News update
  • NCC for referendum, after July Charter order promulgation     |     
  • World Enters New Era of Climate Action, Urgent Steps Needed     |     
  • Israel Accused of Four Genocidal Acts in Gaza, UN Told     |     
  • BNP rejects Consensus Commission’s call for pre-poll referendum     |     
  • At Least 64 Killed in Deadly Rio Drug Gang Raids     |     

চীন-আর্জেন্টিনা সম্পর্ক উদীয়মান বাজারদেশগুলোর জন্য ঐক্য ও সহযোগিতার দৃষ্টান্তস্বরূপ

ওয়াং হাইমান ঊর্মি কুটনীতি 2022-09-30, 4:28pm




‘গত অর্ধ শতাব্দীতে, দুই দেশের সম্পর্ক আন্তর্জাতিক পরিস্থিতির পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে; উদীয়মান বাজারদেশ ও উন্নয়নশীল দেশগুলোর মধ্যে সংহতি, সহযোগিতা, ও যৌথ উন্নয়নের দৃষ্টান্ত হয়ে উঠেছে।’ গত ২৮ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায়, চীনা প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং চীন-আর্জেটিনা মানবিক বিনিময় উচ্চ-স্তরের ফোরামে পাঠানো এক শুভেচ্ছাবার্তায় এ কথা বলেন। 

শুভেচ্ছাবার্তায় সি চিন পিং বলেন, এ ফোরাম চীন-আর্জেটিনা সার্বিক কৌশলগত অংশীদারিত্বের সম্পর্কের একটি নতুন অধ্যায় উন্মোচন করতে, নতুন সময়পর্বে চীন-আর্জেটিনা অভিন্ন স্বার্থের কমিউনিটি গড়ে তুলতে, এবং মানবজাতির অভিন্ন স্বার্থের কমিউনিটি গড়ে তুলতে সহায়ক হবে। 

একই ফোরামে পাঠানো এক শুভেচ্ছাবার্তায় আর্জেটিনার প্রেসিডেন্ট ফার্নান্দেজ বলেন, দু’পক্ষের সহযোগিতা গভীরতর করা, আর্জেটিনা ও চীনের সার্বিক কৌশলগত অংশীদারিত্বের সম্পর্ককে এগিয়ে নেওয়া, এবং দু’দেশের জনগণের কল্যাণ ও বিশ্বের শান্তির জন্য আরও বেশি অবদান রাখা হবে বলে তিনি আশা করেন। 

চলতি বছর চীন ও আর্জেন্টিনার মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার ৫০তম বার্ষিকী। কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার ৫০তম বার্ষিকী এবং ‘চীন-আর্জেটিনা বন্ধুত্ব ও সহযোগিতার বর্ষ’ উদযাপনের একটি গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রম হিসাবে, চীন ও আর্জেটিনার শীর্ষনেতৃবৃন্দ পৃথক পৃথকভাবে এবারের ফোরামে শুভেচ্ছাবার্তা পাঠালেন। এর মধ্য দিয়ে নতুন সময়পর্বে চীন ও আর্জেটিনার সহযোগিতার ওপর দু’পক্ষ থেকেই বেশ গুরুত্ব দেওয়া হলো। আর্জেন্টিনার কো-অপারেটিভ রেডিওর পরিচালক মার্টিন সিগনার বলেছেন, ‘আমি মনে করি, প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের শুভেচ্ছাবার্তাটি সত্যিই আমাদের দুই দেশের জনগণের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটিয়েছে।’ 

বিগত ৫০ বছরে, চীন ও আর্জেটিনা একটি ‘দূরবর্তী বন্ধু’ থেকে একটি ‘সার্বিক কৌশলগত অংশীদারিত্বে’ বিকশিত হয়েছে, যা কেবল যে দুই দেশের জনগণের জন্য বাস্তব সুবিধা নিয়ে এসেছে, তা নয়, বরং দু’দেশের জন্য সার্বিক কল্যাণ বয়ে এনেছে। 

