ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রাশিয়ার যুদ্ধের কারণে ফ্রান্স ও জার্মানির সম্পর্কে কিছুটা টানাপোড়েন দেখা দেয়। রবিবার এই দুই দেশ তাদের বেশ কয়েক দশকের বন্ধুত্ব উদযাপনের উদ্দেশ্যে বিভিন্ন অনুষ্ঠান ও ইউরোপের নিরাপত্তা, জ্বালানি ও অন্যান্য চ্যালেঞ্জ নিয়ে আলোচনা করেছে এবং তাদের মধ্যে মতপার্থক্য দূর করার চেষ্টা করেছে।
এ মুহূর্তে জার্মানির মন্ত্রীসভার সব সদস্য যৌথ বৈঠকের জন্য প্যারিসে অবস্থান করছেন। এছাড়াও দুই দেশের ৩০০ আইনপ্রণেতা সোরবোন বিশ্ববিদ্যালয়ে সমন্বিত হয়ে একটি যুগান্তকারী চুক্তির ৬০ বছরপূর্তী উদযাপন করবেন, যার মাধ্যমে তৎকালীন দুই শত্রু রাষ্ট্র আজকের ইউরোপীয় ইউনিয়নের মূল চালিকাশক্তিতে পরিণত হয়েছে।
এলিসি প্রাসাদে ২ দফা আলোচনায় সভাপতিত্ব করবেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ ও জার্মানির চ্যান্সেলর ওলাফ শোলজ। আলোচ্য বিষয় প্রথমত জ্বালানি ও দ্বিতীয়ত অর্থনৈতিক নীতিমালা। এরপর আসবে প্রতিরক্ষা।
উভয় দেশ ইউক্রেনকে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ অস্ত্রশস্ত্র দিয়েছে, কিন্তু রুশ হামলা অব্যাহত থাকায় ইউক্রেন ট্যাংক ও আরও শক্তিশালী অস্ত্র চাইছে।
যুদ্ধ চলাকালীন সময়ে দুই দেশের কৌশলগত পার্থক্য প্রকাশ্যে এসেছে। বিশেষত, যুদ্ধের কারণে সৃষ্ট জ্বালানি সংকট ও মূল্যস্ফীতির চাপ কীভাবে সামলানো হবে এবং ভবিষ্যৎ সামরিক বিনিয়োগ কৌশলের বিষয়ে ইউরোপের আলোচনায় দুই দেশের চিন্তাধারার পার্থক্য পরিষ্কার হয়েছে।
ম্যাক্রোঁ সরবরাহকে আরও বৈচিত্র্যময় এবং কার্বন-মুক্ত জ্বালানি উৎপাদনকে আরও উৎসাহ দেওয়ার মাধ্যমে ইউরোপীয় ইউনিয়নে “নতুন জ্বালানি মডেল” তৈরির আহ্বান জানান।
রবিবারের বৈঠকটি এই দুই দেশের মাঝে ২০১৯ সালের পর প্রথম সশরীরে বৈঠক। অক্টোবরে হওয়ার কথা থাকলেও জ্বালানি, প্রতিরক্ষা ও অর্থনীতি বিষয়ে দুই দেশের মতপার্থক্যের কারণে এটি বিলম্বিত হয়।
ফ্রান্স ও জার্মানিকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের “ইঞ্জিন” হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে। এই দেশ দু’টি সবসময় পারস্পরিক সমঝোতার মাধ্যমে সব ধরনের সমস্যার সমাধান করেছে।
শোলজ বলেন, “ফ্রাংকো-জার্মান ইঞ্জিনটি একটি সমঝোতার মেশিন: এটি সদা প্রস্তুত, কিন্তু একই সঙ্গে মাঝে মাঝে জোরে শব্দ করে এবং কঠোর পরিশ্রমের পরিচয় দেয়”। তথ্য সূত্র ভয়েস অফ আমেরিকা বাংলা।