News update
  • Climate summit hears countries suffering from global warming      |     
  • How to Visit Saint Martin’s Island in This Tourist Season 2025-26     |     
  • Khulna-Mongla dream rail line struggles for freight flow     |     
  • Guterres Urges Fair, Fast, Final Shift to Clean Energy     |     
  • US Shutdown Triggers Over 1,000 Flight Cancellations     |     

বৈশ্বিক পোশাকখাতের পাওয়ার হাউস বাংলাদেশ : ডব্লিউইএফ

গ্রীণওয়াচ ডেস্ক অর্থনীতি 2024-02-24, 10:36am

image-170125-1708743247-1ad77c06bce65b913e7db3068ec724771708749491.jpg




বাংলাদেশের টেক্সটাইল ও পোশাক শিল্প বৈশ্বিক পোশাকখাতের পাওয়ার হাউসে পরিণত হয়েছে বলে জানিয়েছে বিশ্ব অর্থনৈতিক সংস্থা (ডব্লিউইএফ)।

সম্প্রতি ডব্লিউইএফ ‘বাংলাদেশের দারিদ্র্য থেকে টেক্সটাইল পাওয়ার হাউসে অতিক্রম করণ আফ্রিকার দেশগুলোর জন্য শিক্ষার’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বৈশ্বিক টেক্সটাইল ও পোশাক শিল্পের পাওয়ার হাউসে পরিণত হওয়ায় বাংলাদেশের দারিদ্র্যের হার অর্ধেকে নেমেছে এবং মোট দেশজ উৎপাদন উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। বাজারমুখী নীতি, বেসরকারিকরণ, বাণিজ্য উদারীকরণ এবং কৌশলগত বৈদেশিক বিনিয়োগ বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি ও শিল্প প্রবৃদ্ধিকে ত্বরান্বিত করার মূল চাবিকাঠি ছিল।

ডব্লিউইএফ’র ব্লগে ইন্টারন্যাশনাল ফিন্যান্স কর্পোরেশনের (আইএফসি) ম্যানুফ্যাকচারিং ইনভেস্টমেন্ট অ্যান্ড ট্রেড সাপ্লায়ার ফাইন্যান্সের গ্লোবাল ম্যানেজার ফেমি আকিনরেবিয়ো বলেছেন, যেহুতু বাংলাদেশ তার অর্থনীতিকে বৈচিত্র্যময় এবং ভ্যালু চেইনে আরোহণ করতে চায়, সে জন্য আফ্রিকা পোশাক শিল্পের পরবর্তী সীমানা হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। যা একই ধরনের আন্তর্জাতিক সমর্থন থেকে উপকৃত হচ্ছে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ সত্তরের দশকের শুরুতে ৯ মাস যুদ্ধের পর পাকিস্তানের কাছ থেকে স্বাধীনতা লাভ করে। সে সময় দেশটি অত্যন্ত দরিদ্র ও ঘনবসতিপূর্ণ দেশ হিসেবে আবির্ভূত হয়েছিল। তখন দেশেটির অর্থনীতির মুলভিত্তি ছিল পাট, যা জনগণকে খাদ্য যোগাতেও অক্ষম ছিল। এরপর ১৯৭৪ সালে দেশটি এমন একটি ভয়াবহ দুর্ভিক্ষের কবলে পড়ে যাকে ‘পরমাণু হামলার পরের সকালের মতো’ বর্ণনা করেছিলেন ওই সময় দেশটিতে সফররত বিশ্বব্যাংকের একজন অর্থনীতিবিদ। এর কিছু বছর পর বিদেশী বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার জন্য একটি সরকারী প্রচারণা ফলপ্রসূ হয়েছিল। যা দেশটির কৃষি অর্থনীতিকে টেক্সটাইল এবং পোশাক উৎপাদনে পাওয়ার হাউসে রূপান্তরিত করেছে। এ শিল্পকে এমন একটি অলৌকিক অর্থনৈতিক ও সামাজিক প্রত্যাবর্তন হিসাবে বর্ণনা করা যেতে পারে যা আজ উন্নয়নশীল দেশগুলো অনুকরণ করার চেষ্টা করছে।

