জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবে সৃষ্ট অস্বাভাবিক বৃষ্টিপাতের ফলে পাকিস্তান জুড়ে দুই মাস ধরে বন্যা পরিস্থিতি বিরাজ করছে। এই বন্যা মোকাবেলায় পাকিস্তানকে সহায়তার জন্য, জাতিসংঘ মঙ্গলবার ১৬ কোটি ডলার বরাদ্দের আবেদন জানিয়েছে।
পাকিস্তানের কর্মকর্তারা বলছেন জুনে মৌসুমি বৃষ্টিপাত শুরু হওয়ার পর দেখা দেওয়া বিপর্যয়ে ৩ কোটি ৩০ লাখেরও বেশি মানুষকে “মারাত্মকভাবে” প্রভাবিত করেছে। আর ১১০০ জনেরও বেশি মানুষ মারা গেছে।
জাতিসংঘ ও পাকিস্তান সরকার একই সঙ্গে জেনেভা ও ইসলামাবাদে এই তাৎক্ষণিক ও সার্বিক সহায়তার আবেদন জানিয়েছে।
গুতেরেস বলেছেন, দক্ষিণ এশিয়া জলবায়ু সংকটের জন্য বিশ্বের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চলের একটি। আর এ অঞ্চলে বসবাসকারী মানুষদের, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে মারা যাওয়ার আশঙ্কা ১৫ গুণ বেশি।
এ দিকে হোয়াইট হাউজর এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে , যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা বা ইউএসআইডির মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র পাকিস্তানের বন্যাদূর্গতদের জন্য আরও ৩ কোটি ডলার পাঠাচ্ছে । এই সব অর্থায়নে ইউএসআইডির অংশীদাররা জরুরি খাদ্য,পুষ্টি এবং আশ্রয়ের ব্যাপারে সাহায্য প্রদানকে অগ্রাধিকার দিবেন। ইউএসআইডির ডিসাস্টার ম্যানেজমেন্ট বিশেষজ্ঞ বন্যার প্রভাব মূল্যায়নের জন্য সোমবার ইসলমাবাদ পৌঁছেছেন। স্থানীয় অংশীদারদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ ও সমন্বিত ভাবে পরিস্থিতির উপর লক্ষ্য রাখতে ব্যাংকক ও ওয়াশিংটনে ইউএসআইডির মানবিক কর্মকর্তারা কাজ করে যাচ্ছেন। তাঁরা পাকিস্তান সরকার ও ইসলামাবাদে যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসের সঙ্গেও সমন্বয় রাখছেন।
মঙ্গলবার পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি টেলিভিশনে প্রচারিত একটি উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বলেন, পাকিস্তান জুন মাস থেকে প্রবল মৌসুমি বৃষ্টিপাতের সবচেয়ে গুরুতর এবং সম্পূর্ণ অস্বাভাবিক পরিস্থিতির সঙ্গে লড়াই করছে। এই সময়ের বৃষ্টিপাত গত ৩০ বছরের বৃষ্টিপাতের জাতীয় গড়ের ৩ গুণ বেশি।
পাকিস্তানের জাতীয় দুর্যোগ মোকাবেলা কর্তৃপক্ষ (এনডিএমএ) উল্লেখ করেছে যে, দক্ষিণ এশীয় দেশটি জুড়ে ১০ লাখেরও বেশি বাসগৃহ, ১৬২টি সেতু এবং প্রায় ৩৫০০ কিলোমিটার সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়েছে এনডিএমএ আরও বলেছে, বন্যায় ৮ লাখেরও বেশি গবাদি পশু মারা গেছে এবং ফসল ও গুরুত্বপূর্ণ কৃষিজমির ক্ষতি হয়েছে।
পাকিস্তানে ৭০০০বেশি হিমবাহ রয়েছে। বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন যে, বৈশ্বিক তাপমাত্রার ক্রমাগত বৃদ্ধির ফলে এগুলো দ্রুত গলে যাচ্ছে। এগুলো গলে হাজার হাজার হিমবাহের হ্রদ সৃষ্টি করেছে। দক্ষিণ এশীয় দেশটি বলেছে, এটি ১ শতাংশেরও কম গ্রিনহাউজ গ্যাস নির্গমনের জন্য দায়ী। কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত শীর্ষ ১০টি দেশের তালিকাভুক্ত দেশ। তথ্য সূত্র ভয়েস অফ আমেরিকা বাংলা।