News update
  • $10mn Approved for Climate Resilience in CHT: ICIMOD     |     
  • At least 143 dead in DR Congo river boat fire tragedy     |     
  • Dhaka has worst air pollution in the world Saturday morning     |     
  • Container ships to ply between Mongla and Chattogram ports     |     
  • France to Break Away from UK & US in Recognising Palestine as Nation State     |     

আসাদের পতনের পর সিরিয়াজুড়ে ইসরায়েলের বিমান হামলার খবর

বিবিসি বাংলা সংঘাত 2024-12-10, 10:59am

rtyerterte-1dc807a22d966cb1d4b3e73134ddbe7f1733806751.jpg




সিরিয়ার গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী ইসরায়েলি যুদ্ধবিমানগুলো রাজধানী দামেস্কসহ দেশটির বিভিন্ন জায়গায় হামলা চালিয়েছে।

যুক্তরাজ্যভিত্তিক সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস (এসওএইচআর) সিরিয়ার বিভিন্ন সামরিক টার্গেটে ইসরায়েলের বিমানগুলোর অন্তত একশ হামলার খবর দিয়েছে।

যেসব জায়গায় হামলা হয়েছে তার মধ্যে রাসায়নিক অস্ত্র উৎপাদন সংক্রান্ত একটি গবেষণা কেন্দ্র আছে বলেও খবর দিয়েছে স্থানীয় গণমাধ্যম।

ইসরায়েল বলছে আসাদ সরকারের পতনের পর অস্ত্র যাতে 'উগ্রপন্থীদের হাতে চলে না যায়' সেজন্য তারা পদক্ষেপ নিয়েছে।

ওদিকে প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের পতনের প্রেক্ষাপটে পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার জন্য বৈঠকে বসতে যাচ্ছে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ।

এসওএইচআর বলছে গত দুই দিনে সিরিয়ায় শত শত হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বিমানগুলো। এর মধ্যে একটি দামেস্কের একটি সাইট আছে যেটি ইরানের বিজ্ঞানীরা রকেট উন্নয়নর কাজে ব্যবহার করতো।

এই হামলা এমন সময় হলো যখন জাতিসংঘের রাসায়নিক অস্ত্র সম্পর্কিত পর্যবেক্ষণ সংস্থা সিরিয়ায় রাসায়নিক অস্ত্রের মজুদ থাকলে তা নিরাপদ রাখার বিষয়ে সতর্কবার্তা দিয়েছে।

জাতিসংঘের অর্গানাইজেশন ফর দ্যা প্রহিবিশন অফ কেমিক্যাল উইপনস (ওপিসিডব্লিউ) এর মতে রাসায়নিক অস্ত্র বলতে তাই বোঝানো হয় যে রাসায়নিক দ্রব্য ইচ্ছাকৃতভাবে কারও মৃত্যু বা ক্ষতি করার কাজে ব্যবহৃত হয়।

আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী রাসায়নিক অস্ত্রের ব্যবহার নিষিদ্ধ, এমনকি সামরিক স্থাপনাকে টার্গেট করার ক্ষেত্রেও। কারণ এই অস্ত্র ছড়িয়ে পড়ে, কোনো সুনির্দিষ্ট টার্গেটে সীমাবদ্ধ থাকে না।

সিরিয়ায় আসাদ পরিবারের ৫৪ বছরের শাসনের অবসান হয়েছে

সিরিয়ার কতগুলো বা কোথায় রাসায়নিক অস্ত্র আছে তা জানা যায়নি। তবে সাবেক প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ এ ধরনের অস্ত্র মজুদ করেছিলেন বলে বিশ্বাস করা হয়। এ বিষয়ে তিনি যে ঘোষণা দিয়েছিলেন সেটিও ছিল অসম্পূর্ণ।

সিরিয়া ওপিসিডব্লিউ'র রাসায়নিক অস্ত্র সনদে স্বাক্ষর করেছিলো ২০১৩ সালে। এর এক মাস আগেই দামেস্কের একটি শহরতলীতে এ ধরনের অস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছিলো। এতে নার্ভ এজেন্ট ব্যবহার করা হয়েছিলো। ওই ঘটনায় প্রায় ১৪শ মানুষ মারা গিয়েছিলো।

ওই হামলার ভয়াবহ চিত্র বিশ্ববাসীকে হতবাক করেছিলো। পশ্চিমা শক্তিগুলো বলেছে ওই হামলা কেবলমাত্র সরকারই চালাতে পারে। তবে আসাদ তখন এজন্য বিরোধীদের দায়ী করেছিলেন।

সিরিয়া সরকারের ঘোষিত ১৩শ টন রাসায়নিক অস্ত্র ওপিসিডব্লিউ ও জাতিসংঘ ধ্বংস করেছিলো। তা সত্ত্বেও রাসায়নিক অস্ত্র হামলা দেশটির অব্যাহত আছে।

