News update
  • $10mn Approved for Climate Resilience in CHT: ICIMOD     |     
  • At least 143 dead in DR Congo river boat fire tragedy     |     
  • Dhaka has worst air pollution in the world Saturday morning     |     
  • Container ships to ply between Mongla and Chattogram ports     |     
  • France to Break Away from UK & US in Recognising Palestine as Nation State     |     

মন্দার মেঘ কাটছে তৈরি পোশাক খাতে 

গ্রীণওয়াচ ডেস্ক অর্থনীতি 2024-01-30, 11:53am

kjahiaiofao-4610f442a13c2107518934526ffbbc5e1706593980.jpg




দীর্ঘদিনের সংকটময় পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠতে শুরু করেছে দেশের তৈরি পোশাক খাত। বৈশ্বিক মন্দার প্রভাবে বিগত কয়েক বছর ধরেই ক্রয়াদেশ নিয়ে বেশ বেগ পেতে হয়েছে দেশের গার্মেন্টস-টেক্সটাইলগুলোকে। কিন্তু গত তিন মাসে ফের বাড়তে শুরু করেছে ক্রয়াদেশ। এ ছাড়া, ইউরোপ ও আমেরিকার প্রচলিত বাজারের ওপর অতি নির্ভরতাও কাটতে শুরু করেছে। নতুন নতুন বাজার ধরতে সক্ষম হচ্ছে দেশের তৈরি পোশাকশিল্প। বাজারের পরিধি বাড়ায় মন্দার মেঘ কাটিয়ে নতুন আলো দেখতে পাচ্ছেন রপ্তানিকারকরা।

তৈরি পোশাক মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিজিএমইএ) তথ্য অনুযায়ী, গত অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর এই তিন মাসে ক্রয়াদেশ বেড়েছে ৬ দশমিক ৫৯ শতাংশ।

ইউরোপীয় ইউনিয়ন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি, যুক্তরাজ্য ও কানাডায় মুদ্রাস্ফীতি কমতে শুরু করায় তার সুবাতাস বইতে শুরু করে দেশের পোশাক শিল্পে; বাড়তে শুরু করেছে পোশাক রফতানির অর্ডার। এই খাতের উদ্যোক্তারা বলছেন, আগামী মাসগুলোতে আরও বেশি অর্ডার আসবে। এতে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভও বাড়বে।

বিজিএমইএ’র তথ্য অনুযায়ী, ইউটিলাইজেশন ডিক্লারেশনের (ইউডি) সংখ্যার ওপর ভিত্তি করে গত তিন মাসে রপ্তানি আদেশ এসেছে ৬ হাজার ৭৭১টি।‌ গত বছরের একই সময়ে যা ছিল ৬ হাজার ৩৫২টি। এই প্রবণতা বলছে, পোশাক রপ্তানির অর্ডারের হার দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।

এ প্রসঙ্গে বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি, যুক্তরাজ্য ও কানাডায় মুদ্রাস্ফীতি কমেছে। এ ছাড়া নতুন বাজারের দিকে এগিয়ে চলছি। সার্বিকভাবে চলমান বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনা করলে অর্ডার পাওয়ার ক্ষেত্রে আমরা ভালো অবস্থানে আছি। আগামী দিনে অর্ডার আরও বাড়তে পারে।

এদিকে ইইউর তথ্য অনুসারে, ইউরোজোনের বার্ষিক মুদ্রাস্ফীতির হার গত বছরের নভেম্বরে ছিল ২ দশমিক ৪ শতাংশ, যা অক্টোবরে ২ দশমিক ৯ শতাংশ থেকে কমেছে। কিন্তু চলমান রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং মধ্যপ্রাচ্য সংকটের ফলে ডিসেম্বরে এই হার বেড়ে দাঁড়ায় ৩ দশমিক ৪ শতাংশে। যদিও এক বছর আগে এই হার ছিল ১০ দশমিক ১ শতাংশ।

প্রসঙ্গত, তৈরি পোশাক রফতানিতে পণ্য ও বাজার বহুমুখীকরণের জন্য এক দশকের বেশি সময় ধরে চেষ্টা চালাচ্ছে এই খাতের উদ্যোক্তারা। সেই চেষ্টার অংশ হিসেবে বেশ কিছু কারখানা এখন ভ্যালু অ্যাডেড বা বেশি দামের বৈচিত্র্যময় তৈরি পোশাক রপ্তানি করছে। এদিকে নতুন বাজারের দিকেও ঝুঁকে সফলতা পেয়েছেন অনেকে। তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ২০০৯ সালে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানির ৫৮ দশমিক ৯০ শতাংশের গন্তব্য ছিল ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। ইইউ জোটে তখন যুক্তরাজ্যও ছিল। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রে ২৮ দশমিক ৭০ শতাংশ এবং কানাডায় ৪ দশমিক ৮৬ শতাংশ পোশাক রপ্তানি হতো। অর্থাৎ, রপ্তানি হওয়া তৈরি পোশাকের সাড়ে ৯২ শতাংশের গন্তব্য ছিল প্রচলিত বাজারগুলো।

