News update
  • Economic Reporters demand withdrawal of ban on entry to BB      |     
  • 155 killed in Tanzania as heavy rains cause floods, landslides: PM     |     
  • Sajek road accident: Death toll rises to 9     |     
  • Heatstroke kills 30 in Thailand this year as kingdom bakes     |     
  • 160 pilot whales beach on Australian west coast, 26 die     |     

উত্তর কোরিয়ার কোভিড-১৯ টিকা পরিকল্পনা চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি

গ্রীণওয়াচ ডেস্ক বিবিধ 2022-06-16, 7:38am

img_20220616_073833-3c313aa0d45b9a3750c1e4bc0b1f32be1655343530.png




ক্রমবর্ধমান কোভিড-১৯ সংক্রমণের মুখোমুখি উত্তর কোরিয়ায়, কেবলমাত্র ভ্যাকসিন থাকলেও দেশব্যাপী টিকাদান প্রক্রিয়া চালু করার জন্য তা অপর্যাপ্ত হতে পারে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পর্যাপ্ত কোল্ড স্টোরেজ ইউনিট এবং প্রশিক্ষিত চিকিৎসা ও প্রযুক্তিগত কর্মী আর যা যা থাকা দরকার, সেগুলোর যথেষ্ট অভাব তাদের রয়েছে।

পিয়ংইয়ং মঙ্গলবার ঘোষণা করেছে, দেশটির রাষ্ট্র পরিচালিত সংবাদ মাধ্যম কোরিয়ান সেন্ট্রাল নিউজ এজেন্সি (কেসিএনএ) এর মাধ্যমে ১২ থেকে ১৩ জুন পর্যন্ত দেশে "৩২,৮১০টিরও বেশি জ্বরে আক্রান্ত কেস" সনাক্ত করা হয়েছে। কেসিএনএ আরও বলেছে, "এপ্রিলের শেষের দিক থেকে" ১৪ জুন পর্যন্ত এই সংখ্যা ৪৫ লাখ ছাড়িয়ে গেছে।

উত্তর কোরিয়া গত ১২ মে প্রথম এই ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কথা জানায়৷ পিয়ংইয়ং প্রাদুর্ভাবের কথা স্বীকার করার আগে পর্যন্ত, ২০২০ সালের প্রথম দিকে বিশ্বব্যাপী মহামারী হওয়ার পর থেকে দেশটি কোভিড শূন্য বলে দাবি করে আসছিল৷

গ্যাভি, নামে একটি গ্লোবাল ভ্যাকসিন ডিস্ট্রিবিউশন নেটওয়ার্ক, ভিওএ-এর কোরিয়ান সার্ভিসকে বলেছে, উত্তর কোরিয়া "চীন থেকে ভ্যাকসিনের প্রস্তাব গ্রহণ করেছে এবং ডোজ দেওয়া শুরু করেছে।"

তবে গ্যাভি’ মুখপাত্রের বরাত দিয়ে বলছে ঠিক কবে থেকে টিকা দেওয়া শুরু হয়েছিল এবং সেটি কী ধরনের টিকা, অর্থাৎ ডাব্লিউএইচও-অনুমোদিত চীনা ভ্যাকসিন যেমন সিনোফার্ম, সিনোভাক বা ক্যানসিনো কিনা, তা বলেনি।

উত্তর কোরিয়া অবশ্য ইঙ্গিত দেয়নি যে তারা একটি দেশব্যাপী টিকাদান কর্মসূচি শুরু করেছে যাকে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গুরুতর অসুস্থতা এবং মৃত্যু প্রতিরোধ করার একমাত্র কার্যকর উপায়।

পিয়ংইয়ং যুক্তরাষ্ট্র, দক্ষিণ কোরিয়া, কিংবা গ্যাভি -এর মতো আন্তর্জাতিক ভ্যাকসিন শেয়ারিং প্রোগ্রাম থেকে ভ্যাকসিনের গ্রহণ করেনি। গ্যাভির মুখপাত্র বলেছেন, "পিয়ংইয়ং আমাদের সহায়তার অনুরোধ করলে, তাদের সহায়তা করার জন্য আমরা সর্বদা প্রস্তুত ছিলাম, কিন্তু এখনও পর্যন্ত,কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন জন্য আনুষ্ঠানিক কোনও অনুরোধ" আমরা পাইনি।

হিজে লি হার্ভার্ড মেডিকেল স্কুলের কোরিয়া স্বাস্থ্য নীতি প্রকল্পের একজন গবেষক, যিনি ২০১৬ সাল থেকে উত্তর কোরিয়ার পিয়ংইয়ং ইউনিভার্সিটি অফ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজিতে পড়াতে একাধিকবার উত্তর কোরিয়া ভ্রমণ করেছেন। তিনি ভিওএ-এর কোরিয়ান সার্ভিসকে বলেন, চিকিৎসা সংক্রান্ত চ্যালেঞ্জের কারণে সরকার হয়তো একটি বৃহৎ টিকাদান কর্মসূচি পরিচালনা করা থেকে সরে এসেছে।

বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, উত্তর কোরিয়া যদি কোভিড-১৯ টিকাদান কর্মসূচি শুরু করতে চায়, তবে তাকে বেশ কয়েকটি চিকিৎসা ও প্রযুক্তিগত বাধা অতিক্রম করতে হবে। কারণ তাদের কোল্ড স্টোরেজ ইউনিট এবং চিকিৎসা ও প্রযুক্তিগত বিশেষজ্ঞদের দরকার হবে। এটি বিশেষত সত্য, যদি পিয়ংইয়ং এমআরএনএ ভ্যাকসিনগুলি ব্যবহার করতে চায়, যেগুলির বিশেষ যত্ন সহকারে পরিচালনার প্রয়োজন৷

ফাইজার এবং মডার্না -এর মতো সবচেয়ে কার্যকর ভ্যাকসিনগুলি, এমআরএনএ প্রযুক্তি ব্যবহার করে, যা শরীরের কোষগুলিকে প্রোটিন তৈরি করতে নির্দেশ দেয়, এবং ভাইরাসের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি করে।

ফাইজার ভ্যাকসিনগুলি মাইনাস ৯০-৬০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় পাঠানো হয় এবং দুই সপ্তাহ পর্যন্ত মাইনাস ২৫-১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ফ্রিজে সংরক্ষণ করতে হয়।

মডার্না ভ্যাকসিনগুলি মাইনাস ৫০-১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় পাঠানো হয় এবং একই তাপমাত্রায় ফ্রিজারে সংরক্ষণ করতে হয়।

গলানোর পরে, উভয় টিকাই এক মাস পর্যন্ত ২-৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রার মধ্যে ফ্রিজে রাখা যেতে পারে।

নিউ ইয়র্ক সিটির ওইল কর্নেল মেডিকেল কলেজের মাইক্রোবায়োলজি এবং ইমিউনোলজির অধ্যাপক জন মুর বলেছেন, "ওই [এমআরএনএ] ভ্যাকসিনগুলিকে খুব ঠান্ডা ফ্রিজারে সংরক্ষণ করতে হবে এবং তারপরে কয়েক ঘন্টার মধ্যে সুই ইনজেকশন দিয়ে গলাতে এবং বিতরণ করতে হবে।"

মুর বলেন, চীনা ভ্যাকসিন এবং নোভাভ্যাক্সকে অবশ্যই ফ্রিজে প্রায় ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় রাখতে হবে।

২০২১ সালে, কোভিড-১৯ এমআরএনএ ভ্যাকসিন সংরক্ষণের জন্য ইউনিসেফ বিশ্বের প্রায় ৭০টি দেশে ৮০০টি অতি-কোল্ড স্টোরেজ ইউনিট সরবরাহ করেছে।

"উত্তর কোরিয়াকে টিকা দেওয়ার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় জ্ঞান অর্জনের জন্য বৈশ্বিক অংশীদারদের সাহায্যের প্রয়োজন হবে" সেইসাথে "কোল্ড চেইন সঠিকভাবে যেন কাজ করে, তা নিশ্চিত করার জন্য প্রযুক্তিগত বিশেষজ্ঞদেরও সহায়তা দরকার"।

উত্তর কোরিয়ায় ডব্লিউএইচও এবং ইউনিসেফের প্রাক্তন প্রজেক্ট ম্যানেজার নাগি শফিক বলেছেন, উত্তর কোরিয়ার "টিকাদান কর্মসূচি টিকা সংরক্ষণের প্রক্রিয়া পরিচালনার জন্য কিছু চিকিৎসা বিশেষজ্ঞের প্রয়োজন হবে।"

বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, প্রায় ২.৬ কোটি জনসংখ্যা অধ্যুষিত দেশটিতে এমআরএনএ এবং নন-এমআরএনএ উভয় ভ্যাকসিনের সংরক্ষণ করতে কোল্ড স্টোরেজ ইউনিট চালানোর জন্য পর্যাপ্ত বিদ্যুৎ সুবিধা পেতে হবে।

উত্তর কোরিয়ায় নির্ভরযোগ্য বিদ্যুৎ সরবরাহের ঘাটতি রয়েছে, এবং দেশটির জনগণকে আলো জ্বালানোর জন্য প্রায়শই সংগ্রাম করতে হয়। সিআইএ ওয়ার্ল্ড ফ্যাক্টবুক অনুসারে, ২০১৯ সালে দেশটির মোট জনসংখ্যার মাত্র ২৬% বিদ্যুতের সুবিধা পেয়েছিল।

শফিক বলেন, "ইউনিসেফ কিছু সৌরশক্তি (চালিত) রেফ্রিজারেটর সরবরাহ করেছে এবং (তারা) একটি 'নিয়মিত' টিকাদান কর্মসূচির জন্য ভাল কাজ করছে। তবে গণ টিকা দেওয়ার জন্য, প্রচারের আগে কিছু পরিবর্তন এবং অন্যান্য ব্যবস্থা বিবেচনা করা যেতে পারে।" তথ্য সূত্র ভয়েস অফ আমেরিকা বাংলা।