News update
  • Bangladesh capital market falls; weekly turnover lowest     |     
  • Sharif Osman Hadi No More     |     
  • Tarique Rahman to Return Home With Daughter on Dec 25     |     
  • ILO praises Bangladesh’s labour reforms, new milestones     |     
  • Depositors stranded as Sammilito Islami Bank is in liquidity crisis     |     

প্রতিবন্ধীদের কল্যাণ ও সুরক্ষায় ৫২ বহুমাত্রিক ও নিবিড় কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে

গ্রীণওয়াচ ডেস্ক সংগঠন সংবাদ 2022-06-29, 11:30am




দেশের প্রতিবন্ধীর কল্যাণ ও সুরক্ষায়  সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধির বাড়ানো উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনে দেশের সব প্রতিবন্ধীর অধিকার ও সুরক্ষায় বর্তমানে ৫২টি বহুমাত্রিক ও নিবিড় কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। 

সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব জাহাঙ্গীর আলম বাসসকে জানান, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সাধারণ মানুষের কল্যাণের পাশাপাশি বিশেষ নাগরকি যারা প্রতিবন্ধী তাদের  কল্যাণে ব্যাপক উদ্যোগ ও পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিলেন। বর্তমান সরকার সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে। ভবিষ্যতে দেশের সব প্রতিবন্ধীকে ভাতার আওতায় আনাসহ সুযোগ সুবিধা বাড়ানোর ব্যাপক  উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে । 

তিনি বলেন, চলতি ২০২১-২০২২ অর্থ বছরে সরকার ২০ লাখ ৮ হাজার প্রতিবন্ধীকে ৭৫০ টাকা হারে ভাতাসহ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধার জন্য ১হাজার ৮৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়। আগামী অর্থ বছরে এই বরাদ্দ বৃদ্ধিসহ উপকারভোগীর সংখ্যা হবে ২৩ লাখ ৬৫ হাজার। বর্তমানে দেশে প্রায় ২৪ লাখ প্রতিবন্ধী রয়েছে।  এছাড়া সরকার আলাদা করে প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের সংখ্যা ৯০ হাজার থেকে এক লাখ করা হচ্ছে।  প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীরা বর্তমানে ১ হাজার ৩০০ টাকা হারে প্রতি মাসে ভাতা দিচ্ছে। 

সমাজসেবা অধিদপ্তরের পরিচালক মোহাম্মদ কামরুল ইসলাম চৌধুরী জানান, সমাজসেবা অধিদপ্তরের সর্বশেষ ২০১১ পরিসংখ্যান অনুযায়ী নারী, পুরুষ ও হিজড়াসহ দেশে ১২ থেকে ১৪ ধরনের প্রতিবন্ধী ব্যক্তির মোট সংখ্যা ২৪ লাখ ২৯ হাজার ৮৫৮ জন। প্রতিবন্ধী নাগরিকদের তালিকাভুক্ত করে ভাতাসহ বিশেষ সুযোগ-সুবিধা প্রদান করা হচ্ছে। ৪৯২টি উপজেলা এবং ৮০টি শহর সমাজসেবা কার্যালয় সমাজের সর্বস্তরের প্রতিবন্ধীদের কল্যাণে ও সুরক্ষায় বিশেষ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে। আগামী দিনে উপকারভোগীর সংখ্যা বাড়ানো হবে।

বাংলাদেশ ব্যুরো অব স্ট্যাটিসটিকস (বিবিএস) পরিচালিত ২০১১ সালের  হাউজ হোল্ড জরীপ অনুযায়ী বাংলাদেশে প্রতিবন্ধীতার হার ৯ দশমিক ৭ শতাংশ। ধরণ অনুযায়ী মানুষের মধ্যে প্রায় ১২ থেকে ১৪ ধরনের প্রতিবন্ধিতা শনাক্ত করা হয়েছে। এগুলো হলো, অটিজম বা অটিজম স্পেকট্রাম ডিজঅর্ডারস, শারীরিক, মানসিক অসুস্থতাজনিত, দৃষ্টি, বাক প্রতিবন্ধীতা, বুদ্ধি, এবং শ্রবণ প্রতিবন্ধিতা, সেরিব্রাল পালসি, ডাউন সিনড্রোম, বহুমাত্রিক এবং অন্যান্য প্রতিবন্ধিতা। বাংলাদেশে ২০২১ সালের ১৪ নভেম্বর পর্যন্ত দেশে ১২ থেকে ১৪ ধরনের

