News update
  • $10mn Approved for Climate Resilience in CHT: ICIMOD     |     
  • At least 143 dead in DR Congo river boat fire tragedy     |     
  • Dhaka has worst air pollution in the world Saturday morning     |     
  • Container ships to ply between Mongla and Chattogram ports     |     
  • France to Break Away from UK & US in Recognising Palestine as Nation State     |     

ইসরায়েলের সাথে সব ধরনের বাণিজ্য স্থগিত করলো তুরস্ক

গ্রীণওয়াচ ডেস্ক কুটনীতি 2024-05-03, 12:31pm

10ec9b90-08fb-11ef-ba50-6f71bf12e7b4-c081d1f734cada40664d6ea847a177611714717906.jpg




গাজা উপত্যকায় ‘ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়’কে কারণ হিসেবে উল্লেখ করে ইসরায়েলের সাথে সব ধরনের বাণিজ্য স্থগিত করেছে তুরস্ক।

দেশটির বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বলেছে, ইসরায়েল গাজায় ‘বাধাহীন ও যথেষ্ট পরিমাণ ত্রাণ প্রবাহ’ অনুমতি না দেয়া পর্যন্ত এ পদক্ষেপ বহাল থাকবে।

দেশ দুটির মধ্যে বার্ষিক বাণিজ্যের পরিমাণ প্রায় সাত বিলিয়ন ডলার।

ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রেচেপ তাইপ এরদোয়ানকে ‘স্বৈরশাসক’ এর মতো আচরণের দায়ে অভিযুক্ত করেছেন।

সামাজিক মাধ্যম এক্স-এ ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী কাৎয বলেছেন, মি. এরদোয়ান ‘তুরস্কের জনগণ ও ব্যবসায়ীদের স্বার্থকে অসম্মান করেছেন এবং আন্তর্জাতিক বাণিজ্যিক সমঝোতাকে উপেক্ষা করেছেন’।

তিনি জানান যে তিনি মন্ত্রণালয়কে ইতোমধ্যেই নির্দেশ দিয়েছেন যে তুরস্কের সাথে বাণিজ্যের বিকল্প সন্ধান করতে যাতে স্থানীয় উৎপাদন এবং অন্য দেশ থেকে আমদানিতে জোর দেয়া হবে।

অন্যদিকে এক বিবৃতিতে তুরস্ক জানিয়েছে যে এই বাণিজ্য স্থগিত করার সিদ্ধান্ত সব ধরনের পণ্যের ক্ষেত্রেই কার্যকর হবে।

“তুরস্ক কঠোরভাবে ও সন্দেহাতীতভাবেই নতুন সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করবে যতদিন পর্যন্ত ইসরায়েল সরকার গাজায় বাধাহীন ও পর্যাপ্ত ত্রাণ প্রবাহের অনুমোদন না দেয়,” বিবৃতিতে বলা হয়েছে।

১৯৪৯ সালে প্রথম মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ হিসেবে ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দেয় তুরস্ক। তবে সাম্প্রতিক দশকগুলোতে দেশ দুটির মধ্যকার সম্পর্কের অবনতি হয়েছে।

২০১০ সালে গাজায় তুরস্ক মালিকানাধীন জাহাজ ইসরায়েলের সমুদ্রসীমা লঙ্ঘন করার সময় ইসরায়েলি কমান্ডোদের সাথে সংঘর্ষে দশজন ফিলিস্তিনপন্থী তুর্কি অধিকারকর্মী নিহত হবার ঘটনায় তুরস্ক কূটনৈতিক সম্পর্কও ছিন্ন করেছিলো।

পরে ২০১৬ সালে আবার দেশ দুটির মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনস্থাপন হয়। কিন্তু এর দুই বছরের মাথায় উভয় দেশ একে অন্যের শীর্ষ কূটনীতিককে বহিষ্কার করে গাজা সীমান্তে ইসরায়েল কর্তৃক ফিলিস্তিনি নিহত হবার ঘটনায়।

মি. এরদোয়ান গত সাতই অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলার পর ইসরায়েলের তীব্র সমালোচনা করে আসছেন।

গত জানুয়ারিতে তিনি বলেছেন হামাসের হামলার জবাবে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু যে সামরিক অভিযান চালিয়েছেন তা ‘হিটলার যা করেছিলো তার চেয়ে কোন অংশে কম নয়’।

