জাতিসংঘের নতুন এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালে আফগানিস্তানকে টপকে বিশ্বের শীর্ষ আফিম উৎপাদনকারী দেশে পরিণত হয়েছে মিয়ানমার। গৃহযুদ্ধের কারণে টানা তৃতীয় বছর আফিম চাষ সম্প্রসারণের পরই তারা এই অবস্থানে আসে।
বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় আফিম সরবরাহকারী দেশ হিসেবে দুই দশকেরও বেশি সময় এই অবস্থান ধরে রেখেছিল আফগানিস্তান। ক্ষমতাসীন তালিবান সরকার পপি চাষের উপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার কারণে আফগানিস্তানের আবাদি জমি ২০২২ সালে ২৩৩,০০০ হেক্টর থেকে কমে এ বছর ১১,০০০ এর নিচে নেমে আসে।
একই সময়ে, ২০২১ সালে একটি সামরিক অভ্যুত্থানের পরে গৃহযুদ্ধের মুখে পড়া মিয়ানমারের আরও বেশি সংখ্যক কৃষক আফিম চাষের দিকে ঝুঁকে পড়েছেন।
মঙ্গলবার প্রকাশিত জাতিসংঘের দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া আফিম জরিপ ২০২৩-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৩ সালে মিয়ানমারে আফিম চাষের পরিমাণ আগের বছরের ৩৩ শতাংশ থেকে আরও ১৮ শতাংশ বেড়ে মোট জমির পরিমাণ ৪৭ হাজার হেক্টরে দাঁড়িয়েছে।
অর্থাৎ ২০১৩ সালের পর থেকে মিয়ানমার সবচেয়ে বেশি জমিতে আফিম চাষ করেছে। ২০০২ সালের পর তারা এই প্রথমবার আফগানিস্তানকে ছাড়িয়ে গেছে।
জাতিসংঘের মাদক ও অপরাধ দপ্তরের আঞ্চলিক প্রতিনিধি জেরেমি ডগলাস ভয়েস অব আমেরিকাকে বলেন, মিয়ানমারে অস্থিতিশীলতা এবং নিরাপত্তাহীনতা গত কয়েক বছরে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে অর্থনৈতিক অস্থিরতা সৃষ্টি করেছে,। যার ফলে মানুষ অর্থ উপার্জনের জন্য অন্য উপায়ের দিকে ঝুঁকছে। অর্থনীতি তুলনামূলক ভাল থাকা অবস্থায় তাদের বিকল্প ছিল । কিন্তু এখন সেটা না থাকায় তারা আফিম উৎপাদনে ফিরছে। অন্য কোন উপায় না থাকায় তাদের কাছে এটাই উপার্জনের রাস্তা।“
আফিমকে আরও আকর্ষণীয় করে তুলতে মাদক চোরাকারবারি ও মধ্যস্বত্বভোগীরা গত বছরের তুলনায় এ বছর বেশি দাম দিয়েছে।তারা কৃষকদের সার ও সেচ ব্যবস্থায় বিনিয়োগ অব্যাহত রেখেছে।
ইউএনওডিসি-র হিসাব অনুযায়ী, মিয়ানমারের কৃষকরা এ বছর ১,০৮০ মেট্রিক টন শুকনো আফিম উৎপাদনের জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে পপি চাষ করেছে। যার অর্থমূল্য ২,৫০০ কোটি ডলার। আফিমের বেশিরভাগই হেরোইন হিসাবে পাচারকারীদের মাধ্যমে এশিয়া জুড়ে এবং অস্ট্রেলিয়া পর্যন্ত যায়। এর বেশিরভাগই যায় থাইল্যান্ড হয়ে।
গত সেপ্টেম্বরে থাই পুলিশ ৪৪০টি হেরোইন বার এবং প্রায় দেড় কোটি মেথঅ্যামফেটামিন ট্যাবলেট জব্দ করে। থাইল্যান্ডের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ বোর্ডের আইন প্রয়োগকারী বিভাগের পরিচালক প্রিন মেকানন্দা ভয়েস অফ আমেরিকাকে জানান, দেশটির ইতিহাসে সবচেয়ে বড় চালান এটি, যার বাজার মূল্য ৮২ লক্ষ ডলার। ভয়েস অফ আমেরিকা