আকিনরেবিয়ো বলেন, বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি বৃদ্ধির মূলে রয়েছে দেশটির শিল্পের বেসরকারিকরণ, বাণিজ্য উদারীকরণ ও বাজারমুখী নীতি। রেডি-টু-ওয়্যার পোশাক বৃদ্ধির ‘ইঞ্জিন’ হয়ে সুতির টি-শার্ট, প্যান্ট, পুলওভার এবং ডেনিম তার প্রিয় স্পট হয়ে উঠেছে। গত এক দশকে দেশটি তার অর্থনীতিকে বিশ্বের ৩৫তম বৃহত্তম দেশে উন্নীত করেছে। লাখ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান করেছে এবং দারিদ্র্যের হার অর্ধেকে নামিয়ে এনেছে। কোভিড-১৯ মহামারীর আগে দেশটির অর্থনীতি বার্ষিক ৭ শতাংশ হারে বৃদ্ধি পেয়েছিল, জিডিপি বেড়ে প্রায় ২ হাজার ৫০০ ডলারে উন্নীত হয়েছিল, যা ভারতকেও ছাড়িয়ে গিয়েছিল।

তিনি আরও বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশের রপ্তানি আয়ের ৮৪ শতাংশই আসে শুধু পোশাক থেকে। চূড়ান্তভাবে ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশের লক্ষ্য উচ্চ আয়ের দেশে পরিণত হওয়া। আর এর মুল অস্ত্র দেশটির পোশাক খাত। তবে সফল শিল্পায়ন নীতির জন্য ধন্যবাদ পাওয়ার যোগ্য বাংলাদেশ। এগুলোর মধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের সঙ্গে অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে আলোচনা করা এবং রফতানি অঞ্চলগুলোতে যন্ত্রপাতি আমদানির শুল্কমুক্ত অনুমতি দেওয়া।

আইএফসি‘র এ কর্মকর্তা বলেন, বাংলাদেশ ৩ হাজার ৫০০টিরও বেশি কারখানায় ৪০ লাখ লোকের কর্মসংস্থান করেছে। দেশটি ১৬৭টি দেশে ৪৩ বিলিয়ন ডলারের পণ্য রপ্তানি করে। পোশাক কাটা, সেলাই ও একত্রিত করা কঠিন এবং ক্লান্তিকর ও সস্তা শ্রমের ওপর নির্ভর করে সাধারণত রফতানি-নেতৃত্বাধীন বৃদ্ধির মডেলগুলো চিরকাল স্থায়ী হয় না। তবে বাংলাদেশ সাফল্যের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে এবং পরিকল্পনার পরবর্তী ধাপে রয়েছে।

২০২৩ সালের অক্টোবরে বাংলাদেশ আসেন ফেমি আকিনরেবিয়ো। সেই অভিজ্ঞতা তুলে ধরে তিনি বলেন, বাংলাদেশের পোশাক শিল্পে মূলত নারী শ্রমশক্তির আধিপত্য রয়েছে, যাদের কাজে কারখানার ফ্লোর থেকে অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি উপকৃত হয়েছে। ইন্টারন্যাশনাল ফিন্যান্স কর্পোরেশন (আইএফসি) এবং আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএফসি) কর্মসূচি কারখানায় কাজের পরিবেশ উন্নত করেছে, লিঙ্গ বৈচিত্র্যকে উন্নত করেছে এবং নারীদের জন্য ব্যবস্থাপনার সুযোগ তৈরি করেছে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের এই অভিন্ন সমৃদ্ধির সামাজিক প্রভাব সুদূরপ্রসারী। প্রতিবেশি দেশগুলোর তুলনায় বাংলাদেশের নারীরা বেশি শিক্ষিত, দেশটির তিন-চতুর্থাংশ নারী শিক্ষিত। প্রতিবেশিদের তুলনায় দেশটির নারীদের শিক্ষা গ্রহণ, উচ্চ বেতনের চাকরি এবং স্বাস্থ্যবান সন্তান ধারণের সম্ভাবনা বেশি। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সামান্য সহায়তায় উন্নয়নের সামাজিক ও টেকসই সুফল পোশাক উৎপাদনকারী দেশগুলোর পরবর্তী ক্লাস্টারে স্থানান্তরিত হবে।সূত্র : ডব্লিউইএফ ওয়েবসাইট