News update
  • Guterres Urges Leaders to Act as UNGA Week Begins     |     
  • BNP to go door to door for hearts and votes     |     
  • Chittagong port tariffs increased up to 50 per cent     |     
  • Rising Heat Cost Bangladesh $1.8 Billion in 2024     |     
  • Stocks extend gains; turnover drops in Dhaka, rises in Ctg     |     

ইসরায়েলের ব্যাপক হামলা, বিশ বছরে সবচেয়ে সংঘাতময় দিন লেবাননে

বিবিসি নিউজ বাংলা সংঘাত 2024-09-24, 10:51am

ryerretre-827ad27a8a0642d150b8152cd4f24d411727153516.jpg




লেবাননে হেজবুল্লাহকে লক্ষ্য করে ইসরায়েলের ব্যাপক বিমান হামলায় অন্তত ৪৯২ জন নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। তারা বলছে এটি গত বিশ বছরের মধ্যে প্রাণহানির দিক থেকে সবচেয়ে সংঘাতময় দিন।

হাজার হাজার মানুষ তাদের বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়েছে। ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী বলছে ২০০৬ সালের যুদ্ধের পর থেকে হেজবুল্লাহর গড়ে তোলা অবকাঠামো ধ্বংস করতে তারা তেরশ লক্ষ্যবস্তুতে হামলা করেছে।

অন্যদিকে, হেজবুল্লাহ ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চল লক্ষ্য করে দুশো রকেট ছুড়েছে বলে সামরিক বাহিনী জানিয়েছে। এতে দুজন আহত হয়েছে।

এদিকে উভয়পক্ষ একটি সর্বাত্মক যুদ্ধের দিকে অগ্রসর হওয়ার প্রেক্ষাপটে বিশ্বশক্তিগুলো তাদের সংযম প্রদর্শনের আহবান জানিয়েছে।

লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে নিহতদের মধ্যে ৩৫ শিশু ও ৫৮ জন নারী আছে। আর আহত হয়েছে ১ হাজার ৬৪৫ জন।

তবে হতাহতের মধ্যে বেসামরিক নাগরিক বা যোদ্ধাদের সংখ্যা কতো সে সম্পর্কে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

দেশটির স্বাস্থ্যমন্ত্রী ফিরাস আবিয়াদ বলেছেন হামলার কারণে হাজার হাজার পরিবার বাস্তুচ্যুত হয়েছে।

জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্টনিও গুতেরেস উত্তেজনাকর পরিস্থিতি সম্পর্কে সতর্ক করে বলেছেন তিনি চান না যে ‘লেবানন আরেকটি গাজায়’ পরিণত হোক।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের ফরেন অ্যাফেয়ার্স প্রধান জোসেফ বোরেল বলেছেন ‘পরিস্থিতি মারাত্মক বিপজ্জনক ও উদ্বেগজনক’। নিউইয়র্কে বিশ্বনেতাদের সমবেত হওয়ার আগে তিনি আরও বলেছেন ‘আমরা প্রায় একটি সর্বাত্মক যুদ্ধের কাছে’।

প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র উত্তেজনা নিরসনে কাজ করছে যাতে করে লোকজন নিরাপদে ঘরে ফিরতে পারে। অন্যদিকে, পেন্টাগন ঘোষণা করেছে যে তারা ‘সতর্কতার অংশ হিসেবে’ সৈন্যদের অতিরিক্ত একটি ছোট দল মধ্যপ্রাচ্যে পাঠাচ্ছে।

গাজা যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে গত এক বছর ধরে ইসরায়েল ও হেজবুল্লাহর মধ্যে আন্তঃসীমান্ত লড়াই চলছে। এতে শত শত মানুষের মৃত্যু হয়েছে যাদের অধিকাংশই হেজবুল্লাহ যোদ্ধা। এছাড়া উভয় পক্ষে লাখ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে।

হেজবুল্লাহ বলেছে তারা হামাসের সমর্থনে কার্যক্রম চালাচ্ছে এবং গাজায় যুদ্ধবিরতি নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত তারা তা থামাবে না। দুটি সংগঠনই ইরান সমর্থিত। ইসরায়েল, যুক্তরাজ্যসহ আরও অনেক দেশ তাদের সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে বর্ণনা করে থাকে।

ক্রমবর্ধমান সংকটের মধ্যে পেন্টাগন অল্প সংখ্যক সৈন্যদের একটি অতিরিক্ত দল মধ্যপ্রাচ্যে পাঠাচ্ছে।

“মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধি পাওয়ায় এবং সতর্কতার অংশ হিসেবে আমরা যুক্তরাষ্ট্র সামরিক বাহিনী সদস্যদের একটি ছোট দল ওই অঞ্চলে থাকা আমাদের ফোর্সের কাছে পাঠাচ্ছি,”পেন্টাগন মুখপাত্র মেজর জেনারেল প্যাট রাইডার সাংবাদিকদের বলেছেন।

