
শান্তি পরিকল্পনা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনা ইতিবাচক দিকে এগোচ্ছে বলে জানিয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। এছাড়া, রাশিয়া ও ইউক্রেন শান্তি চুক্তির খুবই কাছাকাছি পৌঁছেছে বলে দাবি করেছেন পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোতে নিযুক্ত মার্কিন দূত ম্যাথিউ হুইটেকার।
একদিকে শান্তি চুক্তি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে গেলেও, অন্যদিকে পাল্টাপাল্টি হামলা চালিয়ে যাচ্ছে রাশিয়া ও ইউক্রেন। শনিবার রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, গত এক সপ্তাহে রুশ বেসামরিক স্থাপনায় ইউক্রেনের হামলার জবাবে তারা পাঁচ দফায় ইউক্রেনের সামরিক- শিল্প কেন্দ্র, জ্বালানি স্থাপনা, সামরিক পরিবহন নেটওয়ার্ক ও দূর-পাল্লার ড্রোন তৈরির কারখানায় আঘাত হেনেছে।
এসময় রুশ আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা পাঁচটি নেপচুন ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র, একটি মার্কিন নির্মিত হিমার্স রকেট এবং মোট ১ হাজার ১২০টি ইউক্রেনীয় ড্রোন ভূপাতিত করে বলে দাবি করেছে। কৃষ্ণসাগরে নৌবহরও সাতটি ইউক্রেনীয় মানববিহীন নৌকা ধ্বংসের দাবি করে রুশ সেনারা।
ইউক্রেন জানায়, তারা রাশিয়ার দক্ষিণাঞ্চলের ক্রাসনোদার এলাকায় একটি বন্দর এবং সামারায় একটি তেল শোধনাগারে হামলা চালিয়েছে। একইদিনে ফ্রন্টলাইনে ১০৬টি সংঘর্ষ হয়, যার মধ্যে পোকরোভস্কমুখী লড়াই সবচেয়ে ভয়াবহ ছিল।
শুক্রবার রাতে রাশিয়া ইউক্রেনের বিভিন্ন অঞ্চলে ৬৫৩টি ড্রোন ও ৫১টি ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে এবং কিয়েভের কাছে একটি রেলওয়ে হাব ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ইউক্রেন দাবি করে, তারা ৫৮৫টি ড্রোন ও ৩০টি ক্ষেপণাস্ত্র ভূপাতিত করেছে।
কৃষ্ণ সাগরে শ্যাডো ফ্লিট-এর অংশ বলে পরিচিত তেলবাহী ট্যাংকার ‘কাইরোস’ ইউক্রেনীয় নৌড্রোনের আক্রমণে বিধ্বস্ত হয়ে পড়ে আছে বুলগেরিয়ার উপকূলে। খারাপ আবহাওয়ায় উদ্ধার অভিযান বারবার ব্যাহত হচ্ছে। তবে বুলগেরিয়া বলছে, জাহাজটি স্থিতিশীল অবস্থায় ভেসে আছে এবং দশ সদস্যের বহুজাতিক ক্রু নিরাপদে রয়েছে। খাবার ও পানি মজুত আছে প্রায় তিন দিনের মতো।
এদিকে যুদ্ধের চতুর্থ বর্ষপূর্তির কাছাকাছি এসে শান্তি আলোচনাও গতি পাচ্ছে। দোহার এক প্যানেলে যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাটো দূত ম্যাথিউ হুইটেকার বলেন, মস্কো ও কিয়েভ শান্তিচুক্তির অনেক কাছাকাছি পৌঁছেছে। অন্যদিকে প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি জানান, ট্রাম্পের নিযুক্ত শান্তি দূত স্টিভ উইটকফ ও জ্যারেড কুশনারের সঙ্গে তার গঠনমূলক আলোচনা হয়েছে। শান্তি আলোচনা ইতিবাচক দিকেই এগোচ্ছে বলে ইঙ্গিত করেন তিনি।
লন্ডনে সোমবার ফ্রান্স, জার্মানি ও যুক্তরাজ্যের নেতাদের সঙ্গে বৈঠকেও যুদ্ধোত্তর নিরাপত্তা কাঠামো নিয়ে আলোচনার কথা রয়েছে।