News update
  • BNP Opposes Reforms to Constitution’s Core Principles      |     
  • Time to Repair Bangladesh–Pakistan Ties     |     
  • Dhaka’s air quality recorded ‘unhealthy’ Friday morning     |     
  • Dr Yunus proved impact of innovative economics: Peking Varsity Prof     |     
  • Alongside conflict, an info war is still happening in Gaza     |     

শেখ হাসিনা দেশের সব প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করেছেন: ড. ইউনূস

গ্রীণওয়াচ ডেস্ক ব্যাঙ্কিং 2024-09-10, 9:34pm

6431c059900760786a047d49b629131831d3e70985c3733d-3fadea07f99da07425cd3b0f326a8a891725982459.jpg




আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর থেকে একের পর এক প্রকাশ পাচ্ছে ব্যাংক খাতে প্রায় দেড় দশক ধরে চলা অনিয়মের ফিরিস্তি। জালিয়াতি আর লুটপাটের কারণে বেশ কয়েকটি ব্যাংক ধ্বংশের দ্বারপ্রান্তে। এসব ব্যাংক দেউলিয়া হয়ে গেলে অর্থনীতিতে বড় রকমের ধাক্কা আসবে বলে মনে করেন অর্থনীতিবিদ ও ব্যাংক বিশ্লেষকরা।

এ ব্যাপারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাংকিং এবং ইন্স্যুরেন্স বিভাগের অধ্যাপক মাঈন উদ্দিন সময় সংবাদকে বলেন, একটি ব্যাংক কোনো কারণে দেউলিয়া হয়ে গেলে এর প্রভাব বাকি ব্যাংকগুলোর ওপরও পড়বে। এক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এমন ব্যবস্থা করা উচিত যাতে করে কোনো ব্যাংক দেউলিয়া না হয়।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর জানিয়েছেন, যদিও ১০ ব্যাংক দেউলিয়া হওয়ার পর্যায়ে আছে, তারপরও গ্রাহকদের স্বার্থে তাদের বাঁচাতে সব ধরনের চেষ্টা করা হবে। আশা করা যাচ্ছে যারা এসব দুর্বল ব্যাংকের গ্রাহক, তারা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন না।

গভর্নর নাম না বললেও বেশ কয়েক বছর ধরে অনিয়মে জর্জরিত শরিয়াভিত্তিক ব্যাংকগুলোর দিকেই দৃষ্টি অনেকের। বিশেষ করে গ্রাহকরা তড়িঘড়ি করে এসব ব্যাংক থেকে টাকা তুলতে শুরু করেছেন। তবে তারল্য সংকটের কারণে ব্যাংকগুলো গ্রাহকদের টাকা দিতে পারছে না। এতে গ্রাহকদের মধ্যে এক ধরনের অস্থিরতা এবং সন্দেহ সৃষ্টি হয়েছে।

আব্দুর রউফ গভর্নর থাকাকালে এসব দুর্বল ব্যাংককে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে টাকা ধার দিয়ে তারল্য সুবিধা দেয়া হলেও নতুন গভর্নর জানিয়েছেন, এসব ব্যাংককে এভাবে আর তারল্য সুবিধা দেয়া হবে না। একদিকে তারল্য সুবিধা না পাওয়া অন্যদিকে এস আলম গ্রুপের বড় অঙ্কের খেলাপির কারণে তারল্য সংকটে ভুগছে ব্যাংকগুলো।

এসব ব্যাংকের গ্রাহকরা বলছেন, আমানত জমা দিয়ে যদি উত্তোলন করা না যায়, তাহলে ব্যাংকিং সুবিধা আর থাকলো কোথায়?

সম্প্রতি সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক পিএলসির গ্রাহক আছিয়া আখতার নিজের অভিজ্ঞতা শেয়ার করে বলেন, টানা এক সপ্তাহ ধরে একটি চেক নিয়ে ব্যাংকের এক শাখা থেকে আরেক শাখায় ঘুরছি। কোনোভাবেই চেক ক্যাশ করাতে পারছি না। সকাল হলেই এসব ব্যাংকের ক্যাশ কাউন্টারের সামনে মানুষের লাইন দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হয়, কিন্তু টাকা মেলে যৎসামান্য।

