News update
  • Guterres Urges Leaders to Act as UNGA Week Begins     |     
  • BNP to go door to door for hearts and votes     |     
  • Chittagong port tariffs increased up to 50 per cent     |     
  • Rising Heat Cost Bangladesh $1.8 Billion in 2024     |     
  • Stocks extend gains; turnover drops in Dhaka, rises in Ctg     |     

আমি চিন্তিত, তবে আশাহীন নই: বাংলাদেশ পরিস্থিতি নিয়ে অমর্ত্য সেন

গ্রীণওয়াচ ডেস্ক মিডিয়া 2025-03-03, 6:48am

cd83284b4233f6c7357b1b5cb6d2849551df4f6b351cf966-a7e9560b0df2d90c0314f05c7db8eaa01740962921.jpg




বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে নোবেল বিজয়ী ভারতীয় অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন বলেছেন, তার বন্ধু, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ নিচ্ছেন। তবে এই অচলাবস্থা সমাধানের জন্য এখনও দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে হবে।

সম্প্রতি শান্তিনিকেতনে নিজের বাড়িতে বার্তা সংস্থা পিটিআইকে এক সাক্ষাৎকার দেন অমর্ত্য সেন। সেখানে বাংলাদেশ, বাংলাদেশের রাজনীতি, প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনসূ, আওয়ামী লীগ ও বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীকে নিয়ে কথা বলেন তিনি।

অমর্ত্য সেন জানান, বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি তাকে গভীরভাবে প্রভাবিত করেছে এবং বাংলাদেশ কীভাবে ভবিষ্যৎ চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করবে সে ব্যাপারে তিনি চিন্তিত।

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের পরিস্থিতি আমাকে গভীরভাবে প্রভাবিত করেছে। কারণ আমার মধ্যে শক্তিশালী বাঙালী পরিচয় রয়েছে।’

অমর্ত্য তার ছোটবেলার বেশিরভাগ সময় ঢাকায় কাটিয়েছেন। তিনি ঢাকার সেন্ট গ্রেগরি স্কুলে আনুষ্ঠানিক পড়াশোনা শুরু করেন। পরবর্তীতে কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শান্তিনিকেতন স্কুলে চলে যান এবং সেখানেই পড়াশোনা করেন।

তিনি আরও বলেন, ‘আমি ঢাকায় দীর্ঘ সময় কাটিয়েছি এবং সেখানেই আমার শিক্ষাজীবন শুরু করেছিলাম। ঢাকা ছাড়াও আমি আমার পূর্বপুরুষের ভিটা মানিকগঞ্জে প্রায়ই যেতাম। অপরদিকে মায়ের দিক দিয়ে আমি বিক্রমপুর গিয়েছি। বিশেষ করে সোনারঙে। এই জায়গাগুলো ব্যক্তিগতভাবে আমার কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অন্যদের মতো আমিও চিন্তিত কীভাবে বাংলাদেশ তার ভবিষ্যৎ চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করবে।’

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে নিয়ে এক মূল্যায়নে তিনি বলেন, ‘ইউনূস (আমার) পুরনো বন্ধু। আমি জানি তিনি অনেক বেশি সক্ষম এবং অনেক দিক দিয়ে একজন অসাধারণ মানুষ। তিনি বাংলাদেশের ধর্মনিরপেক্ষতা ও গণতন্ত্র নিয়ে শক্তিশালী কিছু বার্তা দিয়েছেন।’

হঠাৎ কেউ রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা গ্রহণ করলে তার সামনে কিছু চ্যালেঞ্জ তৈরি হয় এমনটি উল্লেখ করে অমর্ত্য বলেন ড. ইউনূসও এমন পরিস্থিতিতে পড়েছেন। কিন্তু তিনি সেগুলো উতরে যেতে পারবেন। সেনের কথায়, ‘যদি আপনি হঠাৎ করে কোনো দেশের প্রধান হন, যেমনটা ইউনূস হয়েছেন, আপনাকে বেশ কিছু বিষয় বিবেচনায় রাখতে হবে। ইসলামিক দল রয়েছে, এখন হিন্দু দলও আছে। আমার ড. ইউনূসের সক্ষমতার ব্যাপারে আমার পূর্ণ আস্থা আছে।’

গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্রজনতার গণঅভ্যুত্থানে ভারতে পালিয়ে যান সাবেক স্বৈরাচার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওইদিনই আওয়ামী লীগের ১৬ বছরের দুঃশাসনের অবসান ঘটে। সাধারণ মানুষকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় আ.লীগের রাজনীতি নিষিদ্ধ চান দেশের সাধারণ মানুষ। কিন্তু অমর্ত্য সেন চান না এ দলটিকে নিষিদ্ধ করা হোক।

তিনি বলেন, ‘একসঙ্গে কাজ করার যে একটি ধারা বাংলাদেশে আছে। আমি চাই এটির ব্যবহার অব্যাহত থাকুক এবং নির্দিষ্ট কোনো দলকে ঠেলে না দেওয়া হয়। আমি আশা করি বাঙালি স্বাধীনতা এবং বহুত্ববাদ থাকবে। আমি আশা করি ভবিষ্যৎ নির্বাচন নিরপেক্ষ হবে আগেরগুলো থেকে, যেগুলো তারা দাবি করেছিল নিরপেক্ষ ছিল। এখানে পরিবর্তনের সুযোগ আছে। আমি বাংলাদেশ নিয়ে চিন্তিত। কিন্তু আমি আশাহীন নই।’

ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল জামায়াতকে পূর্বে নজরদারিতে রাখা হয়েছিল উল্লেখ করে সেন জানিয়েছেন, বাংলাদেশে যেন ধর্মনিরপেক্ষতা বজায় থাকে সেটি চাওয়া থাকবে তার।

স্বাধীনতার পর থেকে বাংলাদেশের অগ্রগতি সম্পর্কে বলতে গিয়ে সেন মাথাপিছু আয়ের ক্ষেত্রে উন্নতির কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘এক পর্যায়ে বাংলাদেশ মাথাপিছু আয়ে ভারতকে ছাড়িয়ে যায়, পাশাপাশি জন্মহার হ্রাস এবং ভারতের তুলনায় আয়ুষ্কালও বৃদ্ধি পায়।

তার কথায়, ‘বাংলাদেশ বড় ধরনের অর্থনৈতিক ও সামাজিক রূপান্তরের মধ্য দিয়ে গেছে, বিশেষ করে নারী অধিকারের অগ্রগতিতে, ব্র্যাক ও গ্রামীণ ব্যাংকের মতো সরকারি এবং বেসরকারি সংস্থাগুলোর অবদানের মাধ্যমে।’

বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নতি ছাড়াও সেনাবাহিনী নিয়েও কথা বলেন এই নোবেলজয়ী। দেশে সেনাশাসন জারির চেষ্টা না চালানোয় সেনাবাহিনীর প্রশংসা করেন তিনি। কারণ পৃথিবীর অন্যান্য দেশে সেনাবাহিনী সাধারণত ক্ষমতা দখলের চেষ্টা করে।

এছাড়া বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর কথিত নির্যাতন নিয়েও কথা বলেছেন অমর্ত্য সেন। বাস্তবে এমন কোনো ঘটনা ঘটলেও বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের প্রোপাগান্ডা ছড়িয়েছে ভারতের সংবাদমাধ্যমগুলো। তিনি বলেন, ‘সংখ্যালঘু একটি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু। কারণ বাংলাদেশ সংখ্যালঘুদের ওপর সুবিচার করা নিয়ে গর্ববোধ করে এবং জামায়াতের মতো দলগুলোকে নজরদারিতে রাখে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে ভারতেও মসজিদে হামলা হয়। এসব ঘটনা, হোক সেটি বাংলাদেশ অথবা ভারত, বন্ধ হতে হবে।’