News update
  • Dhaka seeks global pressure on Myanmar for lasting peace     |     
  • BSEC Chairman’s resignation urged to stabilise stock market     |     
  • Rain, thundershowers likely over 8 divisions: BMD     |     
  • First freight train leaves Mongla carrying molasses     |     
  • 2 dead, six hurt in Sherpur micro-autorickshaw-motorbike crash     |     

টি২০ বিশ্বকাপঃ ক্রিকেট ইতিহাসের পাতায় উঠল যুক্তরাষ্ট্রের নাম

গ্রীণওয়াচ ডেস্ক ক্রিকেট 2024-06-02, 11:03am

dsfsdfasraw-2efe5a8b225f39672c890836759e77f31717304599.jpg




যুক্তরাষ্ট্র ১ জুন শনিবার নবম আইসিসি পুরুষদের টি২০ বিশ্ব কাপের যৌথ আয়োজক হিসেবে ক্রিকেট ইতিহাসের পাতায় নিজের নাম লেখালো।

টেক্সাসের ডালাস-এ যুক্তরাষ্ট্র এবং কানাডার মধ্যে উদ্বোধনী ম্যাচ দিয়ে মাসব্যাপী টুর্নামেন্টের শুরু হয়েছে, যার অন্য যৌথ-আয়োজকের ভূমিকায় আছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।

যৌথ আয়োজক হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রকে বাছাই করার সিদ্ধান্ত অনেককেই অবাক করেছিল, কারণ আমেরিকায় অভিবাসী বা প্রবাসী ছাড়াই খুব কম লোকই ক্রিকেট খেলে বা অনুসরণ করে। ক্রিকেট ব্রিটিশরা ১৭ শতাব্দীতে শুরু করেছিল এবং পরবর্তীতে এই খেলা তাদের প্রাক্তন উপনিবেশগুলোতে – ক্যারিবিয়ান সাগর থেকে দক্ষিণ এশিয়া এবং অস্ট্রেলিয়ায় ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করে।

যুক্তরাষ্ট্রকে যৌথ-আয়োজক হিসেবে বাছাই করার সিদ্ধান্তের পেছনে যে অর্থনৈতিক বিবেচনা বড় ভূমিকা রেখেছে, তা নিয়ে কোন সন্দেহ নেই। উত্তর আমেরিকা বিশ্বের সবচেয়ে বড় স্পোর্টস বাজার।

ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থা, ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিল এই বিশাল স্পোর্টস বাজারে ঢুকতে চাইছে। অনলাইন গবেষণা প্রতিষ্ঠান স্ট্যাটিস্টার পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২৩ সালে উত্তর আমেরিকার স্পোর্টস বাজারে ৮,৩০০ কোটি ডলার ব্যবসা হয়েছিল।

“বিশ্বকাপ যে যুক্তরাষ্ট্রে আসছে, যেটা বিশ্বের সবচেয়ে বড় স্পোর্টস বাজার, এই ঘটনা একাই ব্যাপক আগ্রহের জন্ম দিয়েছে,” আইসিসির হেড অফ ইভেন্টস, ক্রিস টেটলিকে উদ্ধৃত করে বার্তা সংস্থা এএফপি জানায়।

আইসিস বেশ কয়েকজন প্রাক্তন ক্রিকেট তারকাকে নিয়ে এসেছে, যারা বিশ্বকাপের সময় যুক্তরাষ্ট্রে ক্রিকেটের গুন গাইবেন। আমন্ত্রিত তারকাদের মধ্যে রয়েছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রাক্তন পেস বোলার কার্টলি অ্যাম্ব্রোস, যাকে ২০১১ সালে আইসিসির হল অফ ফেম-এ অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

“ক্রিকেট আমেরিকায় বড় প্রভাব ফেলতে পারে, বিশেষ করে ট২০ ফরম্যাট, কারণ আমরা জানি আমেরিকানরা দ্রুত গতি সম্পন্ন খেলা পছন্দ করে,” অ্যাম্ব্রোস নিউ ইয়র্কের নাসাউ ক্রিকেট স্টেডিয়াম পরিদর্শনের সময় সাংবাদিকদের বলেন।

আইসিসি সিদ্ধান্ত নেয়ার সময় ভবিষ্যতের কথাও বিবেচনা করেছে, বিশেষ করে ২০২৮ সালের অলিম্পিক গেমস, যেটা যুক্তরাষ্ট্রের লস আঞ্জেলেস শহরে অনুষ্ঠিত হবে। এই গেমসে নতুন পাঁচটি স্পোর্টস অন্তর্ভুক্ত হবে, যার মধ্যে ট২০ ক্রিকেট অন্যতম।

“ক্রিকেট খেলাকে ২০২৮ সালের গেমসের জন্য জনপ্রিয় করার জন্য এই বিশ্বকাপ হবে একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। এর মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রে যে বিশাল ফ্যান বেজ ইতোমধ্যে আছে, তাদের জন্য বিশ্ব মানের ক্রিকেট নিয়ে আসা হবে,” টেটলি বলেন।

যুক্তরাষ্ট্রে দক্ষিণ এশিয়ার আফগানিস্তান, ভারত, বাংলাদেশ, নেপাল, পাকিস্তান এবং শ্রী লঙ্কা থেকে আসা ক্রিকেট-পাগল জনগোষ্ঠীর উপস্থিতি আইসিসিকে নিশ্চিত করে যে আমেরিকায় বিশ্বকাপ সফল হবে।

