২০২২-২০২৩ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে দেশের অন্যতম প্রধান বিরোধী দল বিএনপি। প্রস্তাবিত বাজেটকে ‘বাস্তবতা বর্জিত’ বলে অভিহিত করেছে দলটি।
শনিবার (১১ জুন) বিকেলে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে বাজেট প্রতিক্রিয়া জানান মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে বিএনপির প্রতিক্রিয়া জানাতে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
ফখরুল বলেন, এই বাজেট কেবল সরকারের আশীর্বাদপুষ্টদের জন্য করা হয়েছে। এটা কোনো অর্থেই সাধারণ মানুষের বাজেট নয়। এটা ডলার পাচারকারী ও অর্থ লুটেরাদের বাজেট।
তিনি বলেন, আরও পরিষ্কার অর্থে বললে সরকারের লুটেরা মন্ত্রী, সংসদ সদস্য ও সুবিধাভোগী ব্যবসায়ী স্বজনদের অর্থ পাচার কবার সুযোগ করে দিতেই এটা করা হয়েছে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, পাচারকারীরদের অর্থকে নিরাপদে দেশে ফিরিয়ে আনা কিংবা বিদেশে ভোজ করার বৈধ্যতা দিতেই এবারের বাজেট প্রণয়ন করা হয়েছে। এজন্য সাধারণ মানুষের নিত্য প্রয়োজনীয় চাল, ডাল, লবণ, চিনি, গ্যাস, বিদ্যুত ও পানির মূল্য হ্রাসের কোনও কার্যকরী কৌশল না করে শুধুমাত্র নিজেদের সম্পদ বৃদ্ধির লক্ষ্যে এই বাজেট করা হয়েছে।
প্রস্তাবিত বাজেটে মুদ্রা পাচারকারীদের কর পরিশোধের মাধ্যমে পাচার করা টাকা ফেরত আনার যে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে তা বাতিল চায় বিএনপি।
এ বিষয়ে ফখরুল বলেন, এই প্রস্তাব কেবল অনৈতিক নয়, এটা রীতিমতো আইনের সাথে সাংঘর্ষিক এবং দুর্নীতি ও অর্থ পাচারকে ক্ষমা ঘোষণার সামিল। এতে বর্তমানে চলমান অর্থ পাচারের মামলাগুলোর ভবিষ্যত অনিশ্চিত হয়ে পড়বে। অর্থ পাচারকারীরা আরও উৎসাহিত হবে।
তিনি আরও বলেন, আমরা মনে করি, এটা দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরকারের তথাকথিত জিরো টলারেন্স নীতির সাথে সাংঘর্ষিক এবং অসাংবিধানিক। গত ১৪ বছরে সরকারের ঘনিষ্ট লোকজনই বিপুল পরিমাণ অর্থ বিদেশে পাচার করে নিয়েছে। এখন এই ঘোষণার মাধ্যমে সরকার ওইসব পাচারকারীদের অবৈধ অর্থ বৈধ করার ঢালাও সুযোগ দিল।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটে সব কিছু গতানুগতিক। করোনাকালে
স্বাস্থ্য খাতে যেসব দুর্বলতাগুলো প্রকাশ পেয়েছে সেগুলো পূরণের জন্য প্রস্তাবিত বাজেটে কোনো ধরনের পদক্ষেপ নেই।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, এই মুহূর্তে বাংলাদেশে মুক্তবাজার অর্থনীতি কাজ করছে না। এখন কাজ করছে আওয়ামী ইকোনমিক মডেল।এই মডেল হলো- তাদের উপকার করার জন্য, তাদের দুর্নীতির জন্য, তাদের পকেটে টাকা নেওয়ার জন্য, তারা রাষ্ট্রের প্যাট্রোনাইজেশনের ব্যবসা করার জন্য। সেই মডেলের ভিত্তিতে প্রস্তাবিত বাজেট তৈরি করা হয়েছে। তথ্য সূত্র আরটিভি নিউজ।