News update
  • Bangladesh Faces $1.25 Billion Export Loss from US Tariffs     |     
  • Israel Expands Gaza Assault as UN Warns of ‘Genocide’     |     
  • World Ozone Day Highlights Progress and Future Action     |     
  • DG Health Services gives 12 directives to treat dengue cases     |     
  • Stock market shows recovery as investors back: DSE chairman     |     

জি-২০ সামিট: ভারত থেকে ফিরে যুক্তরাজ্যে বিরোধীদের কঠোর প্রশ্নের মুখে প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক

গ্রীণওয়াচ ডেস্ক কুটনীতি 2023-09-15, 6:56am

01000000-0a00-0242-fab0-08dbb5549554_w408_r1_s-ff44caba18436b450cd813ed9ef233f51694739367.jpeg




ভারতের রাজধানী দিল্লিতে গত ৯ ও ১০ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হয়ে যাওয়া জি-২০ শীর্ষ সম্মেলন নজিরবিহীন সাফল্য লাভ করেছে, সম্মেলন শেষে গত কয়েকদিন ধরেই এমন প্রচার চালাচ্ছে ভারতের কেন্দ্র সরকার তথা বিজেপি। সাফল্যের পুরো কৃতিত্ব প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে দিতে বুধবার ১৩ সেপ্টেম্বর দিল্লিতে দলের সদর দফতরে তাকে সংবর্ধনাও দেয় পদ্ম শিবির। পুষ্পবৃষ্টি করে বরণ করা হয় প্রধানমন্ত্রীকে। দলের পার্টির সদর দরজায় অমিত শাহ, রাজনাথ সিং, জেপি নাড্ডারা লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন প্রধানমন্ত্রীকে অভিবাদন জানাতে। সংসদের আসন্ন বিশেষ অধিবেশনেও জি-২০-র সাফল্য নিয়ে সরকার প্রস্তাব পাশ করাবে বলেও ঠিক হয়ে আছে।

এদিকে, এই সম্মেলনে যোগ দিতে এসে দিল্লিতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক আলোচনার বিষয়বস্তু নিয়ে যুক্তরাজ্যের সংসদে কঠোর প্রশ্নের মুখে পড়েছেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক। বিরোধীরা একের পর এক প্রশ্ন ছুড়ে দেন প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে।

লেবার পার্টির এমপি ব্যারি শিরম্যান প্রশ্ন করেন, "ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদীর সঙ্গে আমাদের প্রধানমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক দেখে আমরা অনেকেই বেশ আপ্লুত হয়েছিলাম। জানতে চাই, মোদীর সঙ্গে আমাদের প্রধানমন্ত্রী যখন একান্ত বৈঠক করেন তখন তিনি কি তাকে জিজ্ঞেস করেছিলেন, কেন ইউক্রেন আক্রমণের জন্য রাশিয়ার নিন্দা করছে না ভারত? দ্বিতীয়ত, জানতে চাই, তিনি কি মোদীকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন ভারতে মুসলিম ও খ্রিস্টানদের উপর নিপীড়ন, মসজিদ ও গির্জা জ্বালিয়ে দেওয়া এবং মানুষ হত্যা বন্ধে তিনি কী পদক্ষেপ করেছেন?"

শুধু শিরম্যান-ই নন, যুক্ত্রাজ্যের বিরোধী দলনেতা-সহ বিরোধী দলের একাধিক এমপি সুনাকের দিল্লি সফর এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচ্য নিয়ে তীক্ষ্ণ প্রশ্নবাণে বিদ্ধ করেন ঋষি সুনাককে। তার মধ্যে শিরম্যান-এর প্রশ্নটিই ছিল সবচেয়ে অস্বস্তির। সুনাক প্রশ্ন শোনা মাত্র উঠে দাঁড়ালেও স্পষ্ট জবাব দেননি। তিনি বলেন, "মানবাধিকার এবং গণতন্ত্রকে সুরক্ষার বিষয়ে আমাদের কথা হয়েছে।"

প্রসঙ্গত, মণিপুরের ঘটনা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের মতো যুক্তরাজ্যের মানবাধিকার সংগঠনগুলিও সরব। এছাড়া প্রধানমন্ত্রী মোদীর সময়ে ভারতে সংখ্যালঘু বিশেষ করে মুসলিম ও খ্রিস্টানদের উপর উগ্র হিন্দুত্ববাদীদের হামলা এবং সরকারের ভূমিকা নিয়েও সরব সে দেশের নাগরিক সমাজ ও মানবাধিকার সংগঠনগুলি।

