
ইউক্রেন যুদ্ধ অবসানে মার্কিন শান্তি পরিকল্পনার মাধ্যমে দেশের মর্যাদা ও ভূখণ্ড উভয়ই ঝুঁকিতে পড়তে পারে বলে সতর্ক করেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডিন্টে ভলোদিমির জেলেনস্কি।
স্থানীয় সময় শুক্রবার (২১ নভেম্বর) জাতির উদ্দেশ্যে দেয়া ভাষণে তিনি বলেন, ইউক্রেন তার ইতিহাসের সবচেয়ে কঠিন এক মুহূর্ত পার করছে। হয় আত্মমর্যাদা হারানো অথবা গুরুত্বপূর্ণ অংশীদারকে হারানোর ঝুঁকি।
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ‘গঠনমূলক আলোচনা চলছে বলে উল্লেখ করেন এবং মার্কিন ভাইস-প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্সের সঙ্গে প্রায় এক ঘণ্টার ফোনালাপের কথা বলেন।
সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, ব্যাপকভাবে ফাঁস হওয়া যুক্তরাষ্ট্রের শান্তি পরিকল্পনায় এমন কিছু বিষয় আছে যা কিয়েভ আগেই প্রত্যাখ্যান করেছিল। এর মধ্যে আছে পূর্বাঞ্চলীয় কিছু এলাকার নিয়ন্ত্রণ ছেড়ে দেয়া, সশস্ত্র বাহিনীর আকার কমিয়ে আনা এবং ন্যাটোতে যোগ না দেয়ার অঙ্গীকার করা।
জেলেনস্কি সতর্ক করে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে যুদ্ধ বন্ধের জন্য যে পরিকল্পনা আনা হয়েছে, তা রাশিয়ার অনুকূলে যাবে এবং এর ফলে ইউক্রেনকে হয় দেশের আত্মমর্যাদা হারাতে হবে, নয়তো দীর্ঘদিনের মিত্র (যুক্তরাষ্ট্র) হারানোর ঝুঁকি নিতে হবে।
এদিকে ওয়াশিংটনের পাঠানো ২৮ দফা পরিকল্পনা শান্তি-সমঝোতার ভিত্তি হতে পারে বলে জানিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। স্থানীয় সময় শুক্রবার তিনি জানান, পরিকল্পনাটি এখনো বিস্তারিতভাবে আলোচনায় না এলেও রুশ বাহিনী যে অগ্রসর হচ্ছে, এ বাস্তবতা কিয়েভ ও ইউরোপ এখনো বুঝতে পারছে না। তার দাবি, ইউক্রেন আপত্তি জানালেও যুদ্ধ থামাতে হলে রাজনৈতিক শর্ত মেনে নিতে হবে।
অন্যদিকে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেছেন, থ্যাংক্সগিভিং-এর মধ্যেই কিয়েভকে ‘ফ্রেমওয়ার্ক ডিল’ গ্রহণ করতে হবে। তবে এতে এমন কিছু প্রস্তাব রয়েছে যা আগে থেকেই প্রত্যাখ্যান করেছে ইউক্রেন। বিশেষ করে অঞ্চল সমর্পণ এবং ন্যাটোতে যোগদানের আকাঙ্খা পরিত্যাগের বিষয়টি। এ কারণে কিয়েভ বলছে, সমঝোতার এ প্রস্তাবের মাধ্যমে দেশের মর্যাদা ও ভূখণ্ড উভয়ই ঝুঁকিতে পড়বে।
কিয়েভ জানিয়েছে, মার্কিন পরিকল্পনা নিয়ে ইউরোপিয়ান কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লেয়েন, কাউন্সিল প্রেসিডেন্ট আন্তোনিও কোস্তা এবং ন্যাটো মহাসচিব মার্ক রুটের সঙ্গে জেলেনস্কি আলাপ করেছেন। এছাড়া জার্মান চ্যান্সেলরসহ ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ এবং ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের সঙ্গেও কথা বলেছেন তিনি।
আগামী কয়েক দিনে আরও বৈঠক ও ফোনকল নির্ধারিত আছে, যেখানে যুক্তরাষ্ট্র-ইউরোপ-ইউক্রেনের দলগুলো যৌথভাবে কাজ করবে বলে জানিয়েছে দেশটি।