যুক্তরাষ্ট্রে গণশুমারির তথ্য এবং দক্ষিণ এশিয়া-মুখী সাময়িকী এসএএএলটি (সল্ট) অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রে ৫৫ থেকে ৬০ লক্ষ দক্ষিণ এশিয়া-বংশোদ্ভূত আমেরিকান বসবাস করছে। তাদের অবস্থান মূলত কয়েকটি রাজ্যে, যেমন ক্যালিফোর্নিয়া, নিউ ইয়র্ক, টেক্সাস, ইলিনয় এবং মিশিগান।

টেটলি যে “ফ্যান বেজ” বা সমর্থক গোষ্ঠীর কথা বলছিলেন, তারা মূলত এই ছয়টি দক্ষিণ এশিয়ো দেশ থেকে আসা অভিবাসী। এই বিশ্বকাপে অংশ নেয়া ২০টি দেশের মধ্যে এই ছয়টি অন্যতম। ষাট লক্ষ দক্ষিণ এশিয়ো আমেরিকানের প্রভাব ইতোমধ্যে টিকেট বিক্রির মধ্যে দেখা যাচ্ছে।

নিউ ইয়র্কে ৯ জুন চীর প্রতিদ্বন্দ্বী ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যে বহুল-প্রতীক্ষিত ম্যাচ হবে, তার টিকিট বিক্রি শুরু হবার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে শেষ হয়ে যায়। দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশের খেলা গুলোর টিকিটও হয় বিক্রি হয়ে গেছে নয় শুধু সবচেয়ে দামি গুলো বাকি আছে।

টুর্নামেন্টের প্রথম পর্বের ৪০টি ম্যাচের মধ্যে ১৬টি হবে যুক্তরাষ্ট্রের তিনটি ভেন্যুতে – নিউ ইয়র্কের নাসাউ কাউন্টি ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট স্টেডিয়াম, ফ্লোরিডার লডারহিল-এ ব্রাওডার কাউটি স্টেডিয়াম এবং ডালাসের গ্র্যান্ড প্রেইরি ক্রিকেট স্টেডিয়ামে।

আর বাকি ম্যাচগুলো, যাদের মধ্যে সুপার ৮ পর্বের ১২টি, সেমি ফাইনাল এবং ফাইনাল রয়েছে, সেগুলো হবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ-অন্তর্ভুক্ত দেশগুলোতে। ফাইনাল হবে ২৯ জুন বারবেডসের ব্রিজটাউনের কেনজিংটন ওভাল মাঠে।

বারবেডসের ব্রিজটাউনের কেনজিংটন ওভাল মাঠে ২৯ জুন ফাইনাল হবে। ফটোঃ ২৪ মে, ২০২৪।

“সত্যি বলতে, ব্যাপারটা কেমন অদ্ভুত লাগছে,” বললেন করি অ্যান্ডারসন, যিনি এক সময় নিউ জিল্যান্ডের হয়ে বিশ্বকাপ খেলেছেন কিন্তু বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র দলের অংশ। “শুধু আমার জন্য না, এটা যুক্তরাষ্ট্র দল এবং বিশ্ব ক্রিকেটের জন্য অত্যন্ত আনন্দের বিষয়,” তিনি বলেন।

এই বিশ্বকাপ যুক্তরাষ্ট্রে স্থানীয় ক্রিকেটে নতুন প্রাণের সঞ্চার করবে বলে ধারনা করা হচ্ছে, ঠিক ১৯৯৪ সালের ফিফা বিশ্বকাপ যেভাবে আমেরিকায় ফুটবল – বা সকারের জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি করেছিল।

বেজ বল হচ্ছে আমেরিকানদের প্রিয় খেলার একটি, যেখানে ব্যাট দিয়ে একটি বল বেধড়ক পেটানো হয়। ক্রিকেটের ট২০ ফরম্যাট সেরকম জনপ্রিয়তা পেতে পারে।

ইএসপিএন-ক্রিকইনফো’র যুক্তরাষ্ট্র সংবাদদাতা পিটার ডেলা পেনা বলছেন ক্রিকেট দেখে মানুষ আনন্দ পায়।

“আমি আজ পর্যন্ত কারো সাথে পরিচিত হইনি, যে ক্রিকেট খেলা দেখে আনন্দ পায় নি, বা খেলা শেষে বলে নি যে, সে আবার ফিরে আসবে কারণ তাঁর ভাল মজার অভিজ্ঞতা হয়েছে,” পেনা ভিওএ-কে বলেন।

বর্তমান শিরোপাধারী ইংল্যান্ড এবং যৌথ স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজ ২০০৭ সালে টি২০ বিশ্বকাপ শুরু হবার পর দুবার ট্রফি জয় করেছে। ভারত, যারা উদ্বোধনী টুর্নামেন্টে শিরোপা জয় করে, বর্তমানে বিশ্ব র‍্যাঙ্কি-এর শীর্ষে এবং এই বিশ্বকাপে ফেভারিট।

অস্ট্রেলিয়া বর্তমানে ক্রিকেট বিশ্বকাপ এবং টেস্ট বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন, এবং তারা চেষ্টা করবে ট২০ শিরোপাটিও যোগ করতে। তারা সফল হলে এই প্রথম কোন দেশের হাতে একই সময়ে ক্রিকেটের তিনটি শিরোপাই জড়ো হবে।

দক্ষিণ আফ্রিকা এবং নিউ জিল্যান্ড দু’দেশই টি২০ ফরম্যাটে শক্তিশালি প্রতিযোগী কিন্তু তারা কখনো এই ট্রফি জয় করেনি। প্রাক্তন চ্যাম্পিয়ন শ্রী লঙ্কা যেমন সব সময়ই একটি শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী হয়, তেমনি পাকিস্তানের সম্ভাবনাকে কখনোই উড়িয়ে দেয়া যায় না। ভয়েস অফ আমেরিকা