News update
  • US Assistant Secy Donald Lu likely to be in Dhaka May 14     |     
  • BTRC moving ahead to shut 'unregistered' news sites - Arafat     |     
  • PM tells JS how she came back defying military-backed CT gov     |     
  • UP Polls: BNP urges voters not to go to polling stations tomorrow     |     
  • 5 workers dead, 49 missing after a building collapsed in South Africa     |     

যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা জালিয়াতি যেভাবে হয়, সতর্ক থাকতে করণীয়

গ্রীণওয়াচ ডেস্ক প্রবাস 2023-01-23, 9:08am

2bec12f0-9a56-11ed-82c6-d783765472c9-e0d660c9bb1d58eab7fd07a52b5b597f1674443327.jpg




যুক্তরাষ্ট্র বা ইউরোপের বিভিন্ন দেশে স্থায়ীভাবে বসবাসের আশায় বাংলাদেশি নাগরিকরা বিভিন্ন ট্রাভেল এজেন্সি এমনকি দালালদের সহযোগিতা নিয়ে থাকেন।

বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠান বৈধভাবে সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করলেও কিছু চক্রের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে যে তারা গ্রাহকদের থেকে মোটা অংকের টাকা নিয়ে নানা প্রতারণার আশ্রয় নিচ্ছে।

গত শুক্রবার প্রতারণার মাধ্যমে ভিসা জালিয়াতির অভিযোগে ছয়জনকে গ্রেফতার করে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম উত্তর বিভাগ।

জালিয়াতির এই বিষয়টি সবার আগে যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের নজরে আসে গত ১৮ই জানুয়ারি।

এরপর যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের সিকিউরিটি এটাশে মাইকেল লি বাদী হয়ে গুলশান থানায় ওই দুই পাসপোর্টধারীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।

মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, গত নভেম্বর মাসে যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা আবেদনের জন্য দুটি পাসপোর্ট জমা পড়ে।

পাসপোর্ট দুটির তথ্য তদন্ত করতে গিয়ে দূতাবাস জানতে পারে, আবেদনকারীরা পাসপোর্টটি গুরুত্বপূর্ণ দেখাতে মালদ্বীপ, মালয়েশিয়া ও ক্যাম্বোডিয়া ভ্রমণের জাল এন্ট্রি এবং এক্সিট সিল বসিয়েছে।

পরে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় ঢাকায় অভিযান চালিয়ে প্রতারক চক্রটিকে শনাক্ত করে এবং ছয় জনকে গ্রেফতার দেখানো হয়।

গ্রেফতারের সময় তাদের কাছ থেকে প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত চারটি জাল সিল ও তিনটি পাসপোর্ট জব্দ করা হয় বলেও দাবি করেছে পুলিশ।

গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে দুইজন ছিলেন আবেদনকারী এবং বাকি চারজন দুটি ট্রাভেল এজেন্সির মালিক নাহলে কর্মী ছিলেন বলে পুলিশ জানায়।

যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের সতর্কতা, করণীয় কী

ভিসা জালিয়াত চক্র গ্রেফতার হওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস ২০শে জানুয়ারি এ বিষয়ে সতর্কতামূলক বিবৃতি দিয়েছে।

সেখানে তারা বলেছে, যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা আবেদন করার জন্য কোনও এজেন্সি বা দালালের সহায়তার প্রয়োজন নেই।

যুক্তরাষ্ট্র ভিসা আবেদনকারীরা নিজেরাই অনলাইনে আবেদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে পারেন।

এজন্য প্রয়োজনীয় সমস্ত তথ্য ও নির্দেশিকা যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের ওয়েবসাইটে দেয়া আছে।

মার্কিন ভিসা আবেদনকারীরা ভিসা আবেদনপত্রে যে তথ্য দেয়, সাক্ষাৎকারে তারা যে নথি দেয়, তার দায়ভার আবেদনকারীর হওয়ায় নিজের আবেদন নিজে দেয়ার ব্যাপারেই উৎসাহ দেয় দূতাবাস।

এক্ষেত্রে মূলত চারটি বিষয়ে তারা গুরুত্ব দিয়েছে, সেগুলো হল: মার্কিন দূতাবাসের ওয়েবসাইটের সব তথ্য পর্যালোচনা করা, প্রয়োজনীয় ও সঠিক ডকুমেন্ট সংগ্রহ করে সাক্ষাৎকারের জন্য প্রস্তুত থাকা, ভিসা প্রক্রিয়া এবং সাক্ষাৎকারের সময় নির্ভুল উত্তর দেওয়া।

ভিসা আবেদনে মিথ্যা তথ্য ও নথি উপস্থাপনের ফলে শুধু ভিসা প্রত্যাখ্যানই নয়, প্রার্থীর অযোগ্যতাও বিবেচিত হতে পারে, যা ভবিষ্যতে যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণের ক্ষেত্রে বড় বাধা হতে পারে বলে বিবৃতিতে সতর্ক করা হয়।

