
মধ্যপ্রাচ্যের ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার মধ্যেই পারস্য উপসাগরের কৌশলগত কেশম দ্বীপের কাছ থেকে একটি বড় আকারের বিদেশি তেলবাহী ট্যাংকার জব্দ করেছে ইরান। শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, অবৈধভাবে প্রায় ৪০ লাখ (৪ মিলিয়ন) লিটার চোরাই জ্বালানি বহন করার অভিযোগে ট্যাংকারটি আটক করা হয়েছে। এই অভিযানে ১৬ জন বিদেশি নাবিককেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে তেহরান।
ইরানি কর্তৃপক্ষ এবং বিপ্লবী গার্ড বাহিনী (আইআরজিসি) এখন পর্যন্ত জব্দকৃত ট্যাংকারটির নাম কিংবা এটি কোন দেশের মালিকানাধীন, সে বিষয়ে কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্য প্রকাশ করেনি। তবে গ্রেপ্তারকৃত নাবিকদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি অপরাধের অভিযোগে বিচারিক তদন্ত শুরু হয়েছে। গত বুধবার চালানো এই অভিযানটি জ্বালানি পাচার ঠেকাতে তেহরানের কঠোর অবস্থানেরই একটি প্রতিফলন হিসেবে দেখা হচ্ছে।
ইরানে জ্বালানির ওপর ব্যাপক সরকারি ভর্তুকি এবং দেশটির মুদ্রার অবমূল্যায়নের ফলে সেখানে জ্বালানি তেল অত্যন্ত সস্তায় পাওয়া যায়। এই সুযোগে একটি শক্তিশালী আন্তর্জাতিক চক্র সমুদ্রপথে প্রতিবেশী দেশগুলোতে তেল পাচার করে আসছিল। গত সপ্তাহেও ওমান উপসাগরে ৬০ লাখ লিটার চোরাই ডিজেলসহ আরও একটি ট্যাংকার জব্দ করেছিল ইরান। তেহরান স্পষ্ট করে দিয়েছে যে, তাদের সমুদ্রসীমায় কোনো ধরনের অবৈধ বাণিজ্যিক কার্যক্রম বরদাস্ত করা হবে না।
এই ট্যাংকার জব্দের ঘটনাটি এমন এক সময়ে ঘটল যখন ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে সামরিক উত্তেজনায় পুরো বিশ্ব উদ্বিগ্ন। বিশ্বের মোট তেল সরবরাহের প্রায় ২০ শতাংশ পারস্য উপসাগরের এই হরমুজ প্রণালি দিয়ে পরিবাহিত হয়। ইরান বারবার হুঁশিয়ারি দিয়ে আসছে যে, তাদের ওপর কোনো ধরনের বড় হামলা হলে তারা এই কৌশলগত নৌপথটি বন্ধ করে দিতে পারে। ফলে কেশম দ্বীপের কাছে এমন অভিযান বৈশ্বিক জ্বালানি বাজারে নতুন করে উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে।