News update
  • France to Break Away from UK & US in Recognising Palestine as Nation State     |     
  • Storm Alert Issued for Dhaka and Eight Other Regions     |     
  • 58 killed in deadliest US strike on Yemen     |     
  • BNP Opposes Reforms to Constitution’s Core Principles      |     
  • Time to Repair Bangladesh–Pakistan Ties     |     

ইব্রাহিম রাইসিঃ ইরানের রক্ষণশীল প্রেসিডেন্ট যে কারণে আলোচিত

গ্রীণওয়াচ ডেস্ক কুটনীতি 2024-05-20, 10:10am

frtrtrwtwtw-0d31761c5502fc469d6e12b35459a2eb1716178201.jpg




ইরানের রক্ষণশীল প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসিকে দীর্ঘ দিন ধরে দেশের সর্বোচ্চ নেতার একজন শিষ্য এবং শিয়া ধর্মশাসনে তাঁর সম্ভাব্য উত্তরসূরিদের অন্যতম হিসেবে গণ্য করা হতো।

রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমে রবিবার রাইসির হেলিকপ্টারের “কঠিন অবতরনের” খবর প্রেসিডেন্টের উপর নতুন করে মনোযোগ আকর্ষণ করেছে।

রাইসি এমন সময়ে প্রেসিডেন্ট হন যখন ইরান একটি সামাজিক সঙ্কটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে এবং পারমানবিক কর্মসূচির কারণে দেশের অর্থনীতি যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার চাপে কঠিন সময় পার করছে।

গত বছর ৭ অক্টোবর গাজায় যে যুদ্ধ শুরু হয়, তা আঞ্চলিক উত্তেজনা আবার তুঙ্গে নিয়ে যায়। কয়েক দফা পাল্টা-পালটি ঘটনার পর ২০২৪ সালের এপ্রিল মাসে ইরান সরাসরি ইসরায়েলের উপর শত শত ক্ষেপণাস্ত্র আর ড্রোন নিক্ষেপ করে।

রবিবার বাঁধ উদ্বোধন করার পর এক ভাষণে রাইসি ফিলিস্তিনিদের প্রতি ইরানের সমর্থনের উপর জোর দেন। ফিলিস্তিনের প্রতি সমর্থন ১৯৭৯ সালে ইসলামি বিপ্লবের পর থেকে ইরানের পররাষ্ট্র নীতির প্রধান বিষয়গুলোর অন্যতম।

“আমরা বিশ্বাস করি যে, ফিলিস্তিন হচ্ছে মুসলিম বিশ্বের জন্য প্রথম ইস্যু,” রাইসি বলেন।

বিচার বিভাগে তরুণ রাইসি

রাইসি ১৯৬০ সালে ইরানের পবিত্র শহর মাশহাদে জন্মম গ্রহণ করেন এবং অল্প বয়সে উচ্চ পর্যায়ের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। মাত্র ২০ বছর বয়সে তাঁকে তেহরানের কাছে কারাজের প্রসেকিউটার-জেনেরাল নিয়োগ করা হয়।

তিনি ১৯৮৯ থেকে ১৯৯৪ সাল পর্যন্ত তেহরানের প্রসেকিউটার-জেনেরাল হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। রাইসি ২০০৪ সালের পর দশ বছর বিচার বিভাগের উপ-প্রধান ছিলেন, এবং ২০১৪ সালে জাতীয় প্রসেকিউটার-জেনেরালের দায়িত্ব পান।

রাইসি ২০১৭ সালে হাসান রুহানির বিরুদ্ধে প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী ছিলেন, কিন্তু নির্বাচনে ব্যর্থ হন। রুহানি তুলনামুলোকভাবে একজন মধ্যপন্থি এবং প্রেসিডেন্ট থাকা কালে ২০১৫ সালে তিনি বিশ্বের কয়েকটি ক্ষমতাশালী দেশের সাথে ইরানের পারমানবিক চুক্তি সম্পন্ন করেন।

রাইসি ২০২১ সালে পুনরায় নির্বাচনে প্রার্থী হন, যে নির্বাচনে তাঁর সকল সম্ভাবনাময় প্রতিপক্ষের প্রার্থিতা ইরানের নির্বাচনী বাছাই পদ্ধতিতে বাতিল করা হয়। প্রদত্ত ২.৯ কোটি ভোটের ৬২ শতাংশ রাইসির পক্ষে যায়। তবে এই নির্বাচনে ভোটের হার ছিল ইরানের ইসলামী প্রজাতন্তের ইতিহাসে সবচেয়ে কম। লক্ষ লক্ষ ভোটার হয় ভোট দেন নি, না হয় ব্যালট পেপার বাতিল করেছেন।