‘ভিসা দেয়া’ বা ‘ভিসা ফি’ এর নামে প্রতারণা থেকে সতর্কতা

মার্কিন দূতাবাসের ওয়েবসাইটে প্রতারক চক্রের ভুয়া বার্তা থেকে সতর্ক থাকতে নানা নির্দেশনা দেয়া থাকে।

যুক্তরাষ্ট্রের “ভিসা ফি” নেয়ার নাম করে বিভিন্ন প্রতারক চক্র ফোন কল, ইমেইল এবং চিঠির মাধ্যমে অননুমোদিত প্রক্রিয়ায় অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে এবং সম্প্রতি এমন প্রতারণার সংখ্যা বেড়েছে বলে সতর্ক করেছে মার্কিন দূতাবাস।

দূতাবাসের ওয়েবসাইটে জানানো হয়েছে যে, প্রতারক চক্র তাদের প্রধান ফোন লাইনের নম্বর নকল করতে পারে।

ফলে এমন কোন নম্বর থেকে প্রাপ্ত ফোন কল ও বার্তা মূল অফিস থেকে করা হয়েছে বলে আবেদনকারীদের মনে হতে পারে।

এই কল ও মেসেজগুলোর পিছনের প্রতারকেরা অর্থ হাতিয়ে নেয়ার উদ্দেশ্যে নিজেদেরকে যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তা হিসাবে পরিচয় দিয়ে থাকে।

সেক্ষেত্রে ইমেইলের দিকে দৃষ্টি দেয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। দূতাবাস জানায়, তাদের ইমেইলের ঠিকানা “.gov” দিয়ে শেষ হয়।

সে কারণে এবং “.gov” দিয়ে শেষ হয়নি এমন কোন ইমেইল থেকে আসা ভিসা-বিষয়ক যেকোনো চিঠিপত্রকেই সন্দেহজনক বলে বিবেচনা করতে হবে।

দূতাবাসের ওয়েবসাইটে বলা হয়, ঢাকাস্থ যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস কখনই আবেদনকারীকে ভিসা  ফি প্রদান করার অনুরোধ জানিয়ে ইমেইল বা কল করবে না।

ভিসা সাক্ষাৎকার সবসময় যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসে ব্যক্তিগতভাবে নেয়া হয়, ফোনে নয়, এবং কনস্যুলার সেকশন কখনই বিকাশ, নগদ, রকেট বা অনুরূপ ডিজিটাল পেমেন্টের মাধ্যমে ভিসা ফি প্রক্রিয়া করে না।

অন-ইমিগ্রেশন ভিসা আবেদনকারীরা তাদের ডিএস-১৬০  অনলাইন ফর্ম পূরণ করার পর শুধুমাত্র ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেড (ইবিএল)-এর শাখায় তাদের ভিসা ফি জমা দিতে পারেন।

ঢাকাস্থ যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস নিয়মিতভাবে ভিসা সহায়তা দেওয়া বিষয়ক প্রতারণামূলক প্রস্তাব, ই-মেইল, চিঠি, ওয়েবসাইট, ফোন কল, এসএমএস এবং বিজ্ঞাপন পর্যবেক্ষণ করে থাকে।

এসব ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান ঢাকার যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের সঙ্গে যুক্ত নয় এবং এমন কোন সেবা দেওয়ার জন্য দূতাবাস তাদের অনুমোদন, সনদ দেয়নি বলে জানানো হয়।

যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের ভিসার আবেদনের জন্য ব্যক্তিগত মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কাজ করার ক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে হবে।

আরও তথ্য যাচাই করার জন্য কয়েকটি লিঙ্ক অনুসরণের পরামর্শ দিয়েছে দূতাবাস: www.travel.state.gov, https://bd.usembassy.gov/visas/, https://bd.usembassy.gov/visas/, https://bd.usembassy.gov/visas/immigrant-visas/fees/

ডিভি নিয়ে প্রতারণা

আবার অনেক প্রতারক চক্র ডিভি বা ডাইভারসিটি ভিসা দেয়ার কথা বলেও প্রতারণা করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গিয়েছে।

অথচ বাংলাদেশিদের জন্য এই ভিসা কর্মসূচি ২০১২ সালেই বন্ধ হয়ে যায়।

যুক্তরাষ্ট্রের গ্রিন কার্ড দিতে অর্থাৎ বৈধভাবে থাকার জন্য ২০০৭ থেকে ২০১২ সালের মধ্যে বাংলাদেশ ডাইভারসিটি ভিসা লটারি বা ডিভি লটারির আওতায় ছিল।

কিন্তু বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রগামী অভিবাসীর সংখ্যা দিন দিন বেড়ে যাওয়ায় ২০১৩ সালে এ ভিসা কর্মসূচি থেকে বাংলাদেশের নাম বাদ দেওয়া হয়।

মার্কিন দূতাবাসের ওয়েবসাইট থেকে জানা যায়, ২০১২ সাল থেকে বাংলাদেশ আর ডাইভারসিটি ভিসা কর্মসূচিতে অংশ নেওয়ার যোগ্য নেই।

