News update
  • UNRWA Situation Report on Crisis in Gaza & Occupied West Bank     |     
  • Intimidation or bloodshed cannot halt Bangladesh’s march to democracy     |     
  • Khaleda Zia integral to an important chapter in BD history: Yunus     |     
  • Enthusiasm marks Victory Day celebrations across Bangladesh     |     
  • Dhaka-Delhi ties deep; to be shaped by trust, dignity, mutual respect     |     

কেমন কাটল খালেদা জিয়ার ঈদ?

গ্রীণওয়াচ ডেস্ক রাজনীতি 2024-04-12, 7:31am

khaleda-jia01-32fe54ad4ba071d606962e53745171e71712885514.jpg




বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া গুলশানের বাসা ফিরোজায় ঈদ উদযাপন করেছেন। আজ বৃহস্পতিবার (১১ মার্চ) সকালে ছোট ভাই শামীম এস্কান্দারসহ কয়েকজন কাছের আত্মীয়-স্বজনদের নিয়ে ঈদের সময় কাটান।

বিএনপি চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইংয়ের সদস্য শামসুদ্দিন দিদার জানান, সকাল থেকেই ম্যাডামের আত্মীয়-স্বজনরা দেখা-সাক্ষাৎ করতে আসেন। বিকেলে লন্ডন থেকে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও বিএনপি চেয়ারপারসনের ছেলে তারেক রহমান এবং তাঁর সহধর্মিণী ডা. জোবায়দা রহমান ভার্চ্যুয়ালি তাঁর সঙ্গে কথা বলেন। রাতে দলের সিনিয়র নেতারা ঈদের সালাম জানাতে আসেন।

বিগত কয়েক বছর তিনি ঈদে বাসার বাইরে বের হতে পারছেন না। এমনকি পরিবারের সদস্যদের নিয়েও ঈদ উদযাপন করার সুযোগ পাচ্ছেন না। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সর্বশেষ ঈদের আনন্দ উদযাপন করেছিলেন ২০০৬ সালে। তাও দেড় যুগ আগে। তখন তিনি ক্ষমতার মসনদে। পরের বছর আসে ওয়ান-ইলেভেন ঝড়। এলোমেলো হয়ে যায় রাজনৈতিক পরিস্থিতি। তছনছ হয়ে যায় গোটা জিয়া পরিবার। গ্রেপ্তার করা হয় তিনবারের সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীকে। কাছাকাছি সময়ে গ্রেপ্তার করা হয় দুই ছেলে বিএনপির বর্তমান ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও আরাফাত রহমান কোকোকে।

বিএনপি নেত্রীকে রাখা হয় জাতীয় সংসদ ভবন এলাকার সাবজেলে। কারাগারে থাকা অবস্থায় তিনি হারান মা তৈয়বা মজুমদারকে। কারাগারেই কাটে তার দুটি ঈদ। দীর্ঘ এক বছর পর ২০০৭ সালের ১১ সেপ্টেম্বর জামিনে মুক্তি পান বাংলাদেশের প্রথম এই নারী প্রধানমন্ত্রী। আর ৩ সেপ্টেম্বর জামিনে মুক্তি পান বড় ছেলে তারেক রহমান। এর কিছুদিন পর মুক্তি দেওয়া হয় তার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোকে। গ্রেপ্তারের পর দফায় দফায় রিমান্ডে নির্যাতনের কারণে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ায় দুজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয় বিদেশে। জ্যেষ্ঠ সন্তান তারেক রহমান চিকিৎসা নেন লন্ডনে। ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকো চিকিৎসা নেন মালয়েশিয়ায়। পরবর্তীতে ক্ষমতাসীন সরকার তাদের দুজনের বিরুদ্ধে দায়ের করে একের পর এক মামলা। জারি করা হয় পরোয়ানা। এরপর আর দেশে ফিরতে পারেননি তারা। তবে ২০১৫ সালে মালয়েশিয়ায় অসুস্থ হয়ে মারা গেলে ছোট ছেলে কোকোর লাশ দেশে এনে দাফন করা হয়।

এদিকে কারাগার থেকে মুক্তির পর খালেদা জিয়ার সেনানিবাসের বাসভবনে কাটে চারটি ঈদ। ২০১০ সালে আদালতে রায়ের পর ২০১১ সালের ১৩ নভেম্বর সেনানিবাসের বাড়ি হারালে ওঠেন গুলশান-২ এ ছোট ভাই শামীম ইস্কান্দারের বাসায়। কিছুদিন পর সেখান থেকে ওঠেন ৭৯ নম্বর রোডের ভাড়া বাড়ি ফিরোজায়। এরপর থেকে ওই বাড়িতেই কাটছে সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর পরিবারবিহীন নিঃসঙ্গ জীবন। এদিকে পরিবারের সদস্যরা কাছে না থাকলেও ২০১০ সাল থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত প্রতিবছরই রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করতেন বিএনপি চেয়ারপারসন। কিছুটা হলেও ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করার সুযোগ পেতেন। ২০১৮ সালে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানোর পর সেই সুযোগটিও হারিয়ে ফেলেন তিনি। কারাগার থেকে শর্তযুক্ত মুক্তি দিয়ে ২০২০ সালের ২৫ মার্চ বাসায় থাকার অনুমতি দেওয়া হলেও নানা রোগে কাবু হয়ে পড়েন। পরিবারের সদস্যদের সান্নিধ্য ছাড়া তার এবারের ঈদও কাটে গুলশানের বাসায়। যদিও রাতে দলের মহাসচিবসহ স্থায়ী কমিটির সদস্যদের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।

বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান এনটিভি অনলাইনকে আরও জানান, ২০০৬ সালের পর দেশের মাটিতে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ঈদ উদযাপন করতে পারেননি ম্যাডাম। মাঝখানে চোখের চিকিৎসার জন্য ২০১৫ ও ২০১৭ সালে দুদফা লন্ডনে গিয়েছিলেন তিনি। তখন পরিবারের সদস্যদের সান্নিধ্যে দুটি ঈদ উদযাপন করেছেন।

সর্বশেষ ২০১৭ সালের ২৬ জুন বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেছিলেন তিনি। ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি কারাগারে যাওয়ার পর বিএনপির চেয়ারপারসনের চারটি ঈদ কেটেছে চার দেওয়ালে বন্দি অবস্থায়। এরমধ্যে একটি ঈদ বিএসএমএমইউ হাসপাতালে, একটি ঈদ এভার কেয়ার হাসপাতালে। আর বাকি ৬টি ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহা বাসায় পালন করেছেন। এখন তিনি অসুস্থ অবস্থায় শর্তসাপেক্ষে সরকারের নির্বাহী আদেশে বাসায় থাকছেন। বড় ছেলে, দুই পুত্রবধূ ও তিন নাতনি লন্ডনে থাকলেও ভিডিও কনফারেন্সে তাদের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।

প্রায় ৮০ বছর বয়সী সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী লিভার সিরোসিস, আর্থাইটিস, রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, কিডনি, হৃদযন্ত্রে জটিলতা, ফুসফুস, চোখ ও দাঁতের সমস্যাসহ বার্ধক্যজনিত নানা রোগে আক্রান্ত। এছাড়া তার মেরুদণ্ড, ঘাড়, হাত ও হাঁটুতে বাতের সমস্যাসহ আরও কিছু শারীরিক জটিলতা রয়েছে। ২০২১ সালের এপ্রিলে কোভিডে আক্রান্ত হওয়ার পর থেকে কয়েকবার নানা অসুস্থতার কারণে তাঁকে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে হয়েছে। ২০২২ সালের জুনে বুকে ব্যথা অনুভব করলে খালেদা জিয়াকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। এরপর এনজিওগ্রাম করা হলে তার হৃদযন্ত্রে তিনটি ব্লক ধরা পড়ে। এর একটিতে রিং পরানো হয়। গত বছরের ৯ আগস্ট শারীরিক অসুস্থতার কারণে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হয়ে সাড়ে ৫ মাস চিকিৎসা নেন তিনি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে তিনজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক এনে তার যকৃতের ধমনীতে অস্ত্রোপচার করানো হয়। এরপর শারীরিক অবস্থা কিছুটা স্থিতিশীল হলে তাকে বাসায় আনা হয়। রমজানে ফের তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে দুদফা হাসপাতালে চিকিৎসা নেন তিনি। এনটিভি নিউজ।