News update
  • Bumper harvest of Jujube in Ramu Upazila     |     
  • Govt urged to offer scholarships to Palestinian students     |     
  • Caretaker Govt Review Hearing on Supreme Court Cause List     |     
  • Bangladesh Single Window to Launch by March: Lutfey Siddiqi     |     
  • UNRWA chief: Ceasefire is the start, not the solution     |     

পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন এবং খুনিদের নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণার দাবিসহ ৭ দফা সংস্কার প্রস্তাবনা প্রদান

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে পীর সাহেব চরমোনাই’র নেতৃত্বে ৬ সদস্যের প্রতিনিধি দলের সংলাপ

রাজনীতি 2024-10-06, 12:34am

charmonai-pir-saheb-talking-to-news-media-after-having-dialogue-with-the-chief-adviser-on-saturday-d10c93c8fdeaf4d9875a3943a1d7554e1728153285.jpg

Charmonai Pir Saheb talking to news media after having dialogue with the Chief Adviser on Saturday.



অন্তর্র্বতী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সংলাপ করেছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম পীর সাহেব চরমোনাই’র নেতৃত্বে ৬ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল।

শনিবার (৫ অক্টোবর) বিকেল ৫ টায় দিকে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনায় প্রবেশ করেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নেতৃবৃন্দ। প্রতিনিধি দলে ছিলেন দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য প্রিন্সিপাল মাওলানা সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল-মাদানী, অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, ইঞ্জিনিয়ার আশরাফুল আলম, সহকারি মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদ।

অন্তর্র্বতী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস তৃতীয়বারের মতো দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করছেন।

সংলাপে দলের আমীর পীর সাহেব চরমোনাই প্রধান উপদেষ্টাকে বলেছেন, বর্তমান অন্তর্বতী সরকার জনমতের প্রতিফলনের সরকার। আপনাদের সাথে দেশের জনগণ রয়েছে, আপনারা সবচেয়ে শক্তিশালী সরকার। কিন্তু  খুনি, অর্থ পাচারকারী, দাগী, অপরাধীরা কীভাবে দেশ থেকে পালালো? আপনারা কেন তাদেরকে দেশত্যাগের সুযোগ করে দিয়েছেন। এটা আমাদেরকে ভাবিয়ে তুলেছে। তিনি বলেন, সংষ্কার করতে যতটুকু সময় লাগে সংস্কার কাজ শেষ করে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন দেয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। স্বৈরাচারীরা যেন কোনভাবে রাজনীতিতে পুনর্বাসিত হতে না পারে সে ব্যবস্থা করে সুষ্ঠু নির্বাচন দিতে হবে।

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর পক্ষ হতে সংস্কার কমিশনের প্রতি কতিপয় লিখিত প্রস্তাবনা প্রধান উপদেষ্টার হাতে হস্তান্তর করেন।

০১। নির্বাচন সংস্কার: ক) সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব বা পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন ব্যবস্থা প্রবর্তন করা। খ) আরপিও এর সর্বশেষ সংশোধনী বাদ দিয়ে আরপিও পূর্ণ বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা। গ) ইসি নিয়োগে সাবেক বিচারপতি, আমলা ও সামরিক বাহিনীর কর্মকর্তাদের সাথে উলামায়ে কেরামকে সম্পৃক্ত করা। ঘ) সর্বদলীয় কমিটির মাধ্যমে ইসি নিযোগ দেয়া। ইসি’র কার্যক্রম জবাবদিহীতার আওতায় আনা। ঙ) জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সেনাবাহিনীকে বিচারিক ক্ষমতায় মোতায়েন রাখা। চ) দুর্গম না হলে ব্যালট পেপার সকালে পাঠানো। ছ) ব্যালটে নির্বাচন হওয়া। আপাতত ইভিএম-এ নয়। জ) সম্পদ পাচারকারী ও দূর্নীতিগ্রস্থ ব্যক্তিকে যে কোনো নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করা।

০২। পুলিশ সংস্কার: ক) পুলিশ সংক্রান্ত উপনিবেশন আমলের সকল আইন বাতিল করা এবং পুলিশের ব্রিটিশ লিগ্যাসি বাদ দেয়া। কারণ তা ছিলো নিপীড়ক ধরণের বাহিনী। খ) দেশের মানুষের বোধ-বিশ্বাস, চরিত্র বিবেচনা করে সেবা জনসহায়ক বাহিনী হিসেবে গড়ে তোলা। গ) অজ্ঞাত সংখ্যায় আসামী দিয়ে মামলা করার প্রবনতা বন্ধ করতে হবে। ঘ) রাত্রিকালীন টহল পুলিশের সক্ষমতা বৃদ্ধি করা এবং টহলে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করা। বিশেষ করে ঢাকাসহ সারাদেশে প্রবেশদ্বার গুলোতে যানজট নিরসনে কার্যকর পদক্ষেপ।

০৩। বিচার বিভাগ: ক) উপনিবেশিক লিগ্যাসি ও আইন বাদ দেয়া। খ) আইনের উৎস হিসেবে শরীয়াহকে গ্রহণ করা গ) উচ্চ আদালতে আলাদা শরিয়া বেঞ্চ গঠন করা। ঘ) বিচারপ্রার্থীর শরিয়া আইনে প্রতিকার চাওয়ার সুযোগ রাখতে হবে।