সুনাককে এক বিরোধী সাংসদ প্রশ্ন করেন, "২০১৫ সালে নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছিল ভারতকে উন্নয়ন সহায়তা করবে না যুক্তরাজ্য। সেই নীতি কি সরকার মানছে?" ঋষি জবাব দেন, "অবশ্যই মানা হচ্ছে। ভারতে যুক্তরাজ্য বিনিয়োগ অব্যাহত আছে। কিন্তু সরকারি তহবিল থেকে উন্নয়ন অনুদান দেওয়া হয় না।"

যুক্তরাজ্যের সংসদের এই বিতর্ককে হাতিয়ার করেছে কংগ্রেস। সে দেশের প্রধানমন্ত্রীকে বিরোধীদের প্রশ্নবাণে নাস্তানাবুদ করার বিষয়টি উল্লেখ করে প্রবীণ কংগ্রেস নেতা তথা দেশের প্রাক্তন স্বরাষ্ট্র ও অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরম দেশবাসীর উদ্দেশে বলেছেন, "সবাইকে বলব, ব্রিটিশ সংসদের এই বিতর্ক সংক্রান্ত রিপোর্টে চোখ বোলাতে। একজন প্রধানমন্ত্রী দেশে ফেরার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সংসদে বিরোধীদের প্রশ্নের মুখে পড়েছেন। বিতর্কে কে হারল আর কে জিতল সেটা বড় কথা নয়। বিরোধীদের শানিত প্রশ্নের তৎক্ষণাৎ জবাব দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী। যা ভারতে এখন কল্পনাই করা যায় না। যদিও জওহরলাল নেহরুর সময় ব্রিটিশ পার্লামেন্টের মতোই বিতর্ক হত ভারতের সংসদে।"

বিশেষজ্ঞদের পর্যবেক্ষণ, জি-২০ সম্মেলনে আসা বিদেশি রাষ্ট্রপ্রধানদের মধ্যে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রীই সবচেয়ে বেশি মন জয় করতে পেরেছেন ভারতের। লন্ডন থেকে দিল্লির বিমানে ওঠার সময়ই তিনি বলেন, "দিল্লিতে জি-২০ সম্মেলন এক সঠিক সিদ্ধান্ত। উপযুক্ত দেশেই সম্মেলন হচ্ছে।" ভারতে পা রেখেই তিনি সরব হন যুক্তরাজ্যে খালিস্তানি জঙ্গি তৎপরতা নিয়ে। নিজেই ঘোষণা করেন, যুক্তরাজ্যকে খালিস্তানি জঙ্গি মুক্ত করা হবেই। জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে তিনি ভারতের পাশে আছেন। লন্ডনে ফিরে জি-২০-র সাফল্য নিয়ে বিবৃতি দেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী।

এর বিপরীত করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। দিল্লিতে কূটনৈতিক সৌজন্য রক্ষা করলেও ভিয়েতনাম গিয়ে ভারত সরকারকে অস্বস্তিতে ফেলেছেন। দিল্লিতে তার ও প্রধানমন্ত্রী মোদীর যৌথ সাংবাদিক সম্মেলন হয়নি। যুক্তরাষ্ট্রের দাবি, ভারত সরকারের আপত্তিতেই রীতি ভাঙতে হয়েছে। অতিথি দেশ না চাইলে তাদের কিছু করার থাকে না। যদিও দুই রাষ্ট্রপ্রধানের বৈঠকের পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হওয়াই যুক্তরাষ্ট্রের রীতি। দিল্লিতে সাংবাদিক বৈঠক না হওয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের মিডিয়ায় তুমুল সমালোচনা হয় ভারতের।

ফলে ভিয়েতনামের রাজধানী হ্যানয়-এ গিয়ে প্রেসিডেন্ট বাই়ডেন মোদীর সঙ্গে তার আলোচনার নির্যাস জানান। বলেন, "ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে আমি মানবাধিকার, গণতন্ত্র, সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা রক্ষার মতো বিষয়গুলি নিয়ে উদ্যোগী হতে বলেছি।" রাজনৈতিক মহলের মতে, বাইডেন-এর এই সিদ্ধান্তে নয়া দিল্লি অখুশি। যদিও সরকারিভাবে এখনও ভারতের বিদেশ মন্ত্রক এই ব্যাপারে কোনও প্রতিক্রিয়া দেয়নি। তথ্য সূত্র আরটিভি নিউজ।