ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলের মতো এখনও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড হলে মানুষ হতাশ হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর নয়াপল্টনে এক সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
যৌথ বাহিনীর হেফাজতে কুমিল্লায় যুবদলকর্মীর মৃত্যু নিয়ে তীব্র সমালোচনা করে রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে এমন বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড কোনোভাবেই কাম্য নয়। শেখ হাসিনার শাসনামলের মতো বিচারবহির্ভূত হত্যার পুনরাবৃত্তি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের আমলে ঘটবে কেন?’
তিনি বলেন, ‘দেশ-বিদেশের ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত চলছেই। শঙ্কা আমাদের দিন দিন বাড়ছে। কুমিল্লায় যুবদলের একটা ছেলেকে ধরে নিয়ে মৃত অবস্থায় ফিরে দিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ড. ইউনূসের আমলে এই ঘটনা ঘটবে কেন? ড. ইউনূসকে পৃথিবীর বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা এবং পশ্চিমা গণতান্ত্রিক দেশগুলো অত্যন্ত পছন্দ করে। এ দেশের মানুষও তাকে পছন্দ করে। তারা মনে করেন, তিনি দেশের একজন গুণী মানুষ, যিনি দেশের জন্য আন্তর্জাতিক সম্মান নিয়ে এসেছেন। তার সময়ে যদি শেখ হাসিনা সরকারের আমলের বিচারবহির্ভূত হত্যার পুনরাবৃত্তি হয় তাহলে তো হোঁচট খাবে জনগণ।’
তিনি আরও বলেন, যদি ওই ছেলেটি অপরাধী হয় তাহলে তাকে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় নেওয়া যেত। কিন্তু গ্রেপ্তার করে ভয়াবহ টর্চার করে মেরে ফেলে বাবা-মার কাছে ফেরত দেওয়া এটা এই আমলে হবে কেন?
বিএনপির এ নেতা বলেন, ‘ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন সরকারকে দেশের গণতন্ত্রকামী মানুষ সমর্থন করেছে, নির্বাচিত না হলেও সমস্ত রাজনৈতিক দলের সমর্থিত এ সরকার, তার সরকারের প্রতি জনগণের সমর্থন রয়েছে। কিন্তু তার সরকারের আমলে যদি শেখ হাসিনার আমলের পুনরাবৃত্তি হয় তাহলে তো এই যে এত রক্তাক্ত আন্দোলন, রাজপথে রক্তের আলপনা, আহাদের মতো পাঁচ বছরের শিশু, মুগ্ধর মতো একটি তরুণ প্রাণ, আবু সাঈদের নির্ভীক চিত্তে নিজের শার্টের বোতাম খুলে পুলিশের গুলি বরণ- এই যে আত্মদান, এই আত্মদান তো একেবারে ব্যর্থ হয়ে গেল।’
এদিকে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ৩১ জানুয়ারি আনুমানিক রাত ৩টায় সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে যৌথবাহিনীর অভিযানে কুমিল্লার আদর্শ সদর উপজেলা থেকে মো. তৌহিদুল ইসলামকে আটক করা হয়। পরের দিন দুপুর সাড়ে ১২টায় কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তিনি মারা যান।
এই অনাকাঙ্ক্ষিত ও দুঃখজনক ঘটনাটি তদন্তে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে ওই সেনা ক্যাম্পের কমান্ডারকে তাৎক্ষণিকভাবে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
এ ছাড়াও মৃত্যুর সঠিক কারণ উদঘাটনের জন্য একটি উচ্চপদস্থ তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্তে দোষী সাব্যস্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে সেনা আইন অনুযায়ী যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। আরটিভি