বিবিসি এনালাইসিস ২০১৮ সালে নিশ্চিত করেছিলো যে ২০১৪ থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে সিরিয়ার গৃহযুদ্ধে প্রায় ১০৬ বার রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহৃত হয়েছে।

সোমবার ওপিসিডব্লিউ জানিয়েছে তারা রাসায়নিক অস্ত্র ও স্থাপনার নিরাপত্তার বিষয়ে সিরিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করেছে।

আবার সোমবারই সিরিয়ার বাফার জোন অর্থাৎ যেখানে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষীরা ছিল সেখানে নিজের সৈন্যদের প্রবেশের ছবি প্রকাশ করেছে ইসরায়েল।

এর একদিন আগেই প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ঘোষণা দিয়েছিলেন যে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী সাময়িকভাবে ওই এলাকার নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে।

গোলান উপত্যকা দামেস্কের ৬০ কিলোমিটার দক্ষিণ পশ্চিমে।

ইসরায়েল ১৯৬৭ সালে সিরিয়ার সাথে ছয় দিনের যুদ্ধের সময় গোলান দখল করে এবং ১৯৮১ সালে একতরফাভাবে এটি নিজেদের সাথে সম্পৃক্ত করে নেয়। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এটিকে স্বীকৃতি না দিলেও যুক্তরাষ্ট্র ২০১৯ সালে তার স্বীকৃতি দিয়েছে।

সবশেষ সিরিয়ার বিদ্রোহীরা দামেস্ক দখল করে প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের সরকারকে উৎখাতের পর ইসরায়েল নতুন করে পদক্ষেপ নিলো। তিনি ও তার পিতা ১৯৭১ সাল থেকে দেশটি শাসন করেছেন।

হায়াত তাহরির আল-শাম বা এইচটিএসের নেতৃত্বাধীন ইসলামপন্থী বিরোধী গ্রুপ রবিবার দামেস্কে প্রবেশ করে এবং এর সিরিয়াকে মুক্ত হিসেবে টেলিভিশনে ঘোষণা দেয়।

রবিবার নেতানিয়াহু দিনটিকে 'মধ্যপ্রাচ্যের জন্য ঐতিহাসিক দিন' বলে ঘোষণা করেন।

আসাদ সরকার দেশটির গৃহযুদ্ধে হেজবুল্লাহ ও রাশিয়ার কাছ থেকে সমর্থন পেয়ে আসছিলেন। হেজবুল্লাহ ইসরায়েল-গাজা যুদ্ধে এবং ইসরায়েল-লেবানন সীমান্তে সংঘাতে জড়িয়েছে।

আবার রাশিয়া ইউক্রেন আগ্রাসনে শক্তি বাড়িয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে এইচটিএস আর কিছু বিদ্রোহী দল নিয়ে সিরিয়ার বড় অংশ দখলে সমর্থ হয়েছে।

রবিবার নেতানিয়াহু বলেছেন ইসরায়েল সিরিয়ানদের প্রতি শান্তির হাত বাড়িয়ে দিবে, যারা ইসরায়েলের সাথে শান্তিতে বাস করতে চায়।

"সিরিয়ার নতুন শক্তির সাথে প্রতিবেশীসুলভ ও শান্তিপূর্ণ সম্পর্ক স্থাপনই আমাদের ইচ্ছে। কিন্তু এটি না হলে ইসরায়েলের নিজেকে রক্ষার স্বার্থে যা করার তাই করবো," বলছিলেন তিনি।

তবে ইসরায়েল গোলান উপত্যকার বিষয়ে সতর্ক থাকবে কারণ এইচটিএস নেতা আবু মোহাম্মেদ আল-জোলানি সেখান থেকেই উঠে এসেছেন।

হাজার হাজার ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারী সেখানে বাস করছেন। ওই এলাকায় প্রায় বিশ হাজার সিরিয়ানও বাস করে।

সিরিয়ার ইসরায়েলের বিমান হামলা নতুন কিছু নয়। ইরান ও হেজবুল্লাহর মতো ইরান সমর্থিত সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর সাথে যোগসূত্র আছে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে শত শত হামলার কথা তারা স্বীকারও করেছে।

২০২৩ সালের অক্টোবরে গাজা যুদ্ধ শুরুর পর প্রায়শই ইসরায়েল সিরিয়ায় বিমান হামলা করেছে। লেবানন ও সিরিয়ায় হেজবুল্লাহ ও অন্য গোষ্ঠীগুলোর সাথে পাল্টাপাল্টি হামলার সময় সিরিয়ায় এসব হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল।

গত মাসেই যুক্তরাজ্য ভিত্তিক এসওএইচআর বলেছে পালমিরার কাছে বিভিন্ন জায়গায় ইরান সমর্থিত মিলিশিয়া যোদ্ধাদের লক্ষ্য করে অনেকবার বিমান হামলা করেছে। এতে ৬৮ সিরিয়ান ও অন্য বিদেশি যোদ্ধা নিহত হয়েছিলো।