জবাবে মি. নেতানিয়াহু বলেছেন: “এরদোয়ান, যিনি কুর্দিদের বিরুদ্ধে গণহত্যা সংঘটিত করেছেন এবং যিনি তার শাসনের বিরোধিতা করায় সাংবাদিক বন্দীর ক্ষেত্রে বিশ্বরেকর্ড করেছেন, তিনিই হলেন শেষ ব্যক্তি যিনি আমাদের নৈতিকতা শেখাচ্ছেন’।

গাজা উপত্যকার পরিস্থিতি নিয়ে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে সমালোচনা বাড়ছে। জাতিসংঘ সমর্থিত এক পর্যালোচনায় দেখা গেছে গত মাসে এগার লাখ মানুষ তীব্র ক্ষুধায় জর্জরিত ছিলো এবং এ মাসের মধ্যে গাজার উত্তরাঞ্চলে দুর্ভিক্ষের পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে।

বৃহস্পতিবার হোয়াইট হাউজ বলেছে, গাজা উপকূলে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী যে পিয়ার নির্মাণ করেছে ত্রাণ প্রবাহ বাড়ানোর জন্য সেটি কয়েকদিনের মধ্যেই উন্মুক্ত করে দেয়া হবে।

ভাসমান ওই পিয়ারে নৌযান ও লোকজনের কাজের ছবিও প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। তার কাছেই নৌবাহিনীর জাহাজ ছিলো।

যদিও জাতিসংঘ বলেছেন সামুদ্রিক করিডোর কখনো স্থলপথে ত্রাণ সরবরাহের বিকল্প হতে পারে না। আর সড়কপথ হলো একমাত্র উপায় যেখানে একসাথে অনেক পরিমাণ ত্রাণ নেয়া যায়।

এর আগ আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর বারংবার অনুরোধের প্রেক্ষাপটে চলতি সপ্তাহে গাজার উত্তরাঞ্চলে ত্রাণ সরবরাহের জন্য ইসরায়েল ইরেয ক্রসিং আবার খুলে দিয়েছে।

তবে জর্ডান বলেছে তাদের কিছু ত্রানবাহী লরি ওই ক্রসিং পার হওয়ার সময় ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারীদের হামলার শিকার হয়েছে।

জাতিসংঘের রিপোর্ট বলছে গাজার মানবিক বিপর্যয় একটি মানব সৃষ্ট দুর্ভিক্ষে রূপান্তরিত হতে যাচ্ছে।

জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক সিনিয়র কর্মকর্তা ভলকার তুর্ক বিবিসিকে বলেছেন যে এটা এখন ‘বিশ্বাসযোগ্য’ যে ইসরায়েল ক্ষুধাকে গাজা যুদ্ধে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে।

ইসরায়েল ত্রাণ সরবরাহ সীমিত করার অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে। দেশটি গাজায় যাদের প্রয়োজন তাদের মধ্যে ত্রাণ বিতরণে ব্যর্থতার অভিযোগ এনেছে জাতিসংঘের বিরুদ্ধে।

সাতই অক্টোবরের হামলার প্রতিক্রিয়ায় হামাসকে ধ্বংস করতে গাজায় ইসরায়েল যে সামরিক অভিযান চালিয়েছে তাতে ৩৪ হাজার ৫০০ মানুষের মৃত্যুর খবর দিয়েছে হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এর আগে হামাসের হামলায় ইসরায়েলে বারশ মানুষ নিহত হয়েছিলো এবং তারা আরও ২৫৩জনকে জিম্মি করেছিলো।

মধ্যস্থতাকারীরা এখন যুদ্ধবিরতি নিয়ে সবশেষ আসা প্রস্তাবের বিষয়ে হামাসের প্রতিক্রিয়ার জন্য অপেক্ষা করছে।

খবর অনুযায়ী এবারের প্রস্তাবে চল্লিশ দিনের যুদ্ধবিরতির কথা বলা হয়েছে এবং এর বিনিময়ে ইসরায়েলি জিম্মি ও ফিলিস্তিনি কিছু বন্দী মুক্তি পাবে। বিবিসি বাংলা।