সাদ্দাম হোসেনের সাথে লড়াই

নির্বাচনের পর এক সংবাদ সম্মেলনে তাঁকে ১৯৮৮ সালের মৃত্যুদণ্ডগুলো নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি কোন অনুশোচনা প্রকাশ করেন নি। ইরান এবং সাদ্দাম হোসেনের ইরাকের মধ্যে ১০-বছর ব্যাপী রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর ১৯৮৮ সালে রাজনৈতিক বন্দী, জঙ্গি এবং অন্যান্যদের ভুয়া বিচার অনুষ্ঠিত হয়, যেগুলো ‘মৃত্যু কমিশন’ নামে পরিচিতি পায়।

ইরানের তৎকালীন সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ রুহোল্লাহ খোমেনি জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতিতে রাজি হবার পর, ইরানের সশস্ত্র বিরোধী গোষ্ঠী মুজাহিদিন-এ-খালক ইরাক থেকে ইরানে হামলা চালায়। তারা সাদ্দাম হোসেনের দেয়া ভারি অস্ত্রে সজ্জিত ছিল, কিন্তু ইরান তাদের প্রতিহত করতে সক্ষম হয়।

ঐ সময়ে বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয়। বন্দীদের প্রথমে নিজেদের পরিচিতি দিতে বলা হয়। যারা নিজেদের ‘মুজাহিদিন’ বলে পরিচয় দেয়, তাদের মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়। মানবাধিকার গোষ্ঠী অ্যামনেসটির ১৯৯০ সালের রিপোর্ট অনুযায়ী, অন্যান্যদের জিজ্ঞেস করা হয়, তারা “ইসলামী প্রজাতন্ত্রের সেনাবাহিনীর জন্য ভূমি থেকে মাইন সরানোর কাজ করতে রাজি কি না।”

আন্তর্জাতিক অধিকার গোষ্ঠীগুলোর হিসেব মতে, প্রায় ৫,০০০ মানুষের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছিল। রাইসির বয়স তখন ২৮, এবং তিনি কমিশনগুলোতে দায়িত্ব পালন করেছিলেন।

যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি বিভাগ ২০১৯ সালে রাইসির উপর নিষেধাজ্ঞা জারী করে, যেখানে ১৯৮৮ সালের কথা উল্লেখ করা হয়। নিষেধাজ্ঞার কারণ হিসেবে বলা হয়, রাইসি এমন অপরাধীদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার প্রক্রিয়ায় প্রশাসনিক দায়িত্ব পালন করেছেন, যারা “অপরাধ সংঘটনের সময় অপ্রাপ্ত বয়স্ক ছিল।”

সর্বোচ্চ নেতা খামেনি

শেষ বিচারে ইরানের শাসক হচ্ছেন সর্বোচ্চ নেতা ৮৫ বছর বয়স্ক আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি। কিন্তু প্রেসিডেন্ট হিসেবে, রাইসি দেশে ইউরেনিয়াম প্রক্রিয়াজাত পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির পর্যায়ে নিয়ে যাওয়াকে সমর্থন করেছেন। তিনি পশ্চিমা বিশ্বের সাথে দ্বন্দ্বের অংশ হিসেবে আন্তর্জাতিক পরিদর্শকদের কাজও ব্যহত করেছেন।

আঞ্চলিক প্রতিপক্ষ সৌদি আরবের সাথে ২০২৩ সালের মার্চ মাসে একটি অপ্রত্যাশিত চুক্তির মাধ্যমে কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনঃপ্রতিষ্ঠা করে।

সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে ইরানি দূতাবাস অঙ্গনে ইসরায়েলি হামলায় কয়েকজন ইরানি সামরিক জেনেরাল নিহত হবার পর, রাইসি সরাসরি ইসরায়েলের উপর প্রায় ৩০০ ক্ষেপণাস্ত্র এবং ড্রোন দিয়ে পাল্টা হামলা চালানো সমর্থন করেন। দামেস্কে ইসরায়েলি হামলা ছিল বছর-ব্যাপী “ছায়া যুদ্ধের” একটি উল্লেখযোগ্য সম্প্রসারণ।

রাইসি বিরোধী মতের উপর নিরাপত্তা বাহিনীর নিপীড়ন সমর্থন করেন, যার মধ্যে ছিল পুলিশ হেফাজতে ২০২২ সালে ইরানি-কুর্দি নারী মাহসা আমিনির মৃত্যুর পর প্রতিবাদ বিক্ষোভ। নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানে প্রায় ৫০০জন নিহত এবং ২২,০০০ আটক হয়। ভয়েস অফ আমেরিকা