২০০৭ থেকে ২০১২ সালের মধ্যে ৫০ হাজারেরও বেশি বাংলাদেশি এই ভিসার আওতায় যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমানোয় বাংলাদেশ থেকে অভিবাসী নেয়ার কোটা পূর্ণ হয়ে যায়।

তাই বাংলাদেশে ডিভির কর্মসূচি আর চালু নেই।

ওয়েবসাইট বা ইমেইল মার্কিন সরকারের কিনা তা কীভাবে জানবেন

যুক্তরাষ্ট্রের সব অফিশিয়াল সরকারি ওয়েবসাইট, ইমেইল অ্যাড্রেস এবং সব ইন্টারনেট সাইটের শেষে ".gov" ডোমেইন থাকে। বিশ্বের ২০০টিরও বেশি মার্কিন দূতাবাস এবং কনস্যুলেটের ওয়েবসাইটে এই ডোমেইন ব্যবহার করা হয়।

তাই ".gov" দিয়ে শেষ হওয়া যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি ওয়েবসাইটে আসা ভিসার তথ্য এবং ইমেইল অফিসিয়াল এবং সঠিক।

তবে ".gov" দিয়ে শেষ না হওয়া ইমেইল অ্যাড্রেস থেকে আসা ভিসা-সম্পর্কিত চিঠিপত্রকে সন্দেহজনক হিসাবে বিবেচনা করতে বলা হয়েছে।

অন্যান্য অনেক বেসরকারি ওয়েবসাইট (যেমন, ".com," ".org" বা ".net" দিয়ে শেষ হওয়া ঠিকানা) বৈধ হতে পারে।

এসব ওয়েবসাইটে অভিবাসন এবং ভিসা-সম্পর্কিত তথ্য ও সেবা দেয়াও হতে পারে।

তবে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতর এসব ওয়েবসাইটে দেখানো কোনও তথ্যকে সমর্থন, সুপারিশ বা স্পন্সর করে না।

প্রদত্ত তথ্য সঠিক বা আপ-টু-ডেট নাও হতে পারে, তাই সব সময় যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি সূত্রের তথ্য যাচাই করার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। 

বিনামূল্যে তথ্য এবং ফর্মসহ সরকারী ভিসা এবং অভিবাসন তথ্য সম্বলিত প্রধান মার্কিন সরকারি ওয়েবসাইটগুলো হল:

যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস ও কনস্যুলেট ওয়েবসাইট : http://www.usembassy.gov/

 যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, কনস্যুলার অ্যাফেয়ার্স ভ্রমণ ওয়েবসাইট: http://travel.state.gov

ডিপার্টমেন্ট অফ স্টেট, ডাইভারসিটি ভিসা প্রোগ্রাম ওয়েবসাইট: https://dvprogram.state.gov

 হোমল্যান্ড সিকিউরিটি ডিপার্টমেন্ট (ডিএইচএস): http://www.dhs.gov

 ডিএইচএস, মার্কিন নাগরিকত্ব এবং অভিবাসন সেবা: http://www.uscis.gov

 ডিএইচএস, ইউএস কাস্টমস এবং সীমান্ত সুরক্ষা: http://www.cbp.gov

ডিএইচএস, ইমিগ্রেশন এবং কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট: http://www.ice.gov

শ্রম দপ্তর: http://www.doleta.gov

প্রতারণামূলক ওয়েবসাইট এবং ইমেইল চেনা যাবে কিভাবে

কিছু ওয়েবসাইট এবং ইমেইলের মাধ্যমে প্রতারকরা যুক্তরাষ্ট্রের সরকারী ওয়েবসাইট গ্রাহকদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করে থাকে।

এই ওয়েবসাইটগুলো অফিসিয়াল ওয়েবসাইটের মতোই ডিজাইন করা থাকে। প্রায়শই যুক্তরাষ্ট্রের পতাকা, মার্কিন ক্যাপিটাল, হোয়াইট হাউস বা স্ট্যাচু অফ লিবার্টির ছবি থাকে৷

এই ওয়েবসাইট এবং ইমেইলগুলোয় যা অনুপস্থিত তা হল তাদের ঠিকানাগুলোর শেষে ".gov" ডোমেইন৷ মনে রাখতে হবে, “.gov" দিয়ে শেষ হয় না এমন ওয়েবসাইটকে সন্দেহভাজন হিসাবে বিবেচনা করা উচিত।

ইন্টারনেট জালিয়াতি বা অযাচিত ইমেইল দেখলে কি করবেন?

আপনি যদি ইন্টারনেট জালিয়াতির বিষয়ে অভিযোগ দায়ের করতে চান, তাহলে econsumer.gov এই লিংকে গিয়ে অভিযোগ দায়ের করতে হবে।

এছাড়া ফেডারেল ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন (এফবিআই) ইন্টারনেট ক্রাইম কমপ্লেইন্ট সেন্টার (আইসি৩) ওয়েবসাইটে যেতে পারেন।

অযাচিত ইমেইল সম্পর্কে অভিযোগ দায়ের করতে, বিচার বিভাগের সাথে যোগাযোগ করা যেতে পারে। তথ্য সূত্র বিবিসি বাংলা।