
এডিস মশাবাহী ডেঙ্গু জ্বরের প্রকোপ নগরের পাশাপাশি গ্রামে-গঞ্জেও ছড়িয়ে পড়ছে। ডেঙ্গু প্রতিরোধে যে উদ্যোগ নেওয়ার প্রয়োজন ছিল সংশ্লিষ্টরা সেটা নিতে পারেনি। ফলে প্রতিদিন ডেঙ্গুতে মৃত্যুর পাশাপাশি আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে পাল্লা দিয়ে। হাসপাতালগুলোতে বাড়ছে রোগীর চাপ।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ডেঙ্গুবিষয়ক প্রতিবেদনের তথ্যমতে, মাস হিসেবে চলতি বছরের অক্টোবরে ডেঙ্গুতে মৃত্যু ও আক্রান্তের রেকর্ড হয়েছে। এ মাসে মারা গেছেন ৮০ জন এবং আক্রান্ত হয়েছেন ২২ হাজার ৫২০ জন। চলতি বছরের আর কোনো মাসে এত মৃত্যু ও আক্রান্তের ঘটনা ঘটেনি।
এ ছাড়া চলতি বছরের বাকি ৯ মাসের পরিসংখ্যান বলছে, জানুয়ারিতে ডেঙ্গুতে ১০ জনের মৃত্যু এবং এক হাজার ১৬১ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। ফেব্রুয়ারিতে তিনজনের মৃত্যু এবং ৩৭৪ জন হাসপাতালে, মার্চে কারও মৃত্যু না হলেও ৩৩৬ জন হাসপাতালে, এপ্রিলে সাতজনের মৃত্যু এবং ৭০১ জন হাসপাতালে, মে মাসে তিনজনের মৃত্যু এবং এক হাজার ৭৭৩ জন হাসপাতালে, জুনে ১৯ জনের মৃত্যু এবং পাঁচ হাজার ৯৫১ জন হাসপাতালে, জুলাইতে ৪১ জনের মৃত্যু এবং ১০ হাজার ৬৮৪ জন হাসপাতালে, আগস্টে ৩৯ জনের মৃত্যু এবং ১০ হাজার ৪৯৬ জন হাসপাতালে, সেপ্টেম্বরে ৭৬ জনের মৃত্যু এবং ১৫ হাজার ৮৬৬ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
চলতি বছর এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৬৯ হাজার ৮৬২ জন। এর মধ্যে ছাড়পত্র পেয়েছেন ৬৬ হাজার ৮০২ জন। মারা গেছেন ২৭৮ জন।
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অধ্যাপক ড. আতিকুর রহমান জানান, ডেঙ্গু এখন সারা বছরই হচ্ছে। বৃষ্টি শুরু হলে এটা বাড়ছে। ডেঙ্গু প্রতিরোধে মশা নিরোধক ওষুধ ব্যবহারের পাশাপাশি সব জায়গায় প্রচার চালাতে হবে। একইসঙ্গে সবাইকে সচেতন থাকতে হবে।
কীটতত্ত্ববিদ ড. মনজুর চৌধুরী বলছেন, মশানিধনে শুধু জেল-জরিমানা আর জনসচেতনতা বাড়িয়ে কাজ হবে না। সঠিকভাবে জরিপ চালিয়ে দক্ষ জনবল দিয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালে দেশের ইতিহাসে ডেঙ্গুতে সর্বোচ্চ ৩ লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন রোগী আক্রান্ত এবং ১ হাজার ৭০৫ জনের মৃত্যু হয়।