মিয়ানমারের ক্ষমতাসীন সামরিক জান্তার সাথে লড়াইয়ে তাদের বিরোধী পিপলস ডিফেন্স ফোর্সেস (পিডিএফ) স্থানীয়ভাবে প্রস্তুতকৃত অস্ত্র ব্যবহার করে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। পিডিএফ-এর সদস্যরা সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে ভিওএ-কে এমন তথ্য জানান।
পিডিএফ-এর বেশিরভাগ সদস্যই শিক্ষার্থী ও কৃষক, যাদের এর আগে অস্ত্র উৎপাদনের কোন অভিজ্ঞতা নেই। তারা জানান যে, তারা ইউটিউব থেকে এবং একে অপরের থেকে অস্ত্র বানানোর কৌশল রপ্ত করেছেন।
জান্তা বিরোধী বেশিরভাগ সেনাই এমনভাবে বানানো অস্ত্রের উপরই নির্ভর করেন বলে প্রচলিত আছে।
মিয়ানমারের মধ্যাঞ্চল ও কায়াহ প্রদেশসহ দেশটির পূর্বদিকে থাইল্যান্ডের সাথে সীমান্তবর্তী এলাকায়, কিছু কিছু বিরোধী সশস্ত্র দল হাতে তৈরি অস্ত্র প্রস্তুত ও ব্যবহার করে আসছে। এসবের মধ্যে রকেট লঞ্চারও রয়েছে, যা জান্তা বাহিনীকে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছে।
সাগায়িং অঞ্চলের পালে শহরের, দ্য টাইগার পিপলস ডিফেন্স ফোর্স ১৫টি রকেট তৈরি করেছে, যেগুলো তিন মাইল দূর পর্যন্ত আঘাত হানতে পারে। প্রাথমিকভাবে গোষ্ঠীটি খুবই সাধারণ মানের রাইফেল, বোমা ও মাইন প্রস্তুত করত। তারপর ছয়মাসের মধ্যেই তারা রকেট লঞ্চার ও গোলাবারুদ প্রস্তুত করা আরম্ভ করে।
টাইগার পিপলস ডিফেন্স ফোর্স-এর তথ্য ও অস্ত্র উৎপাদন দলের প্রধান, বো থান চায়ুং বলেন, “আমরা ১০০টি সিঙ্গেল শট রাইফেল তৈরি করি এবং সেগুলো সাগায়িং অঞ্চলের অন্যান্য গোষ্ঠীগুলোর সাথে ভাগাভাগি করে নেই এবং রকেট লঞ্চারের জন্য ৩০০টি রাউন্ড প্রস্তুত করি। ঐ সব অস্ত্রই যুদ্ধক্ষেত্রে ব্যবহৃত হচ্ছে।”
কায়াহ ও দক্ষিণাঞ্চলের শান প্রদেশে সক্রিয়. কারেন্নি জেনারেশন জি (জেড) নামের আরেকটি প্রতিরোধ ইউনিট মার্চ মাস থেকে ১৩০ মিলিমিটার, ৭০ মিলিমিটার ও ৫৫ মিলিমিটার মর্টার প্রস্তুত করছে। ইউনিটটির মুখপাত্র কালায় বো জানান যে, একটি মর্টার তৈরি করতে ৫০ থেকে ৮০ ডলার ব্যয় হয়।
কারেন্নি জেনারেশন জি ১৩০ মিলিমিটার মর্টারের জন্য প্রতিদিন ২০টি রাউন্ড তৈরি করতে পারে। তবে, যখনই জান্তা জেনে যায় যে তারা কোথায় কার্যক্রম পরিচালনা করছে, তখনই তাদের অবস্থান পরিবর্তন করতে হয়। এছাড়া তাদের কাঁচামাল স্বল্পতা সমস্যা ছাড়াও, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা হিসেবে আর্থিক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়।
কালায় বো বলেন, “সামরিক বাহিনীর সাথে লড়াই করতে শুরুতে আমরা বাড়িতে তৈরি শিকারের রাইফেল প্রস্তুত করতে পেরেছিলাম। তবে, জান্তা বাহিনী স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র, দূরপাল্লার কামান, জেটবিমান ও হেলিকপ্টার ব্যবহার করা আরম্ভ করলে আমরা আর এই ধরণের বন্দুক দিয়ে তাদের প্রতিরোধ করতে পারছিলাম না। তাই সামরিক বাহিনীর সাথে লড়তে আমরা আরও উন্নত অস্ত্র তৈরি করি।” তথ্য সূত্র ভয়েস অফ আমেরিকা বাংলা।