News update
  • TikTok shuts down US access     |     
  • Gaza ceasefire: Gazans hope to return to their ruined homes     |     
  • ‘Lebanon is on the cusp of a more hopeful future’: UN chief      |     
  • Ziaur Rahman's 89th birth anniversary today, BNP programs      |     
  • Bumper harvest of Jujube in Ramu Upazila     |     

ট্রাংকে ভরে ধানের গোলায় লুকিয়ে রাখা হয়েছিল ৭ই মার্চের ভাষণের ফিল্ম

গ্রীণওয়াচ ডেস্ক খবর 2024-03-06, 1:38pm

dsgsdgs-742b909f0e946c8e2e60b00b52c908991709710746.jpg




১৯৭১ সালের ৭ ই মার্চের ভাষণের মধ্য দিয়ে মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার ডাক দিয়েছিলেন বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবর রহমান।

ঐতিহাসিক সেই ভাষণটি যারা চলচ্চিত্রে ধারণ করেছিলেন, তাদের একজন হলেন তখনকার ফিল্‌মস ডিভিশনের ক্যামেরাম্যান আমজাদ আলী খন্দকার ।

তিনি বলছিলেন, "আমি তৎকালীন পূর্বপাকিস্তান ফিল্মস ডিভিশনে সহকারী ক্যামেরাম্যান হিসেবে কাজ করতাম। ফিল্মস ডিভিশনের আবুল খায়ের আমাদের বলেছিলেন , সাত তারিখ শেখ মুজিবের ভাষণ হবে - তোমরা তৈরি থাকো। আমরা প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি, ফিল্ম, স্ট্যান্ড, ম্যাগাজিন - এসব নিয়ে সকাল বেলাই হাজির হয়ে যাই।"

"লোকে লোকারণ্য সেই সভায় বঙ্গবন্ধু ভাষণ দিলেন। আমি আর মোবিন ভাই কাজ করলাম। আরেকজন ক্যামেরাম্যান ছিল সে কালীমন্দিরের ওপর থেকে লংশটটা নিলো। আমাদের ক্যামেরাটা মঞ্চের ওপর ছিল, সেটা বঙ্গবন্ধুর ওপর ধরা ছিল।"

"ফিল্মস ডিভিশনের কোন ল্যাবরেটরি ছিল না। ল্যাব ছিল এফডিসিতে। তখন বঙ্গবন্ধুর কোন ফিল্ম ডেভেলপ করা খুব মুশকিল ছিল। আমরা 'সাইক্লোন, নির্বাচন' এরকম বিভিন্ন নামে বঙ্গবন্ধুর ফিল্মগুলো ডেভেলপ করিয়ে নিয়ে আসতাম।"

সাতই মার্চের সেই ভাষণ তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের মানুষকে স্বাধীনতা সংগ্রামের অনুপ্রেরণা যুগিয়েছিল। এর দুই সপ্তাহ পরেই ২৫শে মার্চের রাতে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর গণহত্যা। শুরু হয়ে যায় মুক্তিযুদ্ধ।

"ঢাকা শহর রক্তে রক্তাক্ত হয়ে গেল" - বলছিলেন আমজাদ আলি খন্দকার। "আমাদের মনে হলো বঙ্গবন্ধুর এই ফিল্ম তো জ্বালিয়ে দেবে। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে গেছে, এই ফিল্ম না থাকলে কিছুই তো আমরা পাবো না।"

"সচিবালয়ের ভেতরে আমাদের অফিস ছিল তখন। খায়ের সাহেবের অনুরোধে আমি শুধু একা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সচিবালয় থেকে ফিল্মটা নিয়ে বের হয়ে যাই। খায়ের সাহেব যখন আমাকে বিদায় দেন তখন তিনি আমার হাতটা ধরে একটা ঝাঁকুনি দেন, বললেন 'আমজাদ আল্লা হাফেজ'। উনি ভেবেছিলেন আমি হয়তো আর ফিরে আসবো না।"

"আমি সদরঘাট থেকে একটা বিয়াল্লিশ ইঞ্চি ট্রাংক কিনলাম। সেই ট্রাংকের ভেতরে বঙ্গবন্ধুর আগের যত ভাষণ, ফিল্ম - যা রেকর্ড করা ছিল তার সব নিয়ে আমি সচিবালয় থেকে বেরোই। সচিবালয় থেকে বেরোনো খুব দুরুহ ব্যাপার ছিল, সব গেটেই পাহারা দিতো অবাঙালিরা।"

এপ্রিল মাসের আট বা নয় তারিখে আমি সচিবালয় থেকে বেরিয়েছিলাম। দোহার থানায় ছিল মজিদ দারোগার বাড়ি। সেই খানে নিয়ে এই ট্রাংকটা আমি সংরক্ষণ করি। পরে আরো নিরাপত্তার জন্য চরকোষা বলে একটা গ্রাম আছে, সেখানে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে ধানের গোলার মধ্যে সেটা রাখা হয়।"

"পরে খায়ের সাহেব ভারতে চলে যান। ভারতে গিয়ে মুক্তিবাহিনীর সাথে যোগাযোগ করার পর সেই সব ফিল্ম তিনি ভারতে নিয়ে গিয়েছিলেন।"

"নয়মাসের যুদ্ধের পর দেশ স্বাধীন হলে সেই ফিল্মগুলো আবার সরকারি কোষাগারে ফেরত আসে।"

আমজাদ আলি খন্দকার বলছিলেন, "আমি মনে করি এই ভাষণটা হলো বাংলাদেশের স্বাধীনতার দলিল। এমন কোন কথা নেই যা বঙ্গবন্ধু এতে বলে যান নি।" বিবিসি বাংলা