ভয়াবহ বন্যায় পাকিস্তানের অনেক কৃষি জমি পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ায় দেশটি খাদ্য সংকটের সাথে মোকাবেলা করছে। তুরস্কের প্রেসিডেন্টের সাথে এক ফোনালাপে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী এমন কথা বলেন। কর্তৃপক্ষ সোমবার খাদ্য, তাঁবু ও অন্যান্য সামগ্রী সরবরাহের প্রয়াস বৃদ্ধি করেছে।
১২টি সামরিক বিমান, চারটি ট্রেন ও তুরস্কের রেড ক্রিসেন্ট ট্রাক ব্যবহার করে খাদ্য, তাঁবু ও ওষুধ পাঠানোর জন্য, তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রেজেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ানকে ধন্যবাদ জানাতে রাতে তার সাথে ফোনে কথা বলেন শাহবাজ শরীফ।
এক সরকারি বিবৃতিতে বলা হয়, সরকারের ত্রাণ কার্যক্রম সম্পর্কে এরদোয়ানকে অবহিত করেন শরীফ। একইসাথে তিনি “খাদ্য সংকট” মোকাবেলায় তুরস্কের সহায়তারও আবেদন করেন। বন্যাকবলিত এলাকার পুনর্নির্মাণেও তুরস্কের সাহায্যের আবেদন করেন শরীফ।
পাকিস্তান নিজেদের কৃষির উপর ব্যাপকহারে নির্ভরশীল। দেশটি মাঝেমধ্যে নিজেদের উদ্বৃত্ত গম আফগানিস্তান ও অন্যান্য দেশে রফতানিও করে। বর্তমান পরিস্থিতিতে দেশটি অতিপ্রয়োজনীয় গম ও সবজি আমদানি করতে আলোচনা চালাচ্ছে। বন্যাকবলিত নয়, এমন মানুষের জন্যও আমদানি করার প্রয়োজন দেখা দিয়েছে।
একইসময়ে সবজি ও অন্যান্য খাদ্যের মূল্যও বৃদ্ধি পাওয়া শুরু করেছে।
গত সপ্তাহ পর্যন্ত বন্যার পানি পাকিস্তানের এক-তৃতীয়াংশ এলাকা প্লাবিত করে রেখেছিল। এর মধ্যে পাঞ্জাবের পূর্বাঞ্চল ও সিন্ধুর দক্ষিণাঞ্চলের কৃষিপ্রধান এলাকাগুলোও ছিল, যেগুলো দেশটির খাদ্যের মূল উৎস। প্রাথমিকভাবে পাকিস্তান জানিয়েছিল যে, বন্যায় ১,০০০ কোটি ডলারের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। কিন্তু কর্তৃপক্ষ বলছে যে ক্ষতির পরিমাণ প্রাথমিক হিসাব থেকেও অনেক বেশি।
এমন পরিস্থিতিতে বাধ্য হয়ে পাকিস্তান ও জাতিসংঘ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে আরও সহায়তা পাঠানোর আবেদন জানায়।
তাতে সাড়া দিয়ে, জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা ও দেশ ৬০টিরও বেশি বিমানে করে সহায়তা পাঠায়। এসব দেশের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রও রয়েছে। গত সপ্তাহ থেকে, যুক্তরাষ্ট্র খাদ্য সরবরাহ করতে তিনটি সামরিক বিমান পাঠিয়েছে।
সোমবার দিনের শেষ নাগাদ যুক্তরাষ্ট্রের আরও তিনটি সামরিক বিমান সহায়তা নিয়ে পাকিস্তানের সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত সিন্ধু প্রদেশের দক্ষিণাঞ্চলে অবতরণ করবে বলে, পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রক এক বিবৃতিতে জানায়।
২০টি ফ্লাইটের মাধ্যমে সহায়তা সরবরাহ করার উদ্দেশ্যে, কয়েকদিন আগেই যুক্তরাষ্ট্র বন্যাকবলিত পাকিস্তানের সাথে একটি মানবিক বিমানসংযোগ (এয়ার ব্রিজ) স্থাপন করে। ফ্লাইটগুলো ১৬ সেপ্টেম্বরের আগে পাকিস্তান এসে পৌঁছাবে। অভাবগ্রস্ত মানুষদের মাঝে নগদ অর্থ বিতরণেরও পরিকল্পনা রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের কর্তৃপক্ষের। তথ্য সূত্র ভয়েস অফ আমেরিকা বাংলা।