News update
  • US Issues Travel Alert for Bangladesh Ahead of Election     |     
  • Air ambulance carrying bullet-hit Hadi flies for Singapore     |     
  • Can Dhaka’s arms recovery drive ensure peaceful polls?     |     
  • ‘Unhealthy’ air quality recorded in Dhaka Monday morning     |     
  • BD peacekeepers' deaths: UN chief calls Dr. Yunus, offers condolence     |     

কিংস পার্টি ও নিরপেক্ষ নির্বাচন: রাজনৈতিক ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের আশঙ্কা

মতামত 2024-12-26, 1:49am

ec-bhaban-ac200a855f34b3cefe18bd1467a036f51732258969-e246863909851cced6293ce4d210bce11735156199.jpg

Election Commission building.



ইঞ্জিনিয়ার এ কে এম রেজাউল করিম

ডিসেম্বর ২৫, ২০২৪ - বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে সম্ভাব্য ‘কিংস পার্টি’ গঠনের বিষয়টি। ধারণা করা হচ্ছে, বর্তমান সরকারের একটি অংশ বা ক্ষমতাসীনদের সমর্থনপুষ্ট এই নতুন দল আগামী নির্বাচনে অংশ নেবে। তবে বিশ্লেষকদের আশঙ্কা, এই দল গঠনের পেছনে বৃহৎ পরিকল্পনার অংশ হিসেবে নির্বাচনী ইঞ্জিনিয়ারিং করা হতে পারে, যা জনগণের ভোটাধিকার এবং গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে প্রশ্নবিদ্ধ করবে।

নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার: সময়ের দাবি

বিগত কয়েকটি নির্বাচনের অভিজ্ঞতা থেকে স্পষ্ট যে, নিরপেক্ষ নির্বাচন পরিচালনা করা বর্তমান সরকারের পক্ষে সম্ভব নয়। তাই, ভবিষ্যতের যে কোনো নির্বাচনের আগে সরকারকে ভেঙে দিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন করা জরুরি। গণতন্ত্রকে সুরক্ষিত রাখতে এবং রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে এটাই একমাত্র উপায়। ৩-৬ মাসের জন্য একটি নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন করে নির্বাচন পরিচালনার ঐতিহ্য বাংলাদেশে এক সময় সফলতার সঙ্গে ব্যবহৃত হয়েছে।

আগস্ট বিপ্লব: শহীদ পরিবার ও আহতদের উপেক্ষা

আগস্ট বিপ্লবের পর গঠিত সরকারের সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন ছিল এবং সবচেয়ে অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত ছিল শহীদ পরিবারদের ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসন এবং আহতদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করা। কিন্তু সরকার বাইরে সংস্কার এবং ভেতরে রাজনৈতিক দল গঠনে যতটা গুরুত্ব দিচ্ছে, সে তুলনায় শহীদ পরিবারগুলোর পুনর্বাসন এবং আহতদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করার বেলায় গুরুত্ব তুলনামূলকভাবে কম চোখে পড়ছে।

বিপ্লবের সাড়ে চার মাস পরেও একজন আহত যখন সুচিকিৎসার অভাবে মারা যায়, তখন এর চেয়ে দুঃখজনক আর কিছু হতে পারে না। যে বিপ্লবের উপর দাঁড়িয়ে কিছু মানুষ সুবিধা ভোগ করছে, সেই বিপ্লবের আহতরা যখন চিকিৎসার দাবিতে রাজপথে নামে – তখন এর চেয়ে লজ্জার আর কিছু হতে পারে না।

গণভোট ফিরিয়ে আনার নেপথ্যের উদ্দেশ্য

সম্প্রতি গণভোট পদ্ধতি ফিরিয়ে আনার পরিকল্পনা অনেকের মনে নতুন শঙ্কার জন্ম দিয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং জনগণের ভোটাধিকার ক্ষুণ্ণ করার আরেকটি কৌশল। গণভোটের মাধ্যমে জনগণের চাওয়াকে ভুলভাবে উপস্থাপন করে একটি অনুকূল ফলাফল পাওয়ার চেষ্টা করা হতে পারে।

নতুন রাজনৈতিক দল: মানুষের আগ্রহ কতটুকু?

দেশের প্রচলিত রাজনৈতিক দলগুলোর কর্মকাণ্ডে মানুষের আগ্রহ ও আস্থা ক্রমেই কমে আসছে। নির্বাচনের দিন ভোটকেন্দ্রে গিয়ে নেতা নির্বাচনের প্রবণতা সাধারণ জনগণের মধ্যে দুর্বল হয়ে পড়েছে। কারণ, তারা বিশ্বাস করে যে, নির্বাচন ব্যবস্থা এবং ক্ষমতায় যাওয়ার প্রক্রিয়া আগেই নির্ধারিত থাকে।

তবে তরুণ প্রজন্মের মধ্যে একটি ছাত্র বা যুব-ভিত্তিক রাজনৈতিক শক্তির সম্ভাবনা এখনো বিদ্যমান। নতুন প্রজন্মের দল যদি সংসদে কিছু আসন অর্জন করতে পারে, তাহলে তারা জনগণের পক্ষে কথা বলার সুযোগ পাবে।

ক্ষমতার নেশা ও অন্ধকার ভবিষ্যৎ

বর্তমান সরকার ও রাজনৈতিক নেতৃত্বের ক্ষমতার প্রতি আসক্তি তাদের গণতান্ত্রিক সংস্কারের পরিবর্তে ক্ষমতায় থাকার নানান কৌশল গ্রহণে বাধ্য করছে। কিংস পার্টির মাধ্যমে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলেও, ক্ষমতা দীর্ঘায়িত করার চেষ্টা দৃশ্যমান। তবে এই ধরনের পরিকল্পনার পরিণতি ভয়াবহ হতে পারে বলে বিশ্লেষকরা সতর্ক করেছেন।

পরিশেষে

বাংলাদেশের জনগণ একটি নিরপেক্ষ এবং অবাধ নির্বাচন দেখতে চায়। জনগণের প্রত্যাশা, কোনো ধরনের রাজনৈতিক ইঞ্জিনিয়ারিং বা পেছনের দরজা দিয়ে ক্ষমতা গ্রহণের পরিকল্পনা ব্যর্থ হবে। এজন্য, নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনই একমাত্র পথ। তবে তার পাশাপাশি সরকারকে জনগণের চাহিদার প্রতি সংবেদনশীল হতে হবে – বিশেষ করে শহীদ পরিবার ও আহতদের প্রতি। কেননা, বিপ্লবের আত্মত্যাগের মূল্যায়ন এবং আহতদের সুরক্ষা নিশ্চিত না হলে কোনো সংস্কারই দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে না।

(এখানে দেয়া মতামত লেখকের নিজস্ব যা গ্রীনওয়াচ ঢাকার মতামত প্রতিফলিত করেছে বলে ধরে নেয়া ঠিক হবেনা।)