News update
  • Climate Summit 2025: The path to COP30     |     
  • Apon, Cocola, Ispahani food owners face arrest for adulteration     |     
  • Dhaka set for most transparent election: Yunus tells global leaders     |     
  • Prof Yunus seeks WTO support for Dhaka’s smooth LDC graduation     |     
  • Smear campaigns being carried out to eliminate BNP: Rizvi     |     

দাম কমেছে ইলিশের 

গ্রীণওয়াচ ডেস্ক খাদ্য 2025-08-15, 11:51pm

img_20250815_235113-c265e815f00a4bb6543927e8ac57a9621755280301.jpg




দীর্ঘ অপেক্ষার পর চাঁদপুরে ইলিশের দাম কিছুটা কমেছে। ছোট থেকে বড় সব সাইজের ইলিশের কেজি প্রতি দাম কমেছে ৩০০ থেকে ৬০০ টাকা। চলতি মৌসুমের শুরু থেকেই ইলিশের দাম বেশি থাকায় সাধারণ ক্রেতাদের নাগালের বাইরে ছিল ইলিশ মাছ। দাম কমায় কিছুটা স্বস্তি এসেছে সাধারণ ক্রেতাদের মধ্যেও।  


স্থানীয় মৎস্য ব্যবসায়ীরা জানান, চলতি মৌসুমে দক্ষিণাঞ্চল থেকে আসা ইলিশের সরবরাহ এতোদিন কম ছিল। তবে গত কয়েকদিন চাঁদপুর মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে দক্ষিণাঞ্চল থেকে ইলিশের আমদানি কিছুটা বেড়েছে। তাই আড়তগুলো এখন সরগরম হয়ে উঠেছে ক্রেতা-বিক্রেতার আগমনে। প্রতিদিন গড়ে ৪০০ থেকে ৫০০ মণ ইলিশ আমদানি হচ্ছে। তাই দামও কিছুটা কমেছে। 


স্থানীয় বাজার পর্যালোচনা করে জানা যায়, কয়েকদিন আগেও এক কেজির বেশি ওজনের ইলিশ প্রতি কেজি ছিল ৩ হাজার টাকা। দর কমে প্রতি কেজি ইলিশ এখন ২২০০ থেকে ২৪০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। চলমান আমদানি অব্যাহত থাকলে বিগত দিনের লোকসান কাটিয়ে উঠতে পারবে বলে জানান ব্যবসায়ীরা।


বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) সকাল থেকে থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত শহরের বড় স্টেশন মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে গিয়ে আড়তগুলোতে ইলিশ বিক্রির এই চিত্র দেখা গেছে। 


চাঁদপুর মাছ ঘাটের আড়তদাররা জানান, দীর্ঘদিন দক্ষিণাঞ্চলের জেলাগুলো থেকে ইলিশের ট্রলার আসা বন্ধ ছিল। তবে গত ৭ ও ৮ আগস্ট থেকে মাছ ঘাটের পল্টুনে বড় কয়টি ইলিশের ট্রলার আসে।


বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে ওই ট্রলার থেকে বিভিন্ন সাইজের ইলিশ আড়তে নামাতে দেখা গেছে। চাঁদপুর মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের মাছঘাটের ছোট বড় প্রায় ৪০টি আড়তের সামনেই ইলিশের স্তূপ দেখা যায়। পাইকারি ও খুচরা বিক্রি করা হচ্ছে ইলিশ। সঙ্গে অন্যান্য প্রজাতির মাছও আছে। তবে অধিকাংশ আড়তের সামনেই বিক্রি হচ্ছে ইলিশ। পাইকারি বিক্রির জন্য স্তূপ করা ইলিশ হাঁকডাক দিয়ে বিক্রি করছেন ব্যাপারীরা।


হাজীগঞ্জ উপজেলা থেকে ইলিশ কিনতে এসেছেন আমির হোসেন। তিনি জানান, অন্য সময়ের তুলনায় গত কয়েকদিন যাবত আড়তে ইলিশ বেশি আসছে এই খবর শুনে ইলিশ কিনতে আসলাম। দামও কিছুটা কমেছে। তবে চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনার লোকাল ইলিশ খুবই কম। খুচরা দোকান ঘুরে দেখি যদি দরদাম মিলে তাহলে কিনব।


ফরিদগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা আলম মিয়া জানান, ইলিশের দরদাম জানার জন্য এসেছি। কিছু ইলিশ ঢাকায় পাঠাবো আত্মীয়ের বাসায়। কিন্তু দাম তো তেমন একটা কমে না। এখন লোকাল ইলিশ ২২০০ টাকা থেকে ২৫০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। মাঝারি সাইজের ইলিশ খুবই কম। একেবারে ছোট এবং বড় সাইজের ইলিশ ঘাটে বেশি। ছোট সাইজেরগুলোও  প্রতিকেজি ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।


শহরের তালতলা ও মিশন রোড এলাকার আবু হানিফ ও আজাদ রহমান ঘাটে এসেছেন বাসায় খাওয়ার জন্য ইলিশ কিনতে। তারা জানান, গত ১০ দিনের মধ্যে এখন দাম কিছুটা কমেছে। আমরা চাই সরকার জাটকা নিধন বন্ধ করুক। তা হলে আরও বেশি করে আমরা ইলিশ পাব এবং দামও কমবে। তারা দুইজন মাঝারি ও ছোট সাইজের ইলিশ কিনেছেন বলে জানান। তারা আরও জানান, মাঝারি সাইজের ইলিশ কিনেছেন ১৮০০ টাকা এবং ছোট সাইজের ইলিশ কিনেছেন ৮০০ টাকা কেজি দরে। 


চাঁদপুর ঘাটের আড়ত মালিক রাসেল হোসেন জানান, পাইকারি স্থানীয় পদ্মা-মেঘনার বড় সাইজের ইলিশ নিয়েছি। ওজন এক কেজির বেশি। বিক্রি হচ্ছে ২৪০০ টাকা করে। হাতিয়া থেকে আসা একই সাইজের ইলিশ ২০০০ টাকা দরে ডাকে তুলে নিলাম। এখন তা আমরা খুচরা বিক্রি করছি ২১০০ টাকা করে।


খুচরা ইলিশ বিক্রেতা জাকির জানান, এক কেজি ওজনের লোকাল ইলিশ প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ২১৫০ টাকা থেকে ২২০০ টাকা। হাতিয়ার ইলিশ প্রতি কেজি ১৯০০ টাকা থেকে ২০০০ টাকা। লোকাল ৭০০ থেকে ৮০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১৯০০ থেকে ২০০০ টাকা। ছোট সাইজের ইলিশ (২০০-২৫০গ্রাম) প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে সাড়ে ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা। আর হাতিয়া ও ভোলার মাঝারি সাইজের ইলিশ ১৬০০ থেকে ১৭০০ টাকা কেজি করে বিক্রি হচ্ছে। আর একেবারে ছোট সাইজের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৫৫০ টাকা থেকে ৬৫০ টাকা করে। 


চাঁদপুর মৎস্য বণিক সমবায় সমিতি লিমিটেডের সভাপতি আব্দুল বারি জমাদার মানিক জানান, গত এক সপ্তাহে ইলিশের আমদানি ছিল গড়ে তিনশ থেকে পাঁচশ মণ। কিন্তু আগে এই পরিমাণ ইলিশ এক আড়তেই বিক্রি হয়েছে। আগে এই মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে ৩ থেকে ৪ হাজার মণ ইলিশ মাছ বিক্রি হতো। কিন্তু এখন তা হচ্ছে না। তবে কয়েকদিনে ইলিশের আমদানি কিছুটা বেড়েছে। এই ধারা অব্যাহত থাকলে ব্যবসায়ীরা বিগত দিনের লোকসান কিছুটা হলেও কাটিয়ে উঠতে পারবে বলে জানান তিনি। 


চাঁদপুর সদর উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মির্জা ওমর ফারুক বলেন, এমনিতেই বর্ষা মৌসুমে ইলিশের প্রাপ্যতা কিছুটা বাড়ে। আশা করি স্থানীয় জেলেরাও ইলিশ পাবে। পদ্মা-মেঘনার ইলিশ হাইমচর ও হরিণায় স্থানীয় আড়তে বিক্রি হচ্ছে বলে আমরা জানতে পেরেছি।  দক্ষিণাঞ্চলের ইলিশ এখন চাঁদপুর মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে নিয়মিত আসছে। তাই দাম ও কিছুটা কমেছে। আমরা আশাবাদী যে আমদানি আরও বাড়বে তা হলে মানুষ কম দামে ইলিশ কিনতে পারবে। সূত্র: বাসস