News update
  • Fire breaks out at jacket factory in Chattogram     |     
  • Dhaka, Delhi agree to bring down border killings to zero     |     
  • Natore’s Baraigram OC closed over negligence in bus robbery case     |     
  • Imported fruit prices surge by up to Tk 100 per kg     |     
  • 35% of air pollution in BD originates from external sources: Experts     |     

৭ বছর পর দেখা হচ্ছে মা-ছেলের

গ্রীণওয়াচ ডেস্ক রাজনীতি 2025-01-06, 1:50pm

ewrerqwr-749f8ed52af69895b5194b134e4753ac1736149856.jpg




এক অক্ষরের ছোট্ট শব্দ ‘মা’। এমন মধুর শব্দ অভিধানে আর দ্বিতীয়টি নেই। এই শব্দের মধ্যেই লুকিয়ে আছে পৃথিবীর সব মায়া, মমতা, অকৃত্রিম স্নেহ, আদর ও ভালোবাসা। অথচ, সেই ভালোবাসা ও নাড়ির সম্পর্কে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল রাজনৈতিক কাঁটাতার। দীর্ঘ সাত বছর মা, বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে সশরীরে সাক্ষাৎ হয়নি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের। অবশেষে তার এই কষ্ট ও আক্ষেপ ঘুচতে বসেছে। সব ঠিক থাকলে মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) উন্নত চিকিৎসার জন্য লন্ডন যাবেন বিএনপি নেত্রী। আর এর মাধ্যমে ৭ বছর পর গর্ভধারিণী মাকে সামনাসামনি দেখতে পাবেন বিএনপির এই ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান।

জানা গেছে, কাতার আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানির পাঠানো ‘বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্স’ ফ্লাইটে মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) রাত ১০টায় লন্ডনের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়বেন খালেদা জিয়া। এরই মধ্যে সফরের সব প্রস্তুতিও সম্পন্ন হয়েছে। তারই অংশ হিসেবে রোববার (৫ জানুয়ারি) রাতে দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির সব সদস্যদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন বিএনপি নেত্রী। এ ছাড়াও এলডিপি চেয়ারম্যান কর্নেল (অব.) অলি আহমদ এবং রাষ্ট্রদূত মুশফিকুল ফজল আনসারীর সঙ্গেও পৃথকভাবে সাক্ষাৎ করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন।

বেগম খালেদা জিয়ার এবারের বিদেশযাত্রার সফর সঙ্গীর বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানানো না হলেও চিকিৎসক, পরিবারের সদস্য এবং দলের গুরুত্বপূর্ণ নেতারাসহ অন্তত ২৫ থেকে ৩০ জন যেতে পারেন বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে। তবে তার আগে সোশ্যাল মিডিয়াসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে খালেদা জিয়ার সফর সঙ্গী হিসেবে সাতজন চিকিৎসকসহ ১৫ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দলের তালিকা যাবে এমন তথ্য প্রচারিত হয়েছে।

ওই তালিকা অনুযায়ী, সফর সঙ্গীদের মধ্যে রয়েছেন খালেদা জিয়ার প্রয়াত ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী সৈয়দা শর্মিলা রহমান, বিএনপির চেয়ারপারসনের ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, ডা. মো. এনামুল হক চৌধুরী, তাবিথ মোহাম্মদ আওয়াল, ফখরুদ্দীন মোহাম্মদ সিদ্দিক, মো. শাহাবুদ্দীন তালুকদার, নুরুদ্দীন আহমাদ, মো. জাকির ইকবাল, মোহাম্মদ আল মামুন, শরিফা করিম স্বর্ণা, চেয়ারপারসনের ব্যক্তিগত কর্মকর্তা এবিএম আব্দুস সাত্তার, মো. মাসুদুর রহমান, এসএম পারভেজ, ফাতেমা বেগম এবং রুপা শিকদার।

বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, লন্ডনে বড় ছেলে তারেক রহমানের সঙ্গে কিছুদিন থাকার পর যুক্তরাষ্ট্রে যাবেন খালেদা জিয়া। পরে সেখানকার মেরিল্যান্ডের পূর্ব বাল্টিমোরে অবস্থিত জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে চিকিৎসা নেবেন তিনি। ইতোমধ্যে সে প্রস্তুতিও সম্পন্ন করা হয়েছে।

দলীয় সূত্রে আরও জানা গেছে, গত আগস্টের শুরুতে নবায়ন করা মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট (এমআরপি) খালেদা জিয়ার কাছে হস্তান্তর করা হয়। পরে নভেম্বরে তিনি যুক্তরাজ্যের ভিসা পাওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেন। ইতোমধ্যে তার সফরকারী টিমের তালিকা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে জমা দেওয়া হয়েছে।

এর আগে খালেদা জিয়ার বিদেশযাত্রা নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন জানিয়েছিলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী হিসেবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় খালেদা জিয়া ও তার যাত্রা সঙ্গীদের ভিসা প্রাপ্তিতে সহযোগিতা প্রদানসহ বিষয়টি তদারকি করছে।

চিকিৎসা শেষে দ্রুতই বিএনপি নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া দেশে ফিরবেন, এমন আলোচনা এখন দলীয় নেতাকর্মীদের মাঝে। তাদের ভাষ্য, যুক্তরাজ্য ছাড়াও যুক্তরাষ্ট্র ও সৌদি আরবের ভিসা পেয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন। তাই ধারণা করা হচ্ছে, চিকিৎসা শেষে তিনি সৌদি আরবে পবিত্র ওমরাহ পালন করতে পারেন। আর সবশেষে মায়ের সঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানও একত্রে দেশে ফিরতে পারেন।

এর আগে, চোখ ও পায়ের ফলোআপ চিকিৎসার জন্য ২০১৭ সালের ১৫ জুলাই সন্ধ্যায় এমিরেটস এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে লন্ডনের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করেন খালেদা জিয়া। পরে সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে তিনি যাত্রাবিরতি করেন।

১৬ জুলাই বাংলাদেশ সময় দুপুর ১২টা ৫০ মিনিটের দিকে বেগম জিয়া লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দরে অবতরণ করেন। সে সময় বিএনপির তৎকালীন সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান এবং যুক্তরাজ্য বিএনপির বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী বিমানবন্দরে খালেদা জিয়াকে স্বাগত জানান। লন্ডনে মা ও ছেলের এ সাক্ষাৎকালে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান উভয়ই আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। তারেক রহমান তখন নিজের গাড়িতে করে মা খালেদা জিয়াকে গন্তব্যে নিয়ে যান।

প্রসঙ্গত, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে কারাদণ্ড দেওয়া হয়। পরে ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি তিনি কারাবন্দি হন। দুই বছরের বেশি সময় কারাবন্দি থাকার পর ২০২০ সালের ২৫ মার্চ সরকার নির্বাহী আদেশে তার সাজা স্থগিত করে শর্ত সাপেক্ষে সাময়িক মুক্তি দেয়। এরপর থেকে ৬ মাস পরপর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিএনপি নেত্রীর সাজা স্থগিত করে মুক্তির মেয়াদ বাড়াচ্ছিল সরকার।

এমন অবস্থায় গত ৫ আগস্ট গণ আন্দোলনের মুখে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলে নির্বাহী আদেশে মুক্তি পান খালেদা জিয়া। এরপর থেকে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে নিয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করে বিএনপি।

৭৯ বছর বয়সী সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী লিভার সিরোসিস, হৃদরোগ, ফুসফুস, আর্থ্রাইটিস, কিডনি, ডায়াবেটিসসহ বিভিন্ন জটিলতায় ভুগছেন। রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে বিভিন্ন সময়ে আইসিইউতে রেখে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সমন্বয়ে মেডিকেল বোর্ডের মাধ্যমে তাকে দীর্ঘ সময় চিকিৎসা নিতে হয়েছে। ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সরকার পতনের পর গত ২১ আগস্ট এভারকেয়ার হাসপাতালে এক মাস চিকিৎসাধীন থেকে বাসায় ফেরেন তিনি। আরটিভি/