যদি আসলেই দুর্বল এ ব্যাংকগুলো দেউলিয়া হয়ে যায় তাহলে গ্রাহকের গচ্ছিত টাকার কী হবে- এমন প্রশ্নের জবাবে ব্যাংক বিশ্লেষক মাঈন উদ্দিন বলেন, ব্যাংক সত্যি সত্যি দেউলিয়া হয়ে গেলে আমানত সুরক্ষা আইন-২০২০ অনুযায়ী, প্রাথমিক অবস্থায় গ্রাহকের আমানতের সমপরিমাণ টাকা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মাধ্যমে দেয়া হবে। তবে এ টাকার পরিমাণ সর্বোচ্চ ২ লাখ। অর্থাৎ কারও আমানত ২ লাখের বেশি হলেও সে সর্বোচ্চ এ বীমার আওতায় ২ লাখ টাকাই পাবেন।

এরপর দেউলিয়া হওয়া ব্যাংক আমানতকারীদের বিস্তারিত তথ্য এবং আমানতের পরিমাণ ৯০ দিনের মধ্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে দাখিল করতে হবে। পরবর্তী ৯০ দিনের মধ্যে বীমা তহবিলের ট্রাস্টি বোর্ড থেকে আমানতকারীদের বাকি অর্থ বুঝিয়ে দেয়া হবে বলে জানান এ ব্যাংক বিশ্লেষক।

আমানত সুরক্ষা আইন-২০২০ বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, যদি দেউলিয়া হয়ে যাওয়া ব্যাংকের তহবিলে আমানতকারীদের পরিশোধ সমমূল্যের অর্থ না থাকে তাহলে বাংলাদেশ ব্যাংক ঘাটতি পরিমাণ অর্থ চলমান সুদহারে দেউলিয়া হয়ে যাওয়া ব্যাংককে দেনা মেটানোর জন্য ধার দিতে পারে। এ অর্থের মাধ্যমে আমানতকারীরা নিজেদের গচ্ছিত অর্থ ফেরত পাবেন বলে আইনে উল্লেখ আছে।

গভর্নর জানিয়েছেন, ব্যাংক খাতে গ্রাহকের আমানতের ৯৫ শতাংশের গ্যারান্টি বাংলাদেশ ব্যাংক দেবে। বিশ্বের কোনো ব্যাংক গ্রাহক আমানতের ১০০ শতাংশ গ্যারান্টি দেয় না বলে জানান তিনি।

২০১৮ সাল থেকে বাজারে দেদারসে টাকা ছাপিয়ে ছাড়া হয়েছে, ধার দেয়া হয়েছে দুর্বল ব্যাংকগুলোকে। এতে করে একদিকে যেমন শরিয়াভিত্তিক ব্যাংকগুলোর সমস্যা প্রশমন হয়নি, অন্যদিকে বাজারে বেড়েছে মূল্যস্ফীতি।

এ প্রসঙ্গে সম্প্রতি অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, এ কয়বছরে ৬০ হাজার কোটি টাকা ছাপিয়ে বাজারে ছাড়া হয়েছে। সম্পদের সঙ্গে সামঞ্জস্য না রেখে টাকা ছাপানোর কারণে বাজারে দেখা দিয়েছে অস্থিরতা। 

আগামীতে টাকা ছাপানো প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর বলেছেন, নতুন করে আর টাকা ছাপানো হবে না। টাকা ছাপিয়ে দুর্বল এসব ব্যাংককে সহায়তা করতে গেলে লাখ কোটি টাকা ছাপতে হবে। এতে বাজার আবারও অস্থির হয়ে উঠবে। তারল্য সংকট কাটাতে অন্য উপায় দেখতে হবে।

যত যাই করা হোক না কেন হুট করে কোনো ব্যাংক যাতে দেউলিয়া হয়ে না যায় সেদিকে সর্বোচ্চ নজর দেয়ার প্রসঙ্গ টেনে মাঈন উদ্দিন বলেন, একসঙ্গে অনেক ব্যাংক দেউলিয়া হওয়ার পর্যায়ে থাকলে সেগুলোকে একীভূত করে সমস্যা সমাধান করা যেতে পারে। একেবারেই যদি কোনো ব্যাংককে রক্ষা করা না যায়, তাহলে গ্রাহকের আমানতের সর্বোচ্চ সুরক্ষা দিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক এসব প্রতিষ্ঠানকে বাজার থেকে চলে যাওয়ার নিরাপদ ব্যবস্থা করবেন বলে প্রত্যাশা করেন এ ব্যাংক বিশ্লেষক। সময় সংবাদ।