কাৎলাহার বিলের ধারে ঘন জঙ্গল সাফ করে বাঘের ঘাড়ে জোয়াল চাপিয়ে আবাদ শুরু করার দিনের এক বিকেল বেলায় মজনু শাহর অগুনতি ফকিরের সঙ্গে মহাস্থানগড়ের দিকে যাওয়ার সময় ইস্টইন্ডিয়া কোম্পানির সেপাই সর্দার টেলারের গুলিতে মারা পড়ে মুনশি বয়তুল্লাহ শাহ।
বিলের দুই ধারের গিড়িডাঙা ও নিজ গিড়িডাঙার মানুষ সবাই জানে, বিলের উত্তরে পাকুড় গাছে আসন নিয়ে রাতভর বিল শাসন করে মুনশি। দূরে কোথা ও ভূমিকম্প হলে যমুনা বদলে যায়। বন্যায় ভেঙে পড়ে কাৎলাহারের তীর। মুনশির নিস্কণ্টক অসিয়তে চাষিরা হয় কাৎলাহার বিলের মাঝি।
সময়ের আবর্তনে বিলের মালিকানা চলে যায় জমিদারের হাতে। মুনশির শ্লোকে শ্লোকে মানুষের স্বপ্নের ব্যাখ্যা করে বেড়ায় চেরাগ আলি ফকির। তমিজের বাপ শ্লোক শুনে আর ঘুমের মধ্যে বিলে গিয়ে কাদায় পা ডুবিয়ে দেখতে চায় পাকুড় গাছের মুনশিকে।
ভবানী পাঠকের সঙ্গে পূর্ব পুরুষের জের টেনে বৈকুণ্ঠ নাথগিরি প্রতীক্ষা করে ভবানীর শুভ আবির্ভাবের। তমিজ দেখে জমির স্বপ্ন। আর চেরাগ আলির নাতনি কুলসুম খোয়াবে কার কায়া যে দেখতে চায়, তার দিশা পায় না। তেভাগার কবি কেরামত শেষপর্যন্ত আটকে পড়ে শুধুই নিজের কোটরে। সে নাম চায়, বউ চায়, ঘর চায়।
কোম্পানির ওয়ারিশ ব্রিটিশের ডাণ্ডা উঠে আসে দেশি সাহেবদের হাতে। এভাবে এগিয়ে যায় খোয়াবনামার গল্প।
প্রাচ্যনাটের ৩৭তম এই প্রযোজনাটির নাট্যরূপ দিয়েছেন মো. শওকত হোসেন সজীব। নির্দেশনা দিয়েছেন কাজী তৌফিকুল ইসলাম ইমন। অভিনয় করেছেন সাহানা রহমান সুমি, সাখাওয়াত হোসেন রিজভী, মনিরুল ইসলাম রুবেল, চেতনার হমান ভাষা, মিতুল রহমান, মো. সোহেল রানা, তানজিকুন, সাইদুর রহমান শাহীন, রকি খান, ডায়না, শ্রাবণ শামীম, সাইম বিন মুজিব প্রমুখ।
গানের সুর : রাহুল আনন্দ, সঙ্গীত: নীল কামরুল, কোরিওগ্রাফি: স্নাতা শাহরিন, মঞ্চ: এবি এস জেম, আলোক ভাবনা: ঠান্ডু রায়হান।
নাটকটি সোমবার (৬ নভেম্বর) সন্ধ্যা ৭টায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালায় মঞ্চস্থ হবে এটি। প্রখ্যাত ঔপন্যাসিক ও গল্পকার আখতারুজ্জামান ইলিয়াসের বিখ্যাত উপন্যাস ‘খোয়াবনামা’ । সাতচল্লিশের দেশভাগের পটভূমিতে তৎকালীন জনমানুষের বিস্তৃত জীবন আখ্যান ‘খোয়াবনামা’। এই গল্পের মধ্য দিয়ে সময়ের জীবন ও বাস্তবতাকে ঔপন্যাসিক তুলে ধরেছেন নিপুণ হাতে। তথ্য সূত্র আরটিভি নিউজ।