News update
  • Climate Change Drives Deadly Floods, Storms, and Water Crises     |     
  • UN Advances Peace, Development Amid Global Challenges     |     
  • S Arabia, Pak ink defence pact after Israeli strike on Qatar     |     
  • No new committee forming, focus on polls candidates: Tarique     |     
  • Dhaka-Beijing partnership to advance peace, prosperity: Yunus     |     

মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর রোহিঙ্গাদের অপসারণের পরিকল্পনার প্রমাণ পাওয়া গেছে

গ্রীণওয়াচ ডেস্ক মানবাধিকার 2022-08-07, 8:15am




২০১৭ সালের মাঝামাঝি মিয়ানমারের প্রত্যন্ত এক এলাকায়, বার্মার ঊর্ধ্বতন সামরিক কমান্ডাররা, সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলিম জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনার বিষয়ে গোপন আলোচনায় বসেন। রোহিঙ্গা গ্রামগুলোতে গোয়েন্দা অনুপ্রবেশ করানোর পন্থা নিয়ে তারা আলোচনা করেন। মুসলিমদের ঘরবাড়ি ও মসজিদ ভেঙে ফেলতে একমত হন তারা। এছাড়াও তারা এমন পরিকল্পনা করেন যেটিকে তারা বস্তুনিষ্ঠভাবে “এলাকা পরিচ্ছন্নকরণ” হিসেবে আখ্যায়িত করেন।

এই আলোচনাগুলো দাপ্তরিক রেকর্ডে লিপিবদ্ধ করা হয়, যেই রেকর্ড রয়টার্স প্রত্যক্ষ করেছে। একটি বৈঠকে রোহিঙ্গাদের সম্বোধন করতে কমান্ডাররা বারবার বর্ণবাদী শব্দ ব্যবহার করেন। তারা ইঙ্গিত করেন যে, রোহিঙ্গারা বিদেশী অনুপ্রবেশকারী। একজন বলেন, “বাঙ্গালীরা অত্যন্ত দুঃসাহসী” হয়ে উঠেছে। অপর এক বৈঠকে এক কর্মকর্তা বলেন, রোহিঙ্গারা সংখ্যায় অত্যন্ত বেড়ে গিয়েছে।

কমান্ডাররা ভালভাবে যোগাযোগ সমন্বয় করতে রাজি হন, যাতে করে সেনাবাহিনী “সংকটের সময়ে তাৎক্ষণিকভাবে” সেখানে যেতে পারে। তারা বলেন যে, এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ যে অভিযানগুলো “নজরে না পড়ে”, যাতে করে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ে সামরিক বাহিনীর ভাবমূর্তি রক্ষা করা যায়।

কয়েক সপ্তাহ পর, সামরিক বাহিনী নির্মমভাবে দমনপীড়ন আরম্ভ করে। এর ফলে ৭,০০,০০০ এরও বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে যায়। তখন থেকেই, সামরিক বাহিনী জোর দাবি করে আসছে যে, ঐ অভিযান মুসলিম জঙ্গিদের আক্রমণের বিরুদ্ধে এক বৈধ সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান ছিল এবং তা কোন পরিকল্পিত জাতিগোষ্ঠীগত নির্মূলকরণ কর্মসূচি ছিল না। সে সময়ে দেশটির বেসামরিক নেতা, নোবেল বিজয়ী অং সান সু চি, সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে বেশিরভাগ সমালোচনাকেই উড়িয়ে দেন এই বলে যে, শরণার্থীরা হয়তবা নির্যাতন অতিরঞ্জিত করে বলছে এবং “অপ্রমাণিত বক্তব্যের” উপর ভিত্তি করে নিরাপত্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে নিন্দা জানানো হচ্ছে।

তবে, রোহিঙ্গাদের বিতাড়িত করার পূর্বের এবং ২০১৭ সালে রোহিঙ্গাদের বিতাড়িত করার ঘটনার মত সময়কার দাপ্তরিক রেকর্ডগুলো ভিন্ন এক চিত্র তুলে ধরে।

ঐ রেকর্ডগুলো বিপুল সংখ্যক নথির একটি অংশ। ঐ নথিগুলো যুদ্ধাপরাধ তদন্তকারীরা সংগ্রহ করেন এবং রয়টার্স সেগুলো পর্যালোচনা করে দেখেছে। রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর অপসারণকে ঘিরে আলোচনা ও পরিকল্পনা এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় থেকে সামরিক অভিযানগুলো লুকানোর চেষ্টা প্রকাশিত হয়েছে ঐ নথিগুলোতে। নথিগুলো থেকে দেখা যায় যে, কিভাবে সামরিক বাহিনী নিয়মতান্ত্রিকভাবে মুসলিম সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে চক্রান্ত করে, আধাসামরিক বাহিনী তৈরি করে যারা শেষ পর্যন্ত রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে অভিযানে অংশগ্রহণ করে, এবং নিজেদের কর্মকাণ্ডগুলোকে চরমপন্থী জাতীয়তাবাদী বৌদ্ধ ভিক্ষুদের সাথে সমন্বয় করে।

বিগত চার বছর ধরে প্রমাণ সংকলন করতে যুদ্ধাপরাধের তদন্তকারীরা গোপনে কাজ করে যাচ্ছিলেন। তারা আশা করেন যে, এই প্রমাণগুলো আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে দায়ীদেরকে দোষী সাব্যস্ত করতে ব্যবহার করা যাবে। ২০১৩ থেকে ২০১৮ সালের সময়কালের এই নথিগুলো, রোহিঙ্গাদের নিপীড়ন ও অপসারণের ঘটনায় বার্মার কর্তৃপক্ষের দৃষ্টিকোণ থেকে এক নজিরবিহীন দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরেছে। বিশেষ করে ২০১৬ ও ২০১৭ সালের দুইটি “পরিচ্ছন্নকরণ অভিযান” এর বিষয়ে, যেই দুই ঘটনায় প্রায় ৮,০০,০০০ মানুষকে বিতাড়িত করা হয়। তথ্য সূত্র ভয়েস অফ আমেরিকা বাংলা।