News update
  • Gold prices hit fresh record in Bangladesh within 24 hours     |     
  • Election to be held on time, Prof Yunus tells US Special Envoy     |     
  • Moscow wants Dhaka to reduce tensions domestically, also with Delhi     |     
  • Saarc experts meet to reduce livestock-origin greenhouse gases     |     
  • Bangladesh Mission in Delhi Suspends Visa Services     |     

অসময়ে বাজারে এত তরমুজ কীভাবে এলো?

গ্রীণওয়াচ ডেস্ক খাদ্য 2025-09-24, 7:38pm

werwerqweqwe-eb6b77ec3bc66a8ff46dce828f6396921758721091.jpg




গ্রীষ্মের কাঠফাঁটা গরমে হৃদয় শীতল করা ফল তরমুজ। কিন্তু বর্ষা পেরিয়ে শরতেও বাজারে প্রচুর পরিমাণে দেখা যাচ্ছে রসালো এই ফলটি। স্বাদ-গন্ধ কিংবা মানে তেমন কোনো পার্থক্যও নেই। বাজারে চাহিদাও বেশ ভালো। কিন্তু অসময়ে এত তরমুজ আসছে কোথা থেকে?

সরজমিনে রাজধানীর কারওয়ান বাজার ঘুরে দেখা যায়, আড়তগুলো ভরপুর তরমুজে। সেখানে মানভেদে প্রতি কেজি ৩৫ থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। আর খুচরা পর্যায়ে ৪০ থেকে ৬০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।

আড়তদাররা বলছেন, খুলনা, নেত্রকোনা ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে প্রচুর পরিমাণ তরমুজ আসছে।

আড়তদার নকিব জানান, অসময়ের তরমুজে বাজার ভরে গেছে, ক্রেতার সংখ্যাও কম নয়। এরকম চাহিদা থাকলে কৃষকদের মধ্যে সারাবছরই তরমুজ চাষের আগ্রহ আরও বাড়বে, যা রফতানির নতুন সম্ভাবনা তৈরি করবে।

খুলনা, নেত্রকোনা, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও কিশোরগঞ্জসহ বিভিন্ন এলাকার ফসলি জমিতে থোকায় থোকায় ঝুলছে সুমিষ্ট ও উন্নত জাতের তরমুজ। সেখান থেকে পৌঁছে যাচ্ছে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে।

অসময়ের এই তরমুজ চাষের গল্প জানতে সময় সংবাদ কথা বলেছে দেশের বিভিন্ন এলাকার চাষিদের সঙ্গে। খুলনা জেলার বটিয়াঘাটা উপজেলার সুরখালি ইউনিয়নের মাচায় চাষ করা এমন একাধিক ক্ষেত ঘুরে দেখা গেছে, যেখানে কৃষকেরা সফলভাবে অফসিজন তরমুজ উৎপাদন করছেন।

তারা জানিয়েছেন, মৌসুমি তরমুজের চেয়ে দাম বেশি পাওয়ায় লাভবান হচ্ছেন। পাইকাররা ক্ষেত থেকেই কিনে নিচ্ছেন।

আব্দুল্লাহ গাজী নামে এক চাষী বলেন, ‘আগে শুধু মৌসুমে তরমুজ চাষ হতো। এখন সরকারি সহায়তায় অসময়েও চাষ করি।’

চাঁপাইনবাবগঞ্জে কৃষকরা উচ্চ ফলনশীল হাইব্রিড জাতের মার্সেলো কালো ও বাদামি তরমুজ চাষ করে ব্যাপক সাড়া ফেলেছেন। মাত্র ৬০-৬৫ দিনে তোলা যায় এই তরমুজ। মালচিং পদ্ধতিতে খাঁচায় চাষ করায় বর্ষাকালের অতিবৃষ্টিতেও ফলনে প্রভাব পড়ে না। বিঘাপ্রতি ৩৫-৪০ হাজার টাকা খরচ করে ১ লাখ থেকে দেড় লাখ টাকা লাভের আশা করছেন চাষিরা।

কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ায় আবুবকর সিদ্দিক ৪০ শতাংশ জমিতে সুইটব্ল্যাক-২ জাতের তরমুজ চাষ করেছেন। খরচ ৪০ হাজার টাকা, আয়ের সম্ভাবনা প্রায় ২ লাখ টাকা।

আবুবকর বলেন, ‘মৌসুমের বাইরে তরমুজের চাহিদা ও দাম দুটোই বেশি। অন্য ফসলের তুলনায় লাভও অনেক বেশি। ভবিষ্যতে আরও বেশি জমিতে চাষের পরিকল্পনা রয়েছে।’

নেত্রকোনার কলেজপড়ুয়া তরুণ সারোয়ার আহমেদ সাইম প্রথমবারেই সফলভাবে এই সময়ে তরমুজ চাষ করেছেন। তিনি বলেন, ‘কৃষি অফিস থেকে নিয়মিত সহযোগিতা ও প্রশিক্ষণ পেয়েছি। সঠিকভাবে সার ও বালাইনাশক ব্যবহার করতে পেরেছি।’

কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, অন্য ফসলের তুলনায় অসময়ের তরমুজে ফলন বেশি, খরচ কম এবং লাভও বেশি। এজন্য মাঠপর্যায়ে কৃষকদের প্রযুক্তিগত সহায়তা ও পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।

কৃষি কর্মকর্তা হুমায়ুন দিলদার বলেন, ‘শিক্ষিত তরুণদের কৃষিতে সম্পৃক্ত করতে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ জনশক্তি গড়ে তোলা হচ্ছে। নতুন ও লাভজনক ফসল চাষে পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। এতে কৃষিভিত্তিক অর্থনীতি গতি পাবে।’

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের খুলনা অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক মো. রফিকুল ইসলাম জানান, ‘কৃষকদের বীজ ও প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে। অফসিজন তরমুজে সাফল্য পাওয়ায় এ আবাদ আরও সম্প্রসারণের পরিকল্পনা রয়েছে।’

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তরমুজে ভিটামিন এ, সি, বি-৫, পটাশিয়াম ও ম্যাগনেশিয়ামের মতো গুরুত্বপূর্ণ উপাদান রয়েছে। এটি শরীর ঠাণ্ডা রাখতে, হজমে সহায়তা করতে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।  সময় সংবাদ