শুভেচ্ছাবার্তায় প্রেসিডেন্ট সি’র ‘চীন ও আর্জেটিনা পরস্পরের ভালো বন্ধু ও ভালো অংশীদার’ শীর্ষক বক্তব্য গত অর্ধ শতাব্দীর দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উন্নয়ন দ্বারা যাচাইকৃত। দুই পক্ষের মধ্যে সংহতি, সহযোগিতা এবং অভিন্ন উন্নয়নের ভিত্তি একে অপরের সার্বভৌম স্বার্থ এবং পারস্পরিক দৃঢ় সমর্থনের সঙ্গে জড়িত। এই বছরের ফেব্রুয়ারিতে দু’দেশের সার্বিক কৌশলগত অংশীদারিত্বকে আরও গভীর করাসংক্রান্ত এক যৌথ বিবৃতিতে আর্জেটিনার ‘এক চীননীতি’ মেনে চলার কথা আরেকবার ঘোষণা করা হয়, এবং মালভিনাস দ্বীপপুঞ্জের ইস্যুতে সার্বভৌমত্বের পূর্ণ অনুশীলনের জন্য আর্জেন্টিনার অনুরোধের প্রতি চীন তার সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করে। 

চীন ও আর্জেটিনার আর্থ-বাণিজ্যিক সম্পর্কের সুষ্ঠু ও স্থিতিশীল উন্নয়ন দু’পক্ষের জনগণের জন্য কল্যাণকর। ২০২১ সালে চীন ও আর্জেটিনার দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের পরিমাণ ২৮.৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ১৭.৮৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছায়। আর্জেটিনার দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদার চীন। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে দু’পক্ষ ‘এক অঞ্চল, এক পথ’ উদ্যোগের আওতায় সহযোগিতা-স্মারকলিপিসহ কয়েক ডজন চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। এর মধ্যে রয়েছে কৃষি, ডিজিটাল অর্থনীতি ও সবুজ উন্নয়নসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রের চুক্তি। 

বর্তমানে চীন ও আর্জেটিনা—দু’দেশই মহামারী-উত্তর অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার ও জনগণের জীবনমান উন্নয়নের গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুর মুখোমুখি। ‘এক অঞ্চল, এক পথ’ প্রতিষ্ঠাকাজকে এগিয়ে নেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে চীন ও আর্জেটিনা সহযোগিতার ভিত্তি আরও জোরদার করছে, যা উন্নয়ন সমস্যার সমাধানে আরও বেশি চালিকাশক্তি যোগাবে। চীন ও আর্জেটিনার যৌথ উদ্যোগে নির্মিত ‘বিশ্বের সর্বদক্ষিণে’ জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র, ‘কিসে’ জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের নির্মাণকাজ সমাপ্তির পর, গড় বার্ষিক বিদ্যুৎ উৎপাদন ৪.৯৫ বিলিয়ন কিলোওয়াট ঘন্টায় পৌঁছাবে, যা  আর্জেটিনার প্রতি বছর তেল ও গ্যাস আমদানি বাবদ ব্যয় ১.১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার সাশ্রয় করবে। 

বিগত ৫০ বছরে চীন ও আর্জেটিনার সম্পর্কের ব্যাপক ও দ্রুত বিকাশ যেন চীন-ল্যাটিন আমেরিকা সম্পর্কের প্রাণশক্তির একটি ক্ষুদ্র সংস্করণ। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে, ল্যাটিন আমেরিকার ‘চীন ক্রেজ’ এবং চীনের ‘ল্যাটিন আমেরিকা ক্রেজ’ একই সাথে লক্ষ্য করা গেছে। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত, ল্যাটি আমেরিকায় চীনের রপ্তানি ছিল ৯৪৭.৭৬ বিলিয়ন ইউয়ান, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ২১.৪ শতাংশ বেশি। আর আমদানির পরিমাণ ছিল ৮৮৫.৪২ বিলিয়ন ইউয়ান, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৮ শতাংশ বেশি। এই চমকপ্রদ সাফল্যের পিছনে রয়েছে চীন ও ল্যাটিন আমেরিকার দেশগুলোর মধ্যে সংহতি, সহযোগিতা এবং অভিন্ন উন্নয়ন। 

(ওয়াং হাইমান ঊর্মি, সাংবাদিক, বাংলা বিভাগ, চায়না মিডিয়া গ্রুপ, বেইজিং, চীন।)