BML Logo
বাংলাদেশ মুসলিম লীগ নেতৃবৃন্দ বলেছেন, নবাব খাজা সলিমুল্লাহ বৃটিশ শাসিত বাংলার শোষিত ও শিক্ষা বঞ্চিত ভুমিদাস মুসলমানদের সন্তানদের কারিগরী শিক্ষা দেয়ার জন্য জমি দান করাসহ ১৯০৮ সালে নগদ এক লক্ষ বিশ হাজার টাকা অনুদান দিয়ে মরহুম পিতার নামে নবাব আহসানউল্লাহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ (পরবর্তীতে বুয়েট) প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি এতিম শিশুদের থাকা খাওয়াসহ সাধারণ শিক্ষা দেয়ার জন্য ঢাকার আজিমপুরে ১৮ একর জমি দান করে নিজ খরচে ১৯০৮ সালে দুটো স্কুলসহ প্রতিষ্ঠা করে সলিমুল্লাহ মুসলিম এতিমখানা যা আজো চালু আছে। তাঁর আর্থিক অনুদানে পূর্ব বঙ্গে অনেক মাদরাসা ও ছাত্রাবাস নির্মিত হয়েছে।
নেতৃবৃন্দ বলেছেন, পূর্ব বঙ্গের প্রজা শোষক হিন্দু জমিদারদের মুখপাত্র কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নেতৃত্বে বর্ণবাদী হিন্দুদের কায়েমী স্বার্থ রক্ষা করতে তাঁরা বঙ্গ ভঙ্গ বিরোধী সন্ত্রাসবাদী আন্দোলন করলে ১৯১১সালে তা রহিত করে বৃটিশরা। তাতে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠে পূর্ব বঙ্গের মুসলিমরা। পশ্চাৎপদ মুসলিমদের উচ্চ শিক্ষার জন্য প্রস্তাবিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করতে খাজা এস্টেট হতে প্রায় ছয়শত একর জমি দান করেন মুতাওয়াল্লী নবাব সলিমুল্লাহ বাহাদুর। সলিমুল্লাহ’র দান করা খাজা এস্টেটের জমির উপর প্রতিষ্ঠিত এই দুই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের উপাচার্যরা স্বীকার করতে কুন্ঠাবোধ করে।
মুসলিম লীগ নেতৃবৃন্দ বলেন, শুধু শিক্ষা বিস্তারেই নয়, ১৮৮৫ সালের ২৮ ডিসেম্বর হিন্দুত্ববাদ প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যে বোম্বেতে গঠিত ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসকে রাজনৈতিকভাবে মুকাবিলা করতে বৃটিশ ভারতের নেতৃত্বহীন মুসলিমদের জন্য একটি রাজনৈতিক দল গঠনের পরিকল্পনা গ্রহণ করেন ৩৩ বছর বয়সী নববব খাজা সলিমুল্লাহ বাহাদুর। এই লক্ষ্যে নবগঠিত পূর্ব বঙ্গ ও আসাম প্রদেশের রাজধানী ঢাকায় অনুষ্ঠিত তিন দিনের অল ইন্ডিয়া মুসলিম এডুকেশন কনফারেন্সের ২০তম অধিবেশন শেষে ১৯০৬ সালের ৩০ ডিসেম্বর মেজবান নবাব খাজা সুলিমুল্লাহ’র প্রস্তাব গ্রহণ করে সর্বভারত থেকে আগত ২৪২৩ জন বিশিষ্ট মুসলিম নেতা সর্বসম্মতিক্রমে গঠন করেন অল-ইন্ডিয়া মুসলিম লীগ যা ছিলো বিশ্বের প্রথম মুসলিম রাজনৈতিক দল।
নেতৃবৃন্দ বলেন, নবাব খাজা সলিমুল্লাহ’র পরিকল্পনা, উদ্যোগ ও প্রস্তাবে অল-ইন্ডিয়া মুসলিম লীগ গঠিত হবার পরই বৃটিশ ভারতের মুসলিমরা রাজনৈতিকভাবে ঐক্যবদ্ধ হবার সুযোগ লাভ করে। ১৯০৭ থেকে ১৯৪৭ সাল পর্যন্ত মুসলিম লীগের যে সকল নেতা বৃটিশ ভারতের এবং বাংলার রাজনৈতিক ইতিহাসে আজো আলোচিত তাঁদের মধ্যে অন্যতম হিজ হাইনেস দি আগা খান, শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক, কায়েদে আযম মুহাম্মদ আলী জিন্নাহ, মাওলানা আকরাম খাঁ, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, খাজা নাজিমউদ্দিন, পন্ডিত আবুল হাশেম, মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী, ফজলুল কাদের চৌধুরী, খান এ সবুর, শেখ মুজিবুর রহমান প্রমুখ। মুসলিম লীগের পতাকা নিয়ে তাঁরা সকলেই বৃটিশ ভারতকে বিভক্ত করে ১৯৪৭ সালের ১৪ আগস্ট পাকিস্তান রাষ্ট্রটি সৃষ্টির গৌরবের অধিকারী। মুসলিম লীগের উল্লেখিত নেতারাই আজকের বাংলাদেশের রাজনীতির আদি গুরু। সেদিন মুসলিম লীগ গঠন করে নবাব খাজা সলিমুল্লাহ অসংখ্য মুসলিম নেতা তৈরীর মৌলিক ক্ষেত্রটি সৃষ্টি করেছেন।
আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে পার্টির নির্বাহী সভাপতি আব্দুল আজিজ হাওলাদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ‘নবাব সলিমুল্লাহ’র অবদান’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন, স্থায়ী কমিটির সদস্য আতিকুল ইসলাম ও আনোয়ার হোসেন আবুড়ী, সহ-সভাপতি নজরুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট আফতাব হোসেন মোল্লা, অতিরিক্ত মহাসচিব আকবর হোসেন পাঠান, সাংগঠনিক সম্পাদক খান এ আসাদ ও সহ সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুর রহমান ভুঁইয়া, শ্রম সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার ওসমান গণী, প্রকাশনা সম্পাদক আব্দুল আলীম, কেন্দ্রীয় নেতা মুহাম্মদ আলী প্রমুখ। -প্রেস বিজ্ঞপ্তি