News update
  • Bangladesh bounce back to level series as Tanvir bags five     |     
  • UN Chief Condemns Russian Attacks, Warns of Nuclear Risks     |     
  • Dhaka Urges Clear Outcome from Upcoming Rohingya Talks     |     
  • Khulna falls short of jute output target for lack of incentives     |     
  • UNRWA Report on the Humanitarian Crisis in Gaza & West Bank     |     

পশ্চিমবঙ্গের ২৬ হাজার শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীর চাকরি এখনই বাতিল নয়: সুপ্রিম কোর্ট

গ্রীণওয়াচ ডেস্ক মিডিয়া 2024-05-08, 9:22am

udufiyyauy-c0f383c6c5f351c4aa3ff0747f0bb6a81715138534.jpg




কলকাতা হাইকোর্টের যে রায়ে পশ্চিমবঙ্গের প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী চাকরি হারা হতে চলেছিলেন, সেই রায়ের ওপরে অন্তর্বর্তীকালীন স্থগিতাদেশ দিয়েছে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট।

এই স্থগিতাদেশ পরবর্তী শুনানির দিন অর্থাৎ ১৬ই জুলাই পর্যন্ত বহাল থাকবে।

যে শিক্ষকরা বেআইনিভাবে চাকরি পেয়েছিলেন, তাদের পুরো চাকরির সময়কালের বেতন ১২ শতাংশ সুদসহ ফেরত দেওয়ার রায়ও দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট।

মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্ট বেআইনিভাবে চাকরি পাওয়া শিক্ষকদের বেতন এখনই ফেরত না দিতে বললেও, ‌এদিনের রায়ে শীর্ষ আদালত বলেছে ভবিষ্যতে যদি এটা প্রমাণিত হয় যে কেউ অযোগ্য হওয়া সত্ত্বেও চাকরি পেয়েছেন, তাকে তখন বেতন ফেরত দিতে হবে।

কেন্দ্রীয় তদন্ত ব্যুরো সিবিআই গোটা দুর্নীতির যে তদন্ত করছিল সেটি তিন মাসের মধ্যে শেষ করতে হবে এমন নির্দেশও দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।

চাকরি হারা শিক্ষকদের কয়েকজন চাকরি ফেরত পাওয়ার দাবিতে কলকাতার শহীদ মিনারে অনশন করছিলেন গত ছয় দিন ধরে। এদিন সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পরে সন্ধ্যায় তারা অনশন ভেঙেছেন।

কলকাতা হাইকোর্টের রায়ে যারা চাকরি হারিয়েছিলেন, সেই শিক্ষক-শিক্ষিকারা সবাই ২০১৬ সালে চাকরি প্রক্রিয়ায় অংশ নিয়েছিলেন।

এই চাকরি দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত হয়ে এখন জেলে আছেন পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চ্যাটার্জীসহ রাজ্যের এক সময়কার শীর্ষ শিক্ষা কর্মকর্তারা।

কী বলেছে সুপ্রিম কোর্ট?

প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক-শিক্ষিকার নিয়োগ বাতিলের যে নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট, তার বিরুদ্ধে দায়ের করা একাধিক পক্ষের পিটিশনগুলো নিয়ে মঙ্গলবার সারাদিন শুনানি চলে ভারতের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বেঞ্চে।

বিকেলে বিচারপতিরা জানান যে এদিনই একটা ‘শর্ট অর্ডার’ অর্থাৎ অন্তর্বর্তীকালীন নির্দেশ ঘোষণা করা হবে।

দিনভর শুনানিতে এবং শেষমেশ আদালতের নির্দেশেও বারে বারে উঠে আসে যোগ্যতা না থাকা সত্ত্বেও বেআইনিভাবে যারা চাকরি পেয়েছিলেন, তাদের কীভাবে চিহ্নিত করা যায়।

প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় বলেন যে এক্ষেত্রে মূল বিষয় হলো, নিয়োগের তালিকা থেকে কি যোগ্য ও অযোগ্য আলাদা করে বাছাই করা সম্ভব? যদি সেটা সম্ভব হয় তাহলে পুরো নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল করে দেওয়া ভুল হবে।

প্রধান বিচারপতি আরও বলেন, আদালতকে আরও মাথায় রাখতে হবে যে নবম-দশম শ্রেণির এত বিপুল সংখ্যক শিক্ষকের নিয়োগ বাতিল করলে পঠনপাঠনও ব্যহত হবে। তাই যোগ্য ও অযোগ্য বাছাই করা সম্ভব ধরে নিয়ে এই আদালতের সামনে এখন দায়িত্ব হলো, তার মাপকাঠি স্থির করা।

কতজন বেআইনি পথে চাকরি পেয়েছেন?

