যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) হোয়াইট হাউসে সাক্ষাৎ করেছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। এদিন তাকে সঙ্গে নিয়ে একটি সংবাদ সম্মেলনও আয়োজন করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট, যেখানে তিনি স্পষ্টভাবে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা দখল করে সেখানে যুক্তরাষ্ট্রের মালিকানা স্থাপনের ঘোষণা দিয়েছেন। একইসঙ্গে ট্রাম্প এও ইঙ্গিত দিয়েছেন যে এ ব্যাপারে কোনও বিরোধিতা করবে না সৌদি আরব। তার ভাষ্য, স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের ব্যাপারে কোনও দাবি নেই সৌদি আরবের।
মার্কিন প্রেসিডেন্টের এমন মন্তব্য নাকচ করে দিয়ে বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে সৌদি সরকার। বিবৃতির মাধ্যমে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়ে দিয়েছে, ফিলিস্তিনের ব্যাপারে সৌদি আরবের অবস্থান আগের মতোই আছে। ফিলিস্তিনিদের তাদের ভূখণ্ড থেকে বাস্তুচ্যুত করার কোনো চেষ্টা মেনে নেওয়া হবে না।
সৌদি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান ফিলিস্তিন ও ইসরায়েল বিষয়ে ‘সুস্পষ্টভাবে’ সৌদি আরবের অবস্থান জানিয়ে দিয়েছেন। এ নিয়ে কোনো পরিস্থিতিতেই ব্যাখ্যার কোনো দরকার নেই। স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক গড়বে না সৌদি আরব।
এর আগে, মঙ্গলবার সফররত ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্প বলেন, ফিলিস্তিনিরা অন্য জায়গায় পুনর্বাসিত হওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্র যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজা উপত্যকার নিয়ন্ত্রণ নেবে এবং সেখানকার অর্থনৈতিক উন্নয়ন করবে।
ফিলিস্তিনিরা চলে গেলে গাজায় কারা বাস করবে এমন প্রশ্নের জবাবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, বিশ্বের মানুষ। আমি মনে করি গাজা একটি আন্তর্জাতিক, অবিশ্বাস্য জায়গায় পরিণত হবে। আমি মনে করি গাজা উপত্যকার সম্ভাবনা অবিশ্বাস্য। আমি মনে করি সমগ্র বিশ্ব, সারা বিশ্বের প্রতিনিধিরা সেখানে থাকবেন, এবং তারা সেখানে বাস করবেন। ফিলিস্তিনিরাও সেখানে বাস করবেন। অনেক মানুষ সেখানে বাস করবেন।
তিনি বলেন, গাজা উপত্যকা ‘রিভেরা অব দ্য মিডল ইস্ট’ হয়ে উঠবে। আমাদের কাছে এমন কিছু করার সুযোগ রয়েছে যা অসাধারণ হতে পারে।
সংবাদ সম্মেলনে নেতানিয়াহু বলেন, সৌদি আরবের সঙ্গে মিলে ইসরায়েল সর্বোচ্চটা দিয়ে চেষ্টা করবে এবং সফল হবে।
প্রসঙ্গত, সৌদি আরবকে ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে এবং দেশটিকে স্বীকৃতি দেওয়াতে কয়েক মাসের কূটনৈতিক প্রচেষ্টায় নেতৃত্ব দিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। ২০২৩ সালের অক্টোবরে গাজা যুদ্ধ শুরু হওয়ার আগপর্যন্ত এই তৎপরতা চলেছে। তবে, গাজায় ইসরায়েলের হামলার পর আরব দেশগুলোর ক্ষোভের মুখে বিষয়টি স্থগিত করে সৌদি আরব। আরটিভি