News update
  • Bangladesh Army takes 15 officers into custody     |     
  • DUCSU wants trial of all involved in enforced disappearances, killings     |     
  • ICT to Hear Hasina Crimes Against Humanity Case     |     
  • Army Detains 15 Officers Over War Crimes Warrants     |     
  • Machado dared to imagine a better world, worked tirelessly: Prof Yunus     |     

টেলিস্কোপ বানিয়ে তাক লাগাল কুড়িগ্রামের স্কুলছাত্র

গ্রীণওয়াচ ডেস্ক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি 2024-04-22, 10:15am

09f6638ecf355a552895124daac792dfc67638a9d0a29c06-fb66805abd8d986dd4ab5e134f1b76551713759381.jpg




কুড়িগ্রামের রাজারহাটে টেলিস্কোপ বানিয়ে সাড়া ফেলেছে ফাহাদ আল ফারাবী (১৬) নামে ১০ম শ্রেণির এক ছাত্র। তার বানানো টেলিস্কোপের নামকরণ করা হয়েছে পোষা বিড়ালের নামে ‘NEKO-K-1’।

ফাহাদ আল ফারাবীর এমন আবিষ্কারে খুশি পরিবার ও স্বজনরা। তার টেলিস্কোপের মাধ্যমে খালি চোখে চাঁদ ও সূর্যের স্পষ্ট ছবি দেখতে প্রতিদিন ভিড় করছেন স্থানীয়রা। 

টেলিস্কোপ বানানো ফাহাদ আল ফারাবী রাজারহাট উপজেলার মেকুটারী গ্রামের জয়নুল আবেদীন ও পারভীন খন্দকারের ছোট ছেলে। সে রাজারহাট পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণির ছাত্র।

পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, ফাহাদ আল ফারাবী ছোট বেলা থেকে সৌরজগতের প্রতি খুবই আগ্রহী ছিল। বইয়ের পাতায় গ্রহনক্ষত্র-উপগ্রহের অবস্থান পড়তো সে। ২০২১ সালের শেষে টেলিস্কোপ বানানো সরঞ্জাম সংগ্রহে নেমে পড়ে। পরবর্তীতে বিভিন্ন স্থানে খোঁজখবর নিয়ে জানতে পারে টেলিস্কোপ কিনতে পাওয়া যায়। কিন্তু বাজারে একটি টেলিস্কোপ ৪০-৫০ হাজার টাকা। শিক্ষার্থী হয়ে এত টাকা সংগ্রহ করতে পারবে না জেনে ২০২৩ সালে নিজেই টেলিস্কোপ বানাতে শুরু করে। এ কাজে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সহযোগিতা করেছিলেন ফাহাদ আল ফারাবীর বড় ভাই ফাহমিদ আল জাবের। 

তিন মাসের মধ্যে টেলিস্কোপ বানাতে পেরে খুশি ফাহাদ আল ফারাবী। তার ইচ্ছে সরকারি কোনো সহযোগিতা পেলে আগ্রহীদের মাঝে স্বল্প দামে সরবরাহ করবে তার তৈরি টেলিস্কোপ। 

নিজ বাড়িতে টেলিস্কোপ বানানো ফাহাদ আল ফারাবী বলে, ছোটবেলা তার ইচ্ছে ছিল মহাকাশ নিয়ে কাজ করার। শুরুতে এস্টোনমি ইন্সস্ট্রুমেন্ট না থাকায় কাজ করতে পারেনি। ২০২৩ সালে ঢাকার এক এস্ট্রনোমি হাউস থেকে যন্ত্রপাতিগুলো সংগ্রহ করে টেলিস্কোপটি বানিয়ে ফেলে।

সে আরও জানায়, টেলিস্কোপটি তৈরি করতে মূলত পিভিসিপাইপ, লেন্স, মাউন্ট, ফোকাল, অ্যাপারচার, মিরর, ফোকাসার, রমেটাল থ্রি ডি স্পাইডার ও কাঠের প্রয়োজন হয়েছে। টেলিস্কোপটি ওজন মাত্র ১২ কেজি। এটির মাধ্যমে ৩ লাখ কি.মি দূর থেকে দৃশ্য ধারণ করা যায়। ভবিষ্যতে আরও উন্নত টেলিস্কোপ ও মাইক্রো টেলিস্কোপ বানানোর ইচ্ছে তার। এ ছাড়া সরকারি কোনো সহযোগিতা পেলে মানুষের কাছে স্বল্পদামে টেলিস্কোপ পৌঁছে দিতে কাজ করার ইচ্ছে আছে। 

ফারাবীর বাবা জয়নুল আবেদীন বলেন, 

ফারাবী যখন টেলিস্কোপ বানানোর কাজ শুরু করে, তখন কিছুটা বিরক্ত লেগেছিল। অবসর সময়ে বাইরে আড্ডা না দিয়ে ঘরে বসে এসব তৈরি করতে ব্যস্ত থাকায় ধীরে ধীরে ভালোও লাগতে শুরু করে। ও দাবা খেলায় খুবই পারদর্শী। জেলা পর্যায়ে এবং রাজধানীতে দাবা খেলে নগদ অর্থ পুরস্কার পায়। সেই অর্থ দিয়ে টেলিস্কোপ বানানো শুরু করলে আমি তাকে বাড়তি কিছু টাকা দিয়ে সহযোগিতা করি। টেলিস্কোপটি বানাতে খরচ হয়েছে মাত্র ১৭ হাজার টাকা। এ মানের টেলিস্কোপ বাজারে ৪০-৫০ হাজার টাকা। ফারাবী আরও ভালো কিছু করুক এ প্রত্যাশা করছি।

ফারাবীর বন্ধু রাফিউল ইসলাম রাব্বি জানায়, ফারাবী কোনো বাজে আড্ডা দিয়ে সময় কাটায় না। টেলিস্কোপ বানানোর কাজে প্রায় সময় পাশে ছিলাম। যেদিন টেলিস্কোপের মাধ্যমে চাঁদ- সূর্য খালি চোখে স্পষ্ট দেখলাম খুবই ভালো লেগেছিল। 

রাজারহাট পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. মিজানুর রহমান বলেন,

ফাহাদ আল ফারাবী ভালো ছাত্র। পড়াশোনার পাশাপাশি ক্রিয়েটিভ কাজে তার আগ্রহ বেশি। ফারাবী আরও ভালো করুক এ কামনা করছি।

রাজারহাট উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোছা. আয়শা সিদ্দিকা বলেন, ফাহাদ আল ফারাবী পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র। পড়াশোনার পাশাপাশি দাবা খেলায় তার বেশ সুনাম রয়েছে। এ বয়সে বাইরে আড্ডা না দিয়ে ঘরে বসে মেধার বিকাশ করতে টেলিস্কোপ বানানোর কাজটি খুবই প্রশসংসার দাবিদার। সরকারি কোনো সহযোগিতার প্রয়োজন হলে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে ফারাবীর পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করা হবে। সময় সংবাদ।