তবে তিনি এ বিষয়ে আর কোনো প্রশ্নের উত্তর দেননি।

লেবাননের গণমাধ্যম বলছে স্থানীয় সময় সোমবার সকাল সাড়ে ছয়টায় ইসরায়েলের বিমান হামলার প্রথম ঢেউ শুরু হয়।

“এটা ছিলো ভয়াবহ, আমাদের মাথার ওপর দিয়ে ক্ষেপণাস্ত্র উড়ে যাচ্ছিলো। বোমার শব্দে আমরা জেগে উঠি, আমরা এটা আশা করিনি,” একজন নারী বলছিলেন।

লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলের সিডন, মারজেয়ুন, নাবাটিয়ে, বিনত জেবেইল, জেজ্জিন ও জাহরানি এবং পূর্বাঞ্চলীয় বেক্কা উপত্যকার জাহলে, বালবেক ও হারমাল জেলার কয়েক ডজন শহর, গ্রাম ও খোলা জায়গাকে লক্ষ্য করে দিনভর এসব হামলা হয়েছে বলে জানিয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদ সংস্থা এনএনএ।

সন্ধ্যায় রাজধানী বৈরুতের দক্ষিণের শহরতলীর বির আল আবেদ একটি ভবনে ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হেনেছে বলে খবর পাওয়া গেছে।

লেবাননের নিরাপত্তা বাহিনী বলছে হেজবুল্লাহর শীর্ষ কমান্ডার আলী কারাকিকে লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়েছে। তবে তিনি মারা গেছেন কি না তা পরিষ্কার নয়।

হেজবুল্লাহর মিডিয়া অফিস জানিয়েছে কারাকি ‘ভালো’ আছেন এবং ‘নিরাপদ জায়গায় সরে গেছেন’।

বোমা হামলা এবং হেজবুল্লাহ যেখানে অস্ত্র মজুদ করেছে সেখানকার ভবনগুলো থেকে সরে যেতে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর অডিও ও টেক্সট বার্তা পাওয়ার পর লোকজন দ্রুত সরে যাওয়ার চেষ্টা শুরু করলে দেশটির দক্ষিণ থেকে বৈরুত পর্যন্ত সড়কগুলোতে তীব্র যানজট লেগে যায়।

একটি মোটরবাইক করে এক পরিবারের চারজন যাচ্ছিলেন ত্রিপলির উত্তরাঞ্চলীয় এক শহরের দিকে। পথে বিবিসির সাথে কথা বলেন তারা। “আর কী শুনতে চান? আমরা পালাতে বাধ্য হয়েছি,”বলছিলেন বাবা।

তথ্যমন্ত্রী জিয়াদ মাকারি জানিয়েছেন তিনি বৈরুতে তাদের ভবন খালি করতে ইসরায়েলের ফোন পেয়েছেন। যদিও তিনি বলেছেন এটি তারা শুনবেন না এবং একে তিনি ‘মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধ’ হিসেবে উল্লেখ করেন।

প্রধানমন্ত্রী নাজিব মিকাতি মন্ত্রীসভার বৈঠকে বলেছেন: “লেবাননে অব্যাহত ইসরায়েলি আগ্রাসন যে কোন অর্থেই একটি নির্মূল করার যুদ্ধ”।

“আমরা সরকার হিসেবে ইসরায়েলের এ নতুন যুদ্ধ বন্ধে ও অজানার দিকে অগ্রসর হওয়া এড়াতে কাজ করছি”।

ইসরায়েল ডিফেন্স ফোর্স বা আইডিএফ সোমবার সন্ধ্যায় এক বিবৃতিতে বলেছে তাদের বিমানগুলো দক্ষিণ লেবানন ও বেক্কা উপত্যকায় হেজবুল্লাহর ‘সন্ত্রাসী লক্ষ্যবস্তুতে’ প্রায় তেরশ হামলা চালিয়েছে।

তাদের দাবি এসব জায়গায় রকেট, মিসাইল, লাঞ্চার এবং ড্রোন লুকিয়ে রাখা হয়েছে।

“আমরা যুদ্ধ অবকাঠামোকে টার্গেট করেছি, যা হেজবুল্লাহ গত বিশ বছর ধরে তৈরি করেছে। এটা গুরুত্বপূর্ণ,”আইডিএফ চীফ অফ স্টাফ লে. জে. হারজি হালেভি তেল আবিবে তার কমান্ডারদের উদ্দেশ্যে বলেছেন।

আইডিএফ এর মুখপাত্র রিয়ার এডমিরাল ড্যানিয়েল হ্যাগারি বলেছেন দক্ষিণ লেবাননের ভিডিওগুলো থেকে দেখা যাচ্ছে ‘ভবনগুলোর মধ্যে মজুদ করা হেজবুল্লাহর অস্ত্রের কারণে দ্বিতীয় দফায় উল্লেখযোগ্য বিস্ফোরণ ঘটেছে’।