News update
  • Depositors stranded as Sammilito Islami Bank is in liquidity crisis     |     
  • BNP faces uphill task to reach seat-sharing deal with allies     |     
  • Bangladesh rejects India’s advice; vows free, fair polls     |     
  • Hadi’s condition very critical: Singapore Foreign Minister     |     
  • Asia-Pacific hunger eases, Gaza pipeline fixed, Europe hit by flu     |     

নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ : সমন্বিত বিনিয়োগের সুপারিশ নেত্রীবৃন্দের

গ্রীণওয়াচ ডেক্স সংগঠন সংবাদ 2023-11-26, 6:54am

image-115811-1700917736-b13f452e2890a31619ec6ec314fa80941700960090.jpg




নারী ও কন্যার প্রতি সহিংসতা বন্ধে নারীর অধিকারসংশ্লিষ্ট সকল খাতে সমন্বিত বিনিয়োগের সুপারিশ করেছেন নারী  নেতৃবৃন্দ।  ‘আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ  ও বিশ্ব মানবাধিকার দিবস, ২০২৩’ পালন উপলক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে নারী নেতৃবৃন্দ আজ এ সুপারিশ পেশ করেন। ‘নারী ও কন্যার প্রতি সহিংসতা বন্ধে এগিয়ে আসুন, সহিংসতা প্রতিরোধে বিনিয়োগ করুন’- এই প্রতিপাদ্য নিয়ে  বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনটির আয়োজন করে।

বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি ডা: ফওজিয়া মোসলেম-এর পরিচালনায় সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন সংগঠনের  লিগ্যাল এইড সম্পাদক রেখা সাহা। 

উপস্থাপিত বক্তব্যে বলা হয়, “নারী ও কন্যার প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে সরকার, উন্নয়ন সংগঠন, নারী ও মানবাধিকার সংগঠন, নারী আন্দোলন বহুমাত্রিক কাজ করলেও  নারী ও কন্যার প্রতি সহিংসতার মাত্রা ক্রমাগতই বৃদ্ধি পাচ্ছে, এর সাথে বাড়ছে বর্বরতার ধরণ।। এ সকল পরিস্থিতির উত্তরণে  নারী ও কন্যার প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে ‘সমন্বিত বিনিয়োগ’ অপরিহার্য বলে মনে করে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ।”

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, এবছরের জানুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত ১৩ টি দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত খবর বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে- দেশে মোট ২৫৭৫ টি সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে হত্যার ঘটনা ঘটেছে ৪৩৩ টি এবং ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে ৩৯৭ টি। বর্তমানে সময়ে অনলাইন যোগাযোগ মাধ্যমে ও জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক অভিঘাতের কারণেও নারী ও কন্যার প্রতি সহিংসতা বাড়ছে বলে এ প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। উপস্থাপিত বক্তব্যে বিনিয়োগের ক্ষেত্র  হিসেবে রাষ্ট্রের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের আইন-নীতিমালা-কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন, বিভিন্ন  সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের সক্ষমতা এবং সংবেদনশীলতা বৃদ্ধিতে জেন্ডার বাজেটে অর্থ বরাদ্দ বৃদ্ধি এবং বাজেটের যথাযথ বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়। 

রেখা সাহা বলেন,  নারী ও কন্যার প্রতি সহিংসতার প্রকৃত তথ্য সংগ্রহ, সহিংসতার কারণ নির্ণয় এবং এর আলোকে পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য সরকার, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে গবেষণায় বিনিয়োগ করতে হবে। জনসচেতনতা বৃদ্ধি এবং এডভোকেসি শক্তিশালী করার ক্ষেত্রে নারীর মানবাধিকার সংগঠন, নারী আন্দোলনে আর্থিক সহযোগিতা বৃদ্ধিতে সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের ভূমিকা পালন এবং গণমাধ্যমসহ নাগরিক সমাজের ঐক্যবদ্ধ উদ্যোগ এই ক্ষেত্রে একটি বড় বিনিয়োগ। 