কিন্তু দেড় দশকের ব্যবধানে নতুন বাজারে তৈরি পোশাক রপ্তানি বেড়ে ১৮ দশমিক ৭২ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। তাতে প্রচলিত বাজারগুলোর ওপর অতি নির্ভরতা কমে আসছে। ইতোমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে রপ্তানি ২৮ দশমিক ৭০ শতাংশ থেকে ১৭ দশমিক ৪৬ শতাংশে নেমেছে। একইভাবে কমেছে আমাদের কানাডা নির্ভরতাও। তবে, ইইউতে আমাদের রপ্তানি অনেকটা আগের মতোই আছে; যুক্তরাজ্য আমাদের কাছ থেকে ক্রয় বাড়িয়েছে।

রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) মতে, চলমান বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকট সত্ত্বেও বাংলাদেশের পোশাক খাত তার রপ্তানি আয়ের প্রবৃদ্ধি ১ দশমিক ৭২ শতাংশ ধরে রাখতে পেরেছে এবং চলতি অর্থবছরের জুলাই-ডিসেম্বর সময়ের মধ্যে ২৩ দশমিক ৩৯ বিলিয়ন ডলার আয় করেছে।

বিদায়ী বছরে ইইউতে ২ হাজার ৩৩৮, যুক্তরাষ্ট্রে ৮২৭, যুক্তরাজ্যে ৫৩৪, কানাডায় ১৫১ এবং নতুন বাজারে ৮৮৭ কোটি ডলারের পোশাক রফতানি হয়। অর্থাৎ একসময় যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে পিছিয়ে থাকলেও বর্তমানে বাজারটি থেকে এগিয়ে গেছে নতুন বাজার। শুধু তা-ই নয়, প্রবৃদ্ধিও অন্য যেকোনও বাজারের চেয়ে ভালো।

২০২৩ সালে নতুন বাজারে তৈরি পোশাক রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধি হয় সাড়ে ২০ শতাংশ। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি কমে ৮ দশমিক ৬৮ শতাংশের মতো। এছাড়া ইইউতে দেড় শতাংশ, কানাডায় ১ দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ ও যুক্তরাজ্যে ১২ দশমিক ৪৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে।

ইপিবির তথ্য অনুযায়ী, নতুন বাজারে বড় চমক জাপান ও অস্ট্রেলিয়া। দীর্ঘদিন ধরে জাপানের বাজারে এক বিলিয়ন বা ১০০ কোটি ডলারের ওপরে তৈরি পোশাক রপ্তানি হচ্ছে। গত বছর এই বাজারে পোশাক রপ্তানির পরিমাণ ছিল ১৬৮ কোটি ডলার। অর্থাৎ প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২৬ দশমিক ৫৩ শতাংশ। অথচ এই বাজারে ২০০৯ সালে রপ্তানি ছিল মাত্র ১১ কোটি ডলার। এর মানে, জাপানে গত ১৫ বছরে রপ্তানি বেড়েছে ১৫ গুণ।

বিদায়ী বছরে অস্ট্রেলিয়ায়ও তৈরি পোশাক রপ্তানিতে এক বিলিয়ন ডলারের মাইলফলক স্পর্শ করেছে বাংলাদেশ। ২০০৯ সালে এই বাজারে আমাদের দেশ থেকে পোশাক রপ্তানি হয়েছিল ৭ কোটি ডলারের। গত বছর সেটি ১২৮ কোটি ডলার হয়েছে। বিদায়ী বছরে অস্ট্রেলিয়ায় পোশাক রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধি হয় ৩৮ শতাংশ।

এদিকে ভারতের বাজারেও বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের চাহিদা দ্রুতগতিতে বাড়ছে। ২০০৯ সালে বাজারটিতে পোশাক রপ্তানি হয়েছিল ৮০ লাখ ডলারের। ১০ বছরের ব্যবধানে ২০১৯ সালে সেই রপ্তানি বেড়ে দাঁড়ায় ৫১ কোটি ডলার। কিন্তু পরের বছর করোনার কারণে রপ্তানি কমে। গত দুই বছর দেশটিতে পোশাক রপ্তানি ছিল যথাক্রমে ৯০ ও ৯২ কোটি ডলার। বিদায়ী বছরে এই বাজারে প্রবৃদ্ধি হয় ২ দশমিক ২০ শতাংশ। তথ্য সূত্র আরটিভি নিউজ।