানের মৌলিক উপায় হল প্রযুক্তির স্মার্ট ব্যবহার। প্রয়োজনীয় নীতি-সহায়তা, প্রযুক্তির ব্যবহার বৃদ্ধি, ও সংস্কারসহ বিভিন্ন পদক্ষেপের মাধ্যমে, চীন তার কৃষির উত্পাদন-ক্ষমতাকে উন্নত করেছে। এর ফলে আগে যেখানে ৪০ কোটি লোক পর্যাপ্ত পরিমাণে খেতে পারতো না, সেখানে বর্তমানে ১৪০ কোটি মানুষ ভালোমন্দ খেতে পারছেন। ফাইভ-জির দ্রুত বিকাশ, কৃষিতে পেইতৌ নেভিগেশন সিস্টেমের ব্যবহার বৃদ্ধি, এবং মানসম্মত কৃষি যন্ত্রপাতির ব্যবহার কৃষি-উত্পাদন উল্লেখযোগ্য হারে বাড়িয়েছে।

চীনের ‘আই এগ্রিকালচার’ উন্নয়নের পথে এগুচ্ছে। তবে এটি এখনও নতুন মডেল। এটি এখনও বিকাশের পর্যায়ে রয়েছে।  এই মডেলে যেসব প্রযুক্তি ব্যবহৃত হচ্ছে তা আরও উন্নত হওয়া প্রয়োজন। গ্রামীণ পুনরুজ্জীবন এবং শহর ও গ্রামের সমন্বিত উন্নয়নের জন্য এটা জরুরি। প্রযুক্তির উন্নয়ন ও এর যথাযথ ব্যবহারের মাধ্যমে কৃষির আধুনিকায়ন সম্পূর্ণ করতে হবে। 

(ওয়াং হাইমান ঊর্মি,সাংবাদিক, বাংলা বিভাগ, চায়না মিডিয়া গ্রুপ, বেইজিং, চীন। )