Speakers at the 118th founding anniversary of Bangladesh Muslim League on Monday.
নিঃসন্দেহে মুসলিম লীগ প্রতিষ্ঠা উপমহাদেশ রাজনৈতিক ইতিহাসের এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। মুসলিম জাতিসত্তার আদর্শে বলিয়ান এই রাজনৈতিক দলটি বেনিয়া ইংরেজ ও ব্রাহ্মণ্যবাদী হিন্দুদের শোষণ, বঞ্চনা আর অবহেলায় দিশেহারা মুসলমানদের শুধু ঐক্যবদ্ধই করেনি, ৪১বছর লাগাতার লড়াই-সংগ্রামের মাধ্যমে ভারত বিভক্ত করে প্রতিষ্ঠা করেছিল মুসলমানদের জন্য আলাদা রাষ্ট্রের। আজাদি আন্দোলন নামে পরিচিত আমাদের এ বুনিয়াদী স্বাধীনতার উপর ভর করেই ১৯৭১সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত হয়েছিল বাংলাদেশের পূর্ণাঙ্গ স্বাধীনতা। আজ ৩০শে ডিসেম্বর, ২০২৪ বেলা তিনটায় ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক দল মুসলিম লীগের ১১৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বাংলাদেশ মুসলিম লীগের উদ্যোগে দলীয় ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এ্যাড. মো. মহসীন রশিদের সভাপতিত্বে ও মহাসচিব কাজী আবুল খায়েরের পরিচালনায় রাজধানীর ক্রাইম রিপোটার্স এসোসিয়েশন মিলনায়তনে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় নেতৃবৃন্দ উপরোক্ত মন্তব্য করেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, মুসলিম লীগ আমাদের বাবা-দাদাদের গড়া দল, আমরা পরবর্তী প্রজন্ম মুসলিম লীগের বেনিফিশিয়ারী। মুসলিম লীগ না হলে পাকিস্তান হতো না, আর পাকিস্তান না হলে বাংলাদেশ হতো না, এ ধ্রুব সত্য বেশী বেশী প্রচার করতে হবে। জানিপপ চেয়ারম্যান ড. নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহ তার বক্তব্যে বলেন, মাশরেকি পাকিস্তানের জন্ম না হলে বর্তমান মানচিত্র সম্বলিত বাংলাদেশ রাষ্ট্রের জন্ম হতো না।
নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, বঙ্গভঙ্গের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটে ভারতবর্ষের মুসলমানদের স্বার্থ রক্ষার প্রধান লক্ষ্যে, ঢাকার নবাব স্যার খাজা সলিমুল্লাহর উদ্যোগ ও প্রস্তাবনায় নিখিল ভারত মুসলিম লীগ প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। বর্তমান প্রেক্ষাপটে ৯২%শতাংশ মুসলমানের স্বার্থ রক্ষা, উদ্দেশ্য হিসাবে কিছুটা অপ্রাসঙ্গিক মনে হতে পারে কিন্তু প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারতের আগ্রাসন মোকাবেলায় ৪৭এ প্রমাণিত মুসলিম জাতিসত্তা তথা মুসলিম লীগ রাজনৈতিক আদর্শের আজও কোন বিকল্প নেই। আশা ও আনন্দের কথা ভারতীয় আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে মুসলিম লীগের অনড়, আপোষহীন ও ধারাবাহিক অবস্থান আজ গোটা জাতীর কাছেই স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের রক্ষা-কবচ হিসাবে মূল্যায়িত হচ্ছে। গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী রাজনৈতিক বিশৃঙ্খলার সুযোগ নিতে চাইছে পতিত ফ্যাসিস্ট হাসিনা, তার দোসর ও তাদের বিদেশী প্রভুরা। একমাত্র রাজনৈতিক দলের পক্ষেই দেশী-বিদেশী সকল ষড়যন্ত্র ছিণœ করে একটি গণঅভ্যুত্থানকে দ্রুততম সময়ে গণতন্ত্রে পরিণত করা সম্ভব। গণঅভ্যুত্থান-২৪ প্রেক্ষাপটে রাজনীতিতে আশাবাদী ও আগ্রহী হয়ে ওঠা বিশেষত তরুণ প্রজন্মের সকলেরই, দলীয় কাঠামোর ভেতর প্রবেশ করেই রাজনীতি চর্চা করা উচিত। প্রয়োজনে নতুন দল প্রতিষ্ঠিত হলেও প্রবীণতম দল মুসলিম লীগ তাদের স্বাগত জানাবে; এতে অন্তত এই মুহূর্তের জন্য অপরিহার্য রাজনৈতিক শৃঙ্খলা পুন:প্রতিষ্ঠিত হবে। সভায় আরো বক্তব্য রাখেন, জানিপপ চেয়ারম্যান ড. নাজমুল হাসান কলিমুল্লাহ, জমিয়ত উলামায়ে ইসলামের নায়েবে আমীর আব্দুর রব ইউসুফী, ইসলামী আন্দোলনের আমির ড. মো. ইসা শাহেদী, ইসলামী আন্দোলনের প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যক্ষ আশরাফ আলী আকন্দ, এফডিপি চেয়ারম্যান ড. এ.আর খান, মুসলিম লীগ অতি. মহাসচিব আকবর হোসেন পাঠান ও কাজী এ.এ কাফী, শেখ এ সবুর, সৈয়দ আব্দুল হান্নান নূর প্রমুখ।