
যশোরের ‘অতি ফর্সা’ রঙের কারণে পিতৃপরিচয় হারানো তিন বছরের শিশু আফিয়া ও তার মায়ের পাশে দাঁড়িয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। আগামী দশ দিনের মধ্যে তাদের জন্য ঘর নির্মাণ করে দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। পাশাপাশি আফিয়ার পূর্ণাঙ্গ লেখাপড়ার দায়িত্বও নিয়েছেন। একইসঙ্গে শিশুটিকে বাবার পরিবারে ফেরানোর জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে দলীয় নেতাদের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
শুক্রবার (১৪ নভেম্বর) সকালে যশোর সদর উপজেলার বাজুয়াডাঙ্গা গ্রামে আফিয়ার নানাবাড়িতে গিয়ে তারেক রহমানের এ বার্তা পৌঁছে দেন বিএনপির খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও যশোর-৩ আসনের প্রার্থী অনিন্দ্য ইসলাম অমিত।
তিনি জানান, গণমাধ্যমে প্রচারিত প্রতিবেদন দেখার পরপরই বিএনপি চেয়ারম্যানের নির্দেশে এ পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।
এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে সময় টিভির ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে ‘বিদেশিদের মতো গায়ের রঙ হওয়ায় সন্তানকে অস্বীকার; মানবেতর জীবনযাপন আফিয়া ও তার মায়ের’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রচারিত হয়।
জানা গেছে, যশোর সদর উপজেলার বাউলিয়া চাঁদপাড়া গ্রামের মোজাফফর হোসেনের সঙ্গে ২০২০ সালে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয় কুয়াদা বাজুয়াডাঙ্গা গ্রামের মনিরা খাতুনের। ২০২২ সালের ১৩ নভেম্বর তাদের ঘর আলো করে আসে আফিয়া। তবে শিশুটির শরীরের রং অতি ফর্সা, অনেকটা ইউরোপীয়দের মতো হওয়ায় জন্মের পর থেকে একবারও মেয়েকে কোলে তোলেননি মোজাফফর। স্ত্রীকেও ত্যাগ করে অন্যত্র বসবাস শুরু করেন। আট মাস পর মনিরাকে তালাক দিয়ে বিদেশে পাড়ি জমান।
এরপর সন্তানকে নিয়ে সৎমায়ের সংসারে আশ্রয় নেন মনিরা। কিন্তু সেখানে নানা গুঞ্জন মাথায় নিয়ে খুব কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন তিনি।
বিষয়টি গণমাধ্যমে প্রকাশের পর নজরে আসে তারেক রহমানের। তার নির্দেশে শুক্রবার সকালে দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে আফিয়ার বাড়িতে যান অনিন্দ্য ইসলাম অমিত। সেখানে তিনি আফিয়া ও তার মায়ের খোঁজখবর নেন এবং প্রতিবেশীদের সঙ্গে কথা বলেন।
তিনি জানান, আগামী দশ দিনের মধ্যে আফিয়ার জন্য ঘর নির্মাণ, তার সম্পূর্ণ শিক্ষার দায়িত্ব গ্রহণ এবং শিশুটিকে বাবার পরিবারে ফেরানোর উদ্যোগ নেয়া হবে।
অমিত আরও বলেন, ‘আফিয়া জেনেটিক ডিসঅর্ডারে ভুগছেন। এ ধরনের সমস্যা লাখে একজনের হয়। তার বাবার পরিবারে বা এলাকায় শিক্ষার আলো না পৌঁছানোর ফলে তাদের মাঝে ভুল ধারণা সৃষ্টি হয়েছে। তারপরও আমার নেতার নির্দেশে আমরা তার পাশে আছি এবং আগামীতেও থাকব।’
এদিকে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়ায় সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন আফিয়ার মা মনিরা খাতুন।