এর আগে, স্কুল শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া চালায় যে স্কুল সার্ভিস কমিশন বা এসএসসি, তারা নিশ্চিতভাবে এরকম কোনও সংখ্যা জানাতে পারেনি। কিন্তু এদিনের শুনানিতে তারা বেআইনিভাবে চাকরি পেয়েছেন, এরকম ব্যক্তিদের একটা সংখ্যা জানায়।

তারা ৮ হাজার ৩২৪ জন অযোগ্যকে চিহ্নিত করতে পারার কথা জানিয়েছে যারা অযোগ্য হওয়া সত্ত্বেও চাকরি পেয়েছিলেন।

অর্থাৎ বাকিরা যোগ্যতা অনুযায়ীই চাকরি পেয়েছিলেন বলে এদিন পর্যন্ত ধরে নেওয়া যেতে পারে, যদিও পূর্ণাঙ্গ তদন্তের শেষে এটা বোঝা যাবে যে কারা বেআইনিভাবে চাকরি পেয়েছিলেন।

পুরো মন্ত্রিসভার বিরুদ্ধে তদন্ত

হাইকোর্টের রায়ে বলা হয়েছিল সরকারের যেসব কর্মকর্তারা প্যানেলের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পরেও বাড়তি পদ তৈরি করে চাকরি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, তাদের বিরুদ্ধে সিবিআই তদন্ত করবে, প্রয়োজনে হেফাজতে নিয়েও তদন্ত করতে পারবে।

ওই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল রাজ্য মন্ত্রিসভায়। এই নির্দেশ বহাল থাকলে গোটা মন্ত্রিসভার বিরুদ্ধেই তদন্ত ও প্রয়োজনে গ্রেফতার হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা ছিল।

মঙ্গলবার সিবিআইকে ওই তদন্ত চালিয়ে যেতে বললেও এখনই গ্রেফতারের মতো কড়া পদক্ষেপ নেওয়া যাবে না বলেও নির্দেশ দিয়েছে শীর্ষ আদালত।

হাইকোর্টের রায়ের পরে এক অঙ্কের শিক্ষিকা বলেছিলেন যোগ্য হওয়া স্বত্ত্বেও চাকরি বাতিল হওয়ার পরে কোন মুখে তিনি ছাত্রছাত্রীদের সামনে দাঁড়াবেন

কারা চাকরি হারিয়েছিলেন?

পশ্চিমবঙ্গে ২০১৬ সালে যে শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী নিয়োগের পরীক্ষা হয়েছিল, সেই নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ ওঠার পর দীর্ঘদিন ধরে মামলা চলে এবং ২২শে এপ্রিল কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ এক ধাক্কায় পুরো নিয়োগই বাতিল করে দেয়। ওই রায়ের কারণে হঠাৎ করেই চাকরি হারিয়ে পথে বসেছিলেন ২৫ হাজার ৭৫৩ জন।

এদের মধ্যে নবম-দশম, একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষক-শিক্ষিকারা যেমন আছেন, তেমনই আছেন শিক্ষাকর্মীরা।

এদের দাবি ছিল, যে যোগ্য প্রার্থীদের কোন দোষে চাকরি যাবে? এদের একটা বড় অংশ সুপ্রিম কোর্টে পিটিশন দাখিল করেছিলেন, আবার রাজ্য সরকার এবং স্কুল সার্ভিস কমিশনও হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে শীর্ষ আদালতে পিটিশন দাখিল করেছিল।

ওই দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত হয়েই পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী ও তৃণমূল কংগ্রেসের তৎকালীন মহাসচিব পার্থ চ্যাটার্জীসহ স্কুল শিক্ষা ব্যবস্থার শীর্ষ কর্মকর্তারা এখন জেলে আছেন। ওই ঘটনার তদন্তে নেমে পার্থ চ্যাটার্জীর এক বান্ধবী – অভিনেত্রী অর্পিতা মুখার্জীর ফ্ল্যাট থেকে প্রায় ৫০ কোটি ভারতীয় রুপি নগদ এবং কয়েক কোটি টাকা মূল্যের গয়না উদ্ধার করেছিল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। বিবিসি বাংলা