ডা. ফওজিয়া মোসলেম ধর্ষকের সাথে ধর্ষণের শিকার নারীর বিয়ে বন্ধের দাবি জানিয়ে বলেন, “আইনের বিধানে এধরণের বিয়ে দিয়ে সমাধানের কথা বলা নেই। এতে নারীর আত্মমর্যাদার উপর আঘাত আসে, তার নিরাপত্তাও বিঘিত হয় । নারীর মর্যাদা ও মানবাধিকার রক্ষায় ধর্ষকের সাথে বিয়ে কোনভাবেই কাম্য নয়।” ধর্ষণের ঘটনাসহ বিভিন্ন সহিংসতার ঘটনা ও নানা হতাশাজনক অবস্থার কারণে কিশোর কিশোরী ও বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে আত্মহত্যার ঘটনা উদ্বেগজনক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে উল্লেখ করে ডা. ফওজিয়া বলেন, আত্মহত্যার ঘটনা প্রতিরোধে মানসিক সহায়তা ও কাউন্সেলিং সেবার পরিধি বৃদ্ধি করতে হবে। 

সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সহ-সভাপতি রেখা চৌধুরী ও শাহানা কবির, সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সীমা মোসলেম ও অ্যাডভোকেট মাসুদা  রেহানা বেগম ও  প্রোগ্রাম অফিসার(কাউন্সেলিং) সাবিকুন নাহার। 

আজ ২৫ নভেম্বর। আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ দিবস। এ উপলক্ষে আজ থেকেই শুরু হচ্ছে আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ। সারা বিশ্বে নারীর প্রতি সহিংসতা বৃদ্ধিতে উদ্বিগ্ন নারী সমাজের পক্ষ থেকে ৪২ বছর আগে ১৯৮১ সালে ল্যাটিন আমেরিকায় নারীদের এক সম্মেলনে ২৫ নভেম্বর আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ দিবস পালনের ঘোষণা দেয়া হয়। ১৯৯৩ সালে ভিয়েনায় অনুষ্ঠিত মানবাধিকার সম্মেলন দিবসটিকে স্বীকৃতি দেয়। ১৯৯৯ সালের ১৭ ডিসেম্বর জাতিসংঘ এই দিবসটিকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দেয়। পরবর্তীতে জাতিসংঘ নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধ ও বন্ধের লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক পরিম-লে প্রচার-প্রচারণা বেগবান করার উদ্দেশ্যে ১০ ডিসেম্বর বিশ্ব মানবাধিকার দিবস পর্যন্ত ১৬ দিনের কর্মসূচি গ্রহণ করে, একই সঙ্গে সদস্য রাষ্ট্রসমূহকে এই সময় কর্মসূচি গ্রহণ করার জন্য আহ্বান জানায়। 

বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও ১৯৯৭ সাল থেকে বিভিন্ন সংগঠন একক ও যৌথভাবে নানা কর্মসূচির মাধ্যমে পালন করে নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ এবং বিশ্ব মানবাধিকার দিবস। বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ নারী-পুরুষের সমতা প্রতিষ্ঠা, নারীর মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা এবং পরিবার-সমাজ ও রাষ্ট্রে নারী ও কন্যার প্রতি সকল ধরণের সহিংসতামুক্ত মানবিক সংস্কৃতি গড়ে তোলার লক্ষ্যে প্রতি বছর কেন্দ্র থেকে তৃণমূল পর্যন্ত কর্মসূচি গ্রহণ করে। 

এ উপলক্ষে মহিলা পরিষদ ২৫ নভেম্বর থেকে ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত কেন্দ্র ও জেলা পর্যায়ে আলোচনা সভা, সেমিনার, নারী নির্যাতন প্রতিরোধে সচেতনতামূলক লিফলেট ও পোস্টার বিতরণ কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। এছাড়াও পত্র-পত্রিকায় ফিচার-আর্টিকেল প্রকাশ ও টেলিভিশনে টক শো ও আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে।আরটিভি নিউজ।