২৪ লাখ ১১ হাজার ১৬৫ জন প্রতিবন্ধী ব্যাক্তি রয়েছে। এর মধ্যে অটিজম বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন ৬৩ হাজার ৭ শত ৯৯ জন, শারিরীক প্রতিবন্ধী ১১ লক্ষ ৫৭ হাজার ৪৫৩ জন, দীর্ঘ মানসিক অসুস্থতাজনিত প্রতিবন্ধী ৮৭ হাজার ৪৯৫ জন, দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ৩ লাখ ৩২ হাজার ৬৩৩ জন, বাক প্রতিবন্ধী ১ লাখ ৬০ হাজার ৩৫২ জন, বুদ্ধি প্রতিবন্ধী ১ লাখ ৭৮ হাজার ৭৫৯ জন, শ্রবণ প্রতিবন্ধী ৮২ হাজার ৩১ জন, শ্রবণ দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ১০ হাজার ৩৬৬ জন, সেরিব্রালাপলসি ৯৬ হাজার ৯১৫ জন, বহুমাত্রিক প্রতিবন্ধী ২ লাখ ১৯ হাজার ৪৫৮ জন, ডাউন সিনড্রোম ৫ হাজার ২৮ জন এবং অন্যান্য আরো বিভিন্ন ধরনের প্রতিবন্ধীর সংখ্যা প্রায় ১৬ হাজার ৫৭ জন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে  প্রায় ৪৬ কোটি ৬০ লাখ প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠী। এরমধ্যে বাংলাদেশে রয়েছে ২৪ লাখ ২৯ হাজার ৮৫৮ জন  প্রতিবন্ধী। উন্নয়নশীল দেশগুলোতে প্রতিবন্ধীতার হার ১৫ শতাংশ। 

বাংলাদেশ জাতীয় বধির সংস্থার সভাপতি শাহাদৎ আলম হারু চৌধুরী প্রতিবন্ধীদের ভাতা প্রতি মাসে দুই হাজার টাকা বাড়ানোসহ সুয়োগ-সুবিধা বৃদ্ধি করার জন্য দাবি জানান। তিনি বলেন, রাজধানীর বিজয় নগরে  ১৯৬৩ সালে স্থাপিত দেশের বধির প্রতিবন্ধীদের কল্যাণে এই সংস্থা যাত্রা শুরু হয়। বর্তমানে ১৫টি বিদ্যালয়ের মাধ্যমে দেড় হাজার বধিরকে শিক্ষা প্রশিক্ষণ কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। এছাড়া এই সংস্থার অধীনে ২৩টি সংগঠন কাজ করছে। সংস্থার প্রায় সাড়ে ৪শ সদস্য রয়েছে। এই সংস্থার অধীনে পুরানো ঢাকায় প্রায় এক একর জমি রয়েছে। একজন প্রভাবশালীর দখলে রয়েছে। এই জমিটি উদ্ধার করার জন্য তিনি সরকারের সহযোগিতা কামনা করেন । 

প্রবীণ হিতৈষী সংঘের প্রবীণ নিবাসের ব্যবস্থাপক ডা.মহসীন কবির বলেন, দেশের প্রবীণ প্রতিবন্ধীদের জন্য সরকার বিনামূল্যে চিকিৎসাসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা প্রদান করছে। এরমধ্যে ৬৪টি জেলা ও ৩৯টি উপজেলায় ১০৩ টি সেবা কেন্দ্রের মাধ্যমে প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠীকে থেরাপিউটিক সেবা প্রদান করা হয়। 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃত্যকলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক তামান্না রহমান বলেন, বাংলাদেশে অনেক ছোট বড় পরিবারে বিভিন্ন রকমের প্রতিবন্ধী রয়েছে। এখন তারা সমাজে আর অবহেলিত নয়। সরকার প্রতিবন্ধীদের সুরক্ষায় ভাতা প্রদানসহ নানা সুযোগ-সুবিধা চালু করেছে। খেলাধুলা ও নৃত্যের মাধ্যমে প্রতিবন্ধীরা নিজ নিজ অবস্থান থেকে অবদান রাখছে। তথ্য সূত্র বাসস।