০৪। দূর্নীতি দমন: ক) দুদককে স্বাধীন ও স্বচ্ছভাবে কাজ করার লক্ষ্যে প্রস্তুত করা। খ) দুদক কমিশনার হিসেবে উলামা, শিক্ষাবিদ ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধি নিয়োগ করা। গ) দুর্নীতির মামলা দ্রুত নিস্পত্তির জন্য আলাদা আদালত স্থাপন করা। ঘ) বিদেশে পাচার হওয়া সম্পদ দেশে ফেরত আনার সক্ষমতা ক্সতরী করা।

০৫। প্রশাসন সংস্কার: ক) উপনিবেশিক ধারাবাহিকতার আমলাতন্ত্র আমূল বদলে দেয়া। পদবিন্যাস, পদবীর নাম ও সংস্কৃতিতে পরিবর্তন আনা। খ) বর্তমান প্রশাসন নির্দেশনা ও পদ্ধতি নির্ভর, সেখান থেকে সরে এসে কর্ম ও প্রকল্প কেন্দ্রিক প্রশাসন তৈরি করা। গ) ইসলামের ধারণা এবং সংবিধানের মর্ম মতে জনপ্রশাসন জনতার সেবক। কিন্তু নাম হলো "প্রশাসন"। এখান থেকে সরে আসতে হবে। ঘ) প্রশাসনের সর্বস্থরকে দূর্নীতি মুক্ত করা এবং দূর্নীতিবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইন করা। ঙ) চিহ্নিত দলবাজ, বিতর্কিত ও দূর্নীতিবাজ সচিবদেরকে অব্যাহতি প্রদান করা।

০৬। সংবিধান সংস্কার: ক) আওয়ামী আমলের সংশোধনীগুলো বাতিল করা। খ) আইনের উৎস হিসেবে শরীয়াহ-র প্রধান্য নিশ্চিত করা। গ) রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতায় ভারসাম্য আনা। ঘ) দুই বারের বেশি প্রধানমন্ত্রী না থাকা, একই ব্যক্তি দলীয় ও সরকারের প্রধান না হওয়া। ঙ) বর্তমান সংবিধানে ধারা ৭০ অনুচ্ছেদ বাতিল করা। চ) ন্যায়পাল কার্যকর করা, এবং তাতে বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর ধর্মীয় বিধানকে ভিত্তি হিসেবে রাখা। ছ) সংবিধান সংস্কার কমিটিতে উলামাদের থেকে একাধিক সদস্য অন্তর্ভুক্ত করা। জ) সংস্কার অবশ্যই গণভোটে অনুমোদিত হতে হবে। ঝ) সংবিধানে ইসলামের মৌলিকত্ব লংঘন হয় এমন কোনো ধারা থাকতে পারবে না। ঞ) দেশের যুব চরিত্র নস্ট করে এমন কোনো উপাদান (যে কোনো মদ বা মাদকতা সৃষ্টিকারী উপাদান) বা আচরণের (পতিতাবৃত্তি, অশ্লীল চলচ্চিত্র, জুয়া ইত্যাদির) ক্সবধতা সম্বলিত কোনো ধারা থাকতে পারবে না। ট) নারী ও শিশু পাচার বন্ধে এবং অসহায় নারীদের সুস্থধারায় পুর্নবাসনের সুস্পষ্ট ধারা-বিধান থাকতে হবে।

০৭। শিক্ষা কমিশন সংস্কার: ক) নীতি -নৈতিকতা, সুঅভ্যাস- সুআচরন ও দেশপ্রেম গড়ে উঠে এমন শিক্ষা কারিকুলাম তৈরী করতে হবে। খ) দেশের স্বাধীনতা অর্জনের লক্ষ্যে বিগত সোয়া দুইশত বছরের ধারাবাহিক সংগ্রামকে হেয় প্রতিপন্ন করে এমন কোনো সাহিত্য, প্রবন্ধ বা ধংংরমহসবহঃ শিক্ষার কোনো পর্যায়েই থাকতে পারবে না। গ) এদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণের ধর্মীয় অধিকার ক্ষুণ্ণ করে এমন কোনো সাহিত্য, প্রবন্ধ বা ধংংরমহসবহঃ শিক্ষার কোনো পর্যায়েই থাকতে পারবে না। ঘ) সকল সম্প্রদায়ের শিক্ষার্থীদের জন্য ধর্মীয় শিক্ষা বাধ্যতামূলক করতে হবে। ঙ) অনৈতিক আচরণে দোষী ব্যক্তিদের শিক্ষাঙ্গনে অনুপযুক্ত ঘোষণা করতে হবে। চ) গতানুগতিক বৃটিশ প্রবর্তিত লেজুরবৃত্তিক চাকুরীজীবি ক্সতরির শিক্ষা ব্যবস্থা হতে বের হয়ে উদ্যোক্তা সৃষ্টির শিক্ষা ব্যবস্থা প্রবর্তনে দেশের প্রবীণ স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষাবিদ আলেম ও দেশপ্রমিক রাজনীতিবিদদের সমন্বয়ে একটি কমিশন গঠন করতে হবে। ছ) প্রতিবন্ধী, হিজড়া ও পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর জন্য কার্যকরী ও ক্সনতিকতা সমৃদ্ধ শিক্ষার ব্যবস্থা করা।