News update
  • UN Rights Chief Welcomes Bangladesh's Abuse Prosecutions     |     
  • Prosecution Seeks Highest Penalty for Sheikh Hasina     |     
  • Over Half a Million Students Fail HSC, Equivalent Exams     |     
  • BGMEA says Mirpur fire was not in formal apparel sector units     |     
  • Fire at Shialbari Mirpur, Dhaka chemical godown under control      |     

আফগান নারীদের জনসম্মুখে সারা শরীর আচ্ছাদিত বোরকা পরার নির্দেশ তালিবানের

গ্রীণওয়াচ ডেস্ক খবর 2022-05-08, 7:33am




তালিবান শনিবার ঘোষণা করেছে, আফগানিস্তানে জন্য মাথা থেকে পা পর্যন্ত ঢেকে রাখে বোরকা পড়া সব নারীর জন্য বাধ্যতামূলক। ক্ষমতায় ফিরে আসার পর থেকে নয় মাসের মধ্যে ইসলামপন্থী গোষ্ঠীটি নারী অধিকারের উপর আরোপিত বিধিনিষেধের এটা সর্বসাম্প্রতিক নির্দেশ।

কাবুলে এক সংবাদ সম্মেলনে বিশদ বিবরণ প্রকাশ করে পুণ্যের প্রচার এবং অধার্মিকতা প্রতিরোধ মন্ত্রক বলেছে,নির্জনবাসী তালিবান প্রধান হিবাতুল্লাহ আখুন্দজাদা এই ডিক্রি জারি করেছেন, যাতে সব আফগান নারীকে এটি কঠোরভাবে মেনে চলতে হয়।

মন্ত্রক একটি বিবৃতিতে বলেছে যদি নারী বাড়ির বাইরে তার মুখ না ঢেকে বের হন তা হ’লে নারীর পুরুষ "অভিভাবক", যেমন তার পিতা, ভাই বা স্বামীকে, তিন দিনের জন্য কারাবাসের আগে একবার সতর্ক করে দেওয়া হবে। বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, এরপরও কেউ আদেশ লঙ্ঘন করলে, তাদের অভিভাবককে কঠোর শাস্তির জন্য আদালতে নিয়ে যাওয়া হবে।

মন্ত্রক বলছে, সরকারি নারী কর্মচারীরা তাদের মুখ ঢেকে না রাখলে, চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হবে। এছাড়া পুরুষ কর্মচারীরা যদি তাদের পরিবারের নারী সদস্যরা আদেশ লঙ্ঘনের জন্য দোষী সাব্যস্ত হয়, তবে তাদেরও চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হবে।

বিবৃতিতে বোরকাকে সর্বোত্তম ধরণের হিজাব হিসাবে বর্ণনা করে জোর দিয়ে বলা হয়েছে, এটি "আফগান সংস্কৃতির অংশ এবং এটি যুগ যুগ ধরে ব্যবহৃত হয়ে আসছে।" বিবৃতিতে আরও বলা হয়, নারীদের আরেকটি পছন্দের হিজাব হল একটি দীর্ঘ কালো বোরকা এবং জামা, তবে এটি "পাতলা বা আঁটশাঁট " হতে পারবে না।

গভীরভাবে রক্ষণশীল আফগানিস্তানের বেশিরভাগ নারী ধর্মীয় এবং সাংস্কৃতিক কারণে মাথায় স্কার্ফ পরেন, কিন্তু কাবুলের মতো শহরাঞ্চলে অনেকেই তাদের মুখ ঢেকে রাখেন না।

বোরকা বাধ্যতামূলক করার জন্য এবং দেশের আনুমানিক ৪ কোটি মানুষের মধ্যে প্রায় ৫০%-এর স্বাধীনতাকে ক্রমাগত লঙ্ঘন করার জন্য সমালোচকরা তালিবানের নিন্দা করেছেন। সেই সাথে সতর্ক করেছেন যে, এর ফলে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের পাশাপাশি দাতা দেশগুলিকেও আরও বিচ্ছিন্ন করবে দেশটি।

আফগানিস্তানে জাতিসংঘের সহায়তা মিশন বলেছে, তালিবানের শনিবারের সিদ্ধান্তে তারা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।

আফগান নারী ও মেয়েদের জন্য নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ দূত রিনা আমিরি তালিবানের সমালোচনা করে বলেছেন, তারা দেশটির অর্থনৈতিক সংকট মোকাবেলা এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক শাসন ব্যবস্থার প্রয়োজনীয়তা এড়িয়ে নারী ও মেয়েদের উপর নিপীড়নকারী নীতি গ্রহণ করে চলেছে

আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়, ইসলামিক দেশগুলি এবং মুসলিম আলেমদের সাথে যোগ দিয়ে, তালিবানদের উপর চাপ দিয়ে আসছে, তারা যেন নারীদের উপর আরোপিত বিধিনিষেধের অবসান ঘটায়। যদিও তালিবান তাদের বারবার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে যে, তারা সমস্ত আফগানদের মানবাধিকারকে সম্মান করবে।

হিউম্যান রাইটস ওয়াচ-এর হিদার বার অভিযোগ করেছেন, তালিবানের আপাত লক্ষ্য হল "জনজীবন থেকে সম্পূর্ণরূপে নারী ও মেয়েদের মুছে ফেলা" এবং তাদের "কোন স্বায়ত্তশাসন ছাড়াই তাদের পুরুষ আত্মীয়দের হেফাজতে থাকা সম্পত্তিতে পরিণত করা"।

রাজনৈতিক ভাষ্যকার এবং সাবেক আফগান কর্মকর্তা তোরেক ফারহাদি বলেছেন, ইসলামে নারীদের বোরকা পরার প্রয়োজন নেই।

ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের প্রেসিডেন্ট বোর্জে ব্রেন্ডে এক বিবৃতিতে দুঃখ প্রকাশ করে বলেছেন, তালিবানের বোরকার বিধিনিষেধ, বহু সরকারি চাকরি এবং মেয়েদের মাধ্যমিক শিক্ষা থেকে নিষিদ্ধ করার চাইতেও গুরুত্ব পাচ্ছে।

বিদেশী সরকারগুলো এখনো অন্তর্বর্তীকালীন তালিবান নেতৃত্বকে স্বীকৃতি দেয়নি এবং মানবাধিকার, বিশেষ করে আফগান নারীদের সম্মানের বিষয়টি কাবুলের সাথে বিবেচনা বা কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের অন্যতম বিষয় হিসেবে যুক্ত করেছে।

১৫ আগস্ট আফগানিস্তান পুনরুদ্ধার করার পর থেকে নয় মাসের মধ্যে তালিবান, বিশ্ববিদ্যালয়ের নারী শিক্ষার্থীদের একটি নতুন-প্রবর্তিত, কঠোরভাবে পুরুষ থেকে বিচ্ছিন্ন শিক্ষা ব্যবস্থায় ক্লাসে ফিরে যাওয়ার অনুমতি দিয়েছে। কিন্তু তারা এখনো মেয়েদের জন্য হাইস্কুল খুলে দেয়নি। তথ্য সূত্র: ভয়েস অফ